Ashwagandha-অশ্বগন্ধা

রূপচর্চায় অশ্বগন্ধা: আপনার ত্বকের পক্ষে কেন ভালো?

আধুনিক জীবন মানেই একদিকে স্ট্রেস, কাজের চাপ, অন্যদিকে পরিবেশের ধুলোবালি, দূষণ। এই দুইয়ের সাঁড়াশি চাপে নাজেহাল দশা হয় ত্বকের। বিশেষ করে বছরের এই সময়টায় যখন বাতাসে ঠান্ডাভাব বাড়ছে, তখন ত্বকের বাড়তি সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় শুষ্কতা। বারবার ময়শ্চারাইজ়ার মাখা সত্ত্বেও টান ধরে ত্বকে। আপনারও যদি এরকম সমস্যা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়ে থাকে, তা হলে ভরসা রাখতে পারেন ভারতীয় আয়ুর্বেদে। ত্বক ও চুলের যে কোনও সমস্যার সমাধান রয়েছে আয়ুর্বেদে এবং যাঁরা রাসায়নিক ত্বক পরিচর্যার সামগ্রী পছন্দ করেন না, তাঁদের জন্য তো আয়ুর্বেদের ভেষজ উপাদান একদম ঠিকঠাক!রূপচর্চা

ভেষজ মানে অশ্বগন্ধা
ভারতীয় আয়ুর্বেদে ভেষজ হিসেবে ইন্ডিয়ান জিনসেং বা অশ্বগন্ধা খুবই পরিচিত। এমনকী ভেষজ জগতের সম্রাটও বলা হয় তাকে। পরিবেশের দূষণ, শারীরিক ও মানসিক চাপের ফলে শরীরের যা ক্ষতি হয়, তার মোকাবিলা করে শরীরের প্রয়োজনীয় উদ্যম আর মানসিক স্ফূর্তি ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে অশ্বগন্ধার ভূমিকার কথা অনেকেই জানেন। এমনকী যাঁদের অনিদ্রার সমস্যা রয়েছে, তাঁদেরও সাহায্য করতে পারে অশ্বগন্ধা। তবে শুধু শরীরের অভ্যন্তরীণ সমস্যায় নয়, ত্বক বা চুলের একাধিক গোলযোগও মিটিয়ে ফেলতে সাহায্য নিতে পারেন অশ্বগন্ধার।

কেন বেছে নেবেন অশ্বগন্ধা?
শীতের শুকনো দিনে ত্বকে টান ধরছে, বিবর্ণ, অনুজ্জ্বল দেখাচ্ছে মুখচোখ? বেছে নিন অশ্বগন্ধার ফেস প্যাক। শুকনো, রুক্ষ ত্বকে আর্দ্রতা জুগিয়ে তাকে কোমল করে তুলতে পারে অশ্বগন্ধা। একই সঙ্গে ত্বকের গভীরে জমে থাকা ধুলোময়লা টেনে বের করে ত্বক পরিষ্কার, ব্রণমুক্ত রাখতেও জুড়ি নেই অশ্বগন্ধার। এই ভেষজে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডান্ট রয়েছে যা পরিবেশের ফ্রি র‍্যাডিক্যালের হামলার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে ত্বক রাখে বলিরেখামুক্ত, টানটান।Ashwagandha-অশ্বগন্ধা

কীভাবে ব্যবহার করবেন অশ্বগন্ধা?
ভেষজ শেকড়বাকড় যে সব দোকানে পাওয়া যায়, সেখানেই পেয়ে যাবেন অশ্বগন্ধা। ভেজাল এড়াতে একটু নামী দোকান থেকে কেনাই ভালো। গ্রাইন্ডারে দিয়ে মিহি করে গুঁড়িয়ে শুকনো কৌটোয় ভরে রাখুন। ক্যাপসুল আকারেও অশ্বগন্ধার পাউডার পাওয়া যায়। ক্যাপসুল কেটে ভিতরের পাউডারটা ফেসপ্যাকে মিশিয়ে ব্যবহার করুন। টোনারে মিশিয়েও ব্যবহার করা যায় অশ্বগন্ধার পাউডার।

অশ্বগন্ধার ফেস প্যাক
এক চাচামচ পরিমাণ অশ্বগন্ধা পাউডার গোলাপজলে মিশিয়ে নিন। অল্প অল্প করে মেশাবেন যাতে একটা মসৃণ পেস্টের মতো জিনিস তৈরি হয়। এই পেস্টটা মুখে মাস্কের মতো করে লাগিয়ে রাখুন। 15 মিনিট পরে ধুয়ে ফেলবেন। অশ্বগন্ধার অ্যান্টি-অক্সিডান্ট গুণ মুখ থেকে বয়সের দাগছোপ মুছে ফেলে ত্বক উজ্জ্বল আর টানটান করে তুলবে।

অশ্বগন্ধার ফেস টনিক
ক্লান্ত মুখ নিমেষে তরতাজা করে তুলতে ভরসা রাখুন অশ্বগন্ধায়। আধ চাচামচ অশ্বগন্ধার পাউডার নিয়ে তার সঙ্গে আধ চামচ আদাগুঁড়ো মেশান (আদা সম্পূর্ণ রোদে শুকিয়ে গ্রাইন্ডারে দিয়ে মিহি করে গুঁড়ো করে নিতে হবে)। এবার অশ্বগন্ধা আর আদাগুঁড়োর মিশেলে অল্প লেবুর রস যোগ করে পেস্ট করে নিন। মুখে লাগিয়ে 15 মিনিট রাখুন, তারপর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন।

মনে রাখবেন:
অশ্বগন্ধা ভেষজ হিসেবে খুবই শক্তিশালী, তাই মুখে লাগানোর আগে কনুইয়ের ভিতরদিকে নরম অংশে একটুখানি লাগিয়ে অবশ্যই প্যাচ টেস্ট করে নেবেন। কোনওরকম জ্বালা, লালচেভাব বা র‍্যাশ দেখা দিলে অশ্বগন্ধা ব্যবহার করবেন না।

শেয়ার করুন: