কালমেঘ

শরীরের হরেক সমস্যায় কার্যকরী কালমেঘ

কালমেঘ(Green chirayta)একটি ভেষজ উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম অ্যান্ড্রোগ্রাফিস পানিকুলাটা। এর গড় উচ্চতা ১ মিটার। চতুষ্কোণ আকারের শাখা বিশিষ্ট এবং এর পাতা বল্লম আকৃতির হয়ে থাকে। গোলাপী রঙের ফুল এবং ক্ষুদ্রাকার ফল বিশিষ্ট এই গাছটির শিকড় ব্যতীত কালমেঘ গাছটির সব অংশই ঔষুধের কাজে লাগে।। কালমেঘ অত্যন্ত তেতো এবং পুষ্টিকর। অনেকে কালমেঘকে চিরতা বলে থাকে কিন্তু কালমেঘ এবং চিরতা ভিন্ন গাছ। কালোমেঘ বাংলাদেশ ,ভারতের আসাম ও হিমাচল প্রদেশ জন্মে থাকে । আর্দ্র এবং অন্ধকারময় স্থানে বৃদ্ধি ভালো হয়। তবে অল্প আলোকে বেশি চাষ হয়। বাংলাদেশে মাঠে-ঘাটে কিংবা বনবাদাড়ে অবহেলায়-অযত্নে বেড়ে ওঠে।আসুন আজ জেনে নিই কালমেঘ উদ্ভিদের উপকারীতা সম্পর্কে।

পুষ্টি উপাদানঃ
কালমেঘে গাছের শিকড় ব্যতীত কালমেঘ গাছটির সব অংশই ঔষধি গুণ সম্পূর্ণ। এতে আছে এনড্রোগ্রাফিসাইড ও এনড্রোগ্রাফোলাইড নামে এক ধরনের তিক্ত রাসায়নিক উপাদান। এ গাছের রসে ১৪ ডিঅক্সি, ১১ এনড্রোগ্রাফোলাইড, ১৪ডিওএনড্রোগ্রাফোলাইড ও এপিজনিন ইথারসহ ফ্ল্যাভোনয়েড, ফেনল ও স্টেরল বিদ্যমান। এর মূলে আছে ফ্লাভোন, এনড্রোগ্রাফিন ও পেনিকোলিন নামক রাসায়নিক। যা নানাভাবে আমাদের অনেক উপকার করে থাকে।

উপকারীতাঃ
১। আমাদের লিভারের বিভিন্ন রোগ এবং হজমের সমস্যায় কালমেঘ ভীষণ উপকারী। কালমেঘের পাতার রস শিশুদের পেটের বিভিন্ন অসুখে ঘরোয়া ঔষুধ হিসেবে দারুণ কাজ করে। এছাড়াও এটি টাইফয়েড রোগ এবং এরোগের জীবানু রোধে অনেক কার্য্করী। কালমেঘ গাছ বেটে সরষের তেলে চুবিয়ে চুলকানি ভালো হয়। এগাছের পাতার রস কোষ্ঠকাঠিন্য ভালো করে।

২। কালমেঘ গাছ আমাদের নানা রোগবীজাণু বিনাশ এবং নির্দিষ্ট এন্টিবডি তৈরির উৎপাদন উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে । যকৃত এবং পিত্ত থলির নানা ইনফেকশন রোধে এটি দারুণ কাজ করে । এটি আমাদের অন্ত্রের কৃমি দূর করে এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল হিসেবে কাজ করে।

৩। যেহেতু কালমেঘ তিতা স্বাদের তাই এটি আমাদের রক্ত পরিষ্কারক হিসেবে কাজ করে। আর আমাদের রক্ত পরিষ্কার থাকলে ত্বক ভালো থাকে। এছাড়াও এটি আমাদের ত্বকের ব্রণ কমায়। এছাড়াও এটি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ কমাতে প্রভাব রাখে । এর পাশাপাশি আমাদের রক্তের শর্করা হ্রাস করে থাকে । কালমেঘ প্রশান্তিদায়ক ঔষধ হিসেবে কাজ করে ।

৪। কালমেঘ আমাদের মানব দেহের রোগপ্রতিরোধী শক্তি বৃদ্ধি করে। জ্বর, কৃমি, আমাশয়, সাধারণ শারীরিক দুর্বলতা এবং বায়ু আধিক্যে এটি অত্যন্ত উপকারী।এ গাছের পাতা সিদ্ধ করে ক্ষতস্থানে লাগিয়ে দিলে ঘা-পাঁচড়া জাতীয় রোগ দূর হয়।

৫। গ্যাসের সমস্যায় কালমেঘ পাতার রস সকাল সন্ধ্যা খেলে উপকার পাওযা যায়।শিশুদের কালাজ্বর, ম্যালেরিয়া, ইয়োলো ফিবারে কালমেঘের গাছ সিদ্ধ করা ঘন পানি খেলে অনেক উপকার হয়ে থাকে।এছাড়াও হাত পায়ের জ্বালা পোড়ায় কালমেঘের রস অনেক উপকারী।

শেয়ার করুন: