স্ত্রীর সঙ্গে মিথ্যা বলা জায়েয, কথাটি কতটুকু সত্য?

প্রশ্ন: অনেকের কাছে শোনা যায় স্ত্রীর সঙ্গে নাকি মিথ্যা কথা বলা জায়েয। কথাটি কতটুকু সত্য?

উত্তর: হ্যাঁ, স্ত্রীর সঙ্গে মিথ্যা বলা যায়। তবে তা সর্বক্ষেত্রে নয়। শুধুমাত্র মুহাব্বত ও ভালোবাসা প্রকাশের ক্ষেত্রে।

অর্থাৎ অন্তরে যে মহব্বত আছে তার চেয়ে বেশি প্রকাশ করা যাবে এবং এমন কথা বলবে যা দ্বারা উভয়ের হৃদ্যতা, অন্তরঙ্গতা ও আন্তরিকতা বৃদ্ধি পায় এবং স্থায়ী হয়।

এ থেকে অকল্যাণ নয় বরং কল্যাণের সূচনা হয়। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৬৭৯৯; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ৪৯২৩)

স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশতের ধারণা কি ঠিক?

স্ত্রীর প্রতি স্বামীর হক বা স্বামীর আনুগত্য বিষয়ে অনেকে উপরের কথাকে হাদিস হিসেবে পেশ করে থাকেন। কিন্তু এ শব্দ-বাক্যে কোনো হাদিস পাওয়া যায় না। সুতরাং এটিকে হাদিস হিসেবে বলা যাবে না। তবে কিছু বর্ণনায় এর মর্মার্থ পাওয়া যায়। (মুআত্তা মালেক, মুসনাদে আহমাদ, মুসতাদরাকে হাকেমসহ হাদীসের আরো কিছু কিতাবে বর্ণিত হয়েছে। )

একবার এক নারী সাহাবি রাসূলের কাছে এলেন নিজের কোনো প্রয়োজনে। যাওয়ার সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কি স্বামী আছে? তিনি বললেন- জি, আছে। নবীজি বললেন, তার সাথে তোমার আচরণ কেমন?

সে বলল, আমি যথাসাধ্য তার সাথে ভালো আচরণ করার চেষ্টা করি। তখন নবীজী বললেন, হ্যাঁ, তার সাথে তোমার আচরণের বিষয়ে সজাগ থাকো, কারণ সে তোমার জান্নাত বা তোমার জাহান্নাম। (মুআত্তা মালেক, হাদীস নং ৯৫২)

স্বামী-স্ত্রীর একের উপর অন্যের হক রয়েছে। এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা কুরআনে কারীমে মৌলিক নির্দেশনা দিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, আর স্বামীদের যেমন তাদের (স্ত্রীদের) উপর ন্যায়সঙ্গত হক রয়েছে, তেমনি তাদেরও হক রয়েছে স্বামীদের উপর। (সূরা বাকারা, ২২৯)

আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিস্তারিতভাবে স্বামী-স্ত্রীর হক তুলে ধরেছেন এবং স্বামীদেরকে স্ত্রীর হক আদায়ের ব্যাপারে সতর্ক করেছেন। বিদায় হজের ভাষণে নবীজী বলেছেন- তোমরা নারীদের বিষয়ে আল্লাহকে ভয় কর। (সহীহ মুসলিম, হাদিস নং ১২১৮)

সুতরাং গুনাহের কাজ নয় এমন বিষয়ে স্বামীর আনুগত্য জরুরি। কিন্তু স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত এটি হাদীস নয়।

শেয়ার করুন: