বাসক পাতা

বাসক পাতার উপকারিতা ও ঔষধি গুনাগুণ

আদি যুগ থেকেই বাসক পাতা ভেষজ গুণে গুণান্বিত। বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায়ও বাসকের ভেষজ গুণাবলি প্রমাণিত হয়েছে। তাজা অথবা শুকনো পাতা বহু রোগে ওষুধের কাজ করে। বাসক পাতার নির্যাস, রস বা সিরাপ শ্লেষ্মা তরল করে নির্গমে সুবিধা করে দেয় বলে সর্দি, কাশি এবং শ্বাসনালীর প্রদাহমূলক ব্যাধিতে বিশেষ উপকারী।

বাসক (Adhatoda vasica) একটি গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। এটি ভারত উপমহাদেশীয় ভেষজ উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Adhatoda yeylanica Nees। এর সংস্কৃত নাম বাসক। এটি Acanthaceae এর পরিবারভূক্ত। আর্দ্র, সমতলভূমিতে এটি বেশী জন্মে।

লোকালয়ের কাছেই জন্মে বেশী। গাছটি লম্বায় ৫-৬ ফুট উঁচু হয়। কচি অবস্থায় গাছের গোড়া সবুজ হলেও পরিণত অবস্থায় হাল্কা বেগুনি রঙের মতো দেখায়। পাতাগুলি লম্বায় ৫-১২ সেন্টিমিটারের মতো হয়।

আষাঢ় -শ্রাবণ মাসে এই গাছে সাদা রঙের ফুল এবং গুচ্ছাকারে ফোটে। ফলগুলি ক্যাপসুলের মতো দেখতে। বাসক একটি অত্যন্ত উপকারী গাছ। বিভিন্ন রোগে এই গাছটি ব্যবহার করা হয়। এই গাছটি ভারত ও বাংলাদেশে পাওয়া যায়।

বাসকের রাসায়নিক উপাদান: বাসকের ছাল, পাতা, রস সবই উপকারী। বাসকের পাতায় ‘ভাসিসিন’ নামীর ক্ষারীয় পদার্থ এবং তেল থাকে। শ্বাসনালীর লালাগ্রন্থিকে সক্রিয় করে বলে বাসক শ্লেষ্মানাশক হিসেবে প্রসিদ্ধ।

উপকারিতা: ১। যদি বুকে কফ জমে থাকে এবং তার জন্য শ্বাসকষ্ট হয় বা কাশি হয় তা হলে বাসক পাতার রস মধুসহ খেলে কফ সহজে বেরিয়ে আসে। ২। বাসক পাতার রস মধু-সহ খেলে শিশুর সদির্কাশি উপকার পাওয়া যায়।

৩। বাসকের কচি পাতা হলুদের সঙ্গে বেঁটে দাদ বা চুলকানিতে লাগালে কয়েক দিনের মধ্যে তা সেরে যায়। ৪। জন্ডিস হলে বাসক পাতার খেলে উপকার পাওয়া যায়।

৫। পাইরিয়া বা দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়লে বাসক পাতা থেঁতো করে সিদ্ধ করে সেই পানি হালকা গরম অবস্থায় কুলকুচি করলে উপকার পাওয়া যায়।

৬। যাঁদের গায়ে ঘামের গন্ধ হয় তাঁরা বাসক পাতার রস গায়ে লাগালে দুর্গন্ধ দূর হবে। ৭। বাসক পাতার রস ও শঙ্খচূর্ণ মিশিয়ে নিয়মিত ব্যবহার করলে রঙ ফর্সা হবে। ৮। বাসক পাতার রস নিয়মিত খেলে খিঁচুনি রোগ দূর হয়ে যায়।

শেয়ার করুন: