আব্দুল হাই মোহাম্মাদ সাইফুল্লাহ

‘ভুল চর্চা যেন ইসলামের সৌন্দর্যের গায়ে কালিমা না মাখে’

ভারতে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে মারণভাইরাস করোনা। করোনা ভয়ংকর আকার ধারণ করায় বিপর্যস্ত নাগরিক জীবন। প্রতিদিন হৃদয়বিদারক ঘটনার জন্ম দিচ্ছে করোনায় ধরাশায়ী এই দেশটি। মাঠ কিংবা পার্কে তৈরি করা হচ্ছে অস্থায়ী শ্মশান। করোনার কারণে মসজিদ কিংবা মাদরাসাগুলোকে বানানো হচ্ছে অস্থায়ী আইসোলেশন সেন্টার। যা এরই মধ্যে উঠে এসেছে সংবাদমাধ্যমগুলোর শিরোনামে।

ভারতের এমন বেহাল দশা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছেন বর্তমান সময়ের আলোচিত ইসলামিক ব্যক্তিত্ব আব্দুল হাই মোহাম্মাদ সাইফুল্লাহ। তিনি তাঁর পোস্টে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। তাঁর পোস্টটি হুবহু পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

‘কী ভাবছেন? কত দূর ভেবেছেন? আজকে দুটি ছবি নেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে। যেখানে উঠে এসেছে- দিল্লিতে গত বছর ঘটে যাওয়া চরম উগ্রতা, মসজিদে আগুন দেওয়া। আর এ বছর সেই মসজিদেই চরম করোনা পরিস্থিতিতে হিন্দু-মুসলিম সবার জন্য অস্থায়ী করোনা আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে ব্যবহারের উপযুক্ত করা হচ্ছে।

এই ঘটনায় ইসলামের মহাসত্য আর মসজিদের বড়ত্ব তুলে ধরার আপাতত দরকার নেই, বরং আরো একধাপ এগিয়ে মানুষের শিক্ষা নেওয়া উচিত এক আল্লাহর সৃষ্টিজীব হিসেবে আমরা কেউ কারো ওপর জোদ্দারি আর জুলুম করার অধিকার রাখি না। গত বছর যে আকাশ সহিংসতা, আগুন, ক্রন্দন আর ধোঁয়ায় আচ্ছাদিত হয়েছিল আজ একই আকাশ চিতার আগুনের ধোঁয়া আর মানুষের স্বজন হারানোর আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে! মানুষ হিসেবে আমাদের সতর্ক আর দায়িত্বশীল মানবিক আচরণের আজীবন পাঠ গ্রহণের দীক্ষা আছে এই কঠিন পরিস্থিতিতে।

অনেকে আবার ভারতের ঘটনাকে রিভেঞ্জ ভেবে খুব তৃপ্ত হয়ে খুশিভরা বয়ান দিচ্ছেন! খবরদার! অপরের ব্যথা-বেদনা নিয়ে নিজে খুশি হওয়া আর বিচারিক দায়িত্ব আল্লাহর থেকে নিয়ে অনুমানে - ওটা করেছিল বলে এটা হচ্ছে- এ রকম কথা বলা ইসলামে কঠিনভাবে নিষিদ্ধ। মনে রাখবেন - আপনার ভুল চর্চা যেন ইসলাম ও তার সৌন্দর্যের গায়ে কালিমা না মাখে।

আর এই যে যারা গা-ছাড়া দিয়ে অমুক-তমুক নিয়ে ভাবছেন, আসুন নিজেরা সতর্ক হই। নিজেদের দেশ ও তার মানুষ নিয়ে ভাবি। হুমড়ি খেয়ে বাজারে, ঈদ শপিংয়ে, অপ্রয়োজনীয় ঘোরাফেরা, স্বাস্থ্য সচেতনতায় অবহেলা, এগুলো ভালো লক্ষণ নয়। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম উট আগে বেঁধে তারপর আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করতে বলেছেন। আর আমরা যা ইচ্ছা তাই করে, আল্লাহ-রাসুলের নির্দেশনা অমান্য করে, অপরের বিপদে বগল বাজিয়ে, শিক্ষা না নিয়ে, বলছি আল্লাহ ভরসা! এটি কিন্তু ইসলামের শিক্ষা নয়!

প্রিয় ভাই ও বোনেরা! আকাশ ভারী হওয়া, অজস্র আক্রান্ত, বহু মৃত্যুর ঘটনা কিন্তু খুব দূরের নয়। একই জমিন! শুধু একটি বর্ডাররেখা মাঝে। আসুন সাধ্যের মাঝে সর্বোচ্চ সতর্ক হয়ে আল্লাহর সাহায্যের ভিখারি হই!'

শেয়ার করুন: