অশ্বগন্ধা (Ashwagandha) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এই ভেষজ উপাদানের জুড়ি নেই। কোভিড ঠেকাতে আইসিএমআর ও আয়ুষ মন্ত্রকও এই ভেষজের উপর আস্থা রাখতে বলা হয়েছিল। কী কী উপকারে কাজে লাগে জেনে নিন:-
আয়ুর্বেদে অশ্বগন্ধাকে একটি শক্তিশালী ভেষজ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে। আয়ুর্বেদে ব্রহ্মাস্ত্র হয়ে উঠেছে এই অশ্বগন্ধা। বাংলার এই নিজস্ব ভেষজ আমেরিকা, ব্রিটেন, দক্ষিণ আফ্রিকা সহ একাধিক দেশে এর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে। একাধিক সংস্থা এই বাংলার অশ্বগন্ধাকে কাজে লাগিয়ে একাধিক ঔষধ তৈরি করেছে। বলা হয় যে এটি কেবল ব্যথা এবং প্রদাহ কমায় না, তবে অনিদ্রার চিকিৎসা এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্যকে বাড়িয়ে তুলতেও সহায়তা করতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাতের ব্যথা, অনিদ্রা বা বার্ধক্যজনিত সমস্যা নিরাময়ে অশ্বগন্ধার বিকল্প নেই। এমনকি যৌবন ধরে রাখতে হলে অশ্বগন্ধার উপকারিতা অনস্বীকার্য। ত্বকের সমস্যাতেও দারুণ উপকারী। করোনাকালে মানুষ নির্ভর করতে শুরু করেছে ভেষজ গুণসমৃদ্ধ অশ্বগন্ধার উপর। তাই তো শুধু দেশেও নয় বিদেশেও রমরমা অশ্বগন্ধার বাজার। কী কী উপকারে কাজে লাগে দেখে নিন।
অনিদ্রা দূর করতে সাহায্য করে:
অনেক আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞদের মতে অশ্বগন্ধার শিকড় ঘুমের গুণমান উন্নত করতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অশ্বগন্ধায় প্রাকৃতিকভাবে উপস্থিত ট্রাইথিলিন গ্লাইকোল নামক যৌগ রয়েছে যা অনিদ্রা দূর করতে সাহায্য করে। আপনার যদি অনিদ্রার সমস্যা হয় তবে এই আয়ুর্বেদ ভেষজটি ব্যবহার করতে পারেন।
স্ট্রেস দূর করতে সাহায্য করে:
রোজকার জীবনের উদ্বেগ, চিন্তা দূর করার জন্য় অনেকেই ওষুধ খান। কিন্তু স্ট্রেস কমাতে বাড়িতেই ভেষজ উপায়ে খান স্ট্রেস। বিশেষজ্ঞদের মতে, অশ্বগন্ধায় অ্যাডাপ্টোজেন রয়েছে, যা শরীরকে মানসিক চাপ থেকে মোকাবিলা করতে সহায়তা করে। আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এর মধ্যে প্রোটিন (Hsp70), কর্টিসল এবং স্ট্রেস-অ্যাক্টিভেটেড সি-জুন এন-টার্মিনাল প্রোটিন কিনেস (JNK-1)মতো জিনিস রয়েছে যা স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। তবে অশ্বগন্ধা স্ট্রেস উপশম করার জন্য আরও গবেষণা প্রয়োজন।
টেস্টোস্টেরন হরমোনের উৎপাদন বাড়ায়:
বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরুষদের টেস্টোস্টেরন হরমোনের উৎপাদন কমে যাওয়ার ফলে যৌন আকাঙ্ক্ষা কমে যায়।নিয়মিত এই ভেষজটি ডায়েটে রাখলে যৌন আসক্তিও বাড়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অশ্বগন্ধার মধ্যে যৌন উদ্দীপক যৌগ থাকে। যা যৌগ শরীরে নাইট্রিক অক্সাইডের উৎপাদন বাড়িয়ে তোলে এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে। ফলে যৌনশক্তিও বৃদ্ধি পায়।
শরীরের প্রদাহ দূর করে:
আয়ুর্বেদে অশ্বগন্ধার প্রদাহ-বিরোধী বৈশিষ্ট্যের জন্যও পরিচিত। এটি শরীরের গুরুতর প্রদাহের চিকিত্সা করতে সহায়তা করে। গবেষণায় জানা গিয়েছে যে এই ভেষজটি ইমিউন কোষ তৈরি করতে পারে যা শরীরকে প্রদাহ-সৃষ্টিকারী সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে এবং শরীরকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।
কী ভাবে খাবেন?
*এক চামচ অশ্বগন্ধার গুঁড়ো ঈষদুষ্ণ জলে গুলে দশ মিনিট রেখে দিন। এর পর সেই পানীয় খেয়ে ফেলুন। বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনে এক থেকে দুইবার এই পানীয় খেলে উপকার পাবেন
*ঘুমানোর আগে গরম দুধে এক চামচ অশ্বগন্ধার গুঁড়ো মিশিয়েও খাওয়া যেতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
*তবে অবশ্য অশ্বগন্ধার ট্যাবলেটও পাওয়া যায়। সেটিও খেতে পারেন
ডিসক্লেইমার: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, আরও বিস্তারিত জানতে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে নিন।