হরিতকী

যাদুকরী ফল হরিতকীর আশ্চর্য গুণাগুণ

হরিতকী আমাদের সকলের পরিচিত একটি ভেষজ উদ্ভিদ। শত শত বছর ধরে এর ঔষুধি গুণের কথা বলা হয়ে আসছে। প্রাচীন অনেক আয়ূর্বেদ শাস্ত্রে এর গূনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। হরিতকী গাছ সাধারণত ৭০ থেকে ৮০ ফুট উচুঁ হয়ে থাকে এবং এর পাতা ৩ থেকে ৪ ইঞ্চি লম্বা হয়ে থাকে। দেখতে অনেকটা জামরুলের ছোট পাতার মত । এর ফুল সাদা বা পিত বর্ণের উগ্র গন্ধ বিশিষ্ট এবং ফল ১ থেকে ১.৫ ইঞ্চি লম্বা ৫টি উন্নত শিরা বিশিষ্ট। কাঁচা অবস্থায় সবুজ এবং পেকে গেলে লাল হয়। ত্রিফলার অন্যতম একটি উপাদান হলো হরিতকী। আসুন জেনে নিই হরিতকীর উপকারীতা সম্পর্কে।

উপকারীতাঃ ১। হরীতকী তিতা স্বাদযুক্ত একটি ফল যা আমাদের মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে। তাই মস্তিষ্ক ও স্নায়ুবিক যেকোনো রোগে হরীতকী খুবই কার্যকর। হরীতকী রেচন, সঙ্কোচক, পিচ্ছিলকারক, পরজীবীনাশক, মাংসপেশির সঙ্কোচক প্রতিরোধক এবং স্নায়ুবিক দুর্বলতা প্রতিরোধী গুণসম্পন্ন একটি ফল।

২। হরিতকী আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে দারুণ কার্যকর। এজন্য ৫-৬ গ্রাম হরিতকীর খোঁসা গুঁড়ো করে এর সাথে সমপরিমাণ চিনি মিশিয়ে রাতে গরম পানি দিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যাবে। এছাড়াও এটি আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি ও পেট ফাঁপা রোগ উপশম করে। এজন্য এর খোসা চূর্ণ ৫-৬ গ্রাম সামান্য পরিমাণ বিট লবণ দিয়ে প্রতিবার খাবারের পরে খেলে উপকার মেলে।

৩। কাঁচা হরিতকীর রস আয়ু, বল ও যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে এবং একই সাথে আমাদের বার্ধক্যজনিত সমস্যা কমায় । প্রতিদিন একটি করে হরিতকী খেলে চুল পড়া রোধ হয় এবং চুল ঘণ ও সবসময় কালো থাকবে। একই সাথে এটি আমাদের তারুণ্য ধরে রাখে এবং অকালে দাঁত পড়বে না ও চোখে চশমা দিতে হবে না।

৪। নানা কারণে আমাদের শরীরের অভ্যন্তরে অনেক বর্জ ঢুকে পড়ে। আর এসব বজ্য আমাদের রক্তে মিশে আমাদের রক্তকে দূষিত করে তোলে। হরিতকী ফল আমাদের রক্তকে পরিষ্কার করে। রক্তে মিশে থাকা বিভিন্ন রকম বজ্য শরীর থেকে বের করে দেয় । ফলে আমাদের রক্ত যেমন পরিষ্কার থাকে তেমনি শরীর থাকে দূষণ মুক্ত।

৫। হরিতকী ফল আমাদের মানব দেহের রোগ প্রতিরোধী শক্তি বৃদ্ধি করে। এছাড়াও জ্বর, কৃমি, আমাশয়, সাধারণ শারীরিক দুর্বলতা এবং বায়ু আধিক্যে এটি অত্যন্ত উপকারী। হরিতকী ফল সিদ্ধ করে এর ক্লাথ ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দিলে ঘা-পাঁচড়া জাতীয় রোগ দূর হয়।

শেয়ার করুন: