যে-কোন ধরনের কাশি হউক না কেন, যদি প্রথম থেকেই মারাত্মক আকারে দেখা দেয় অথবা কাশি শুরু হওয়ার দু’চার ঘণ্টার মধ্যে সেটি ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে, তবে একোনাইট হলো তার এক নাম্বার ঔষধ। একোনাইটের (Aconitum napellus) রোগকে তুলনা করা যায় ঝড়-তুফান্তটর্নেডোর সাথে- অতীব প্রচণ্ড কিন্তু ক্ষণস্থায়ী। কাশিও যদি তেমনি হঠাৎ করে মারাত্মক আকারে শুরু হয়, তবে একোনাইট সেবন করুন। কাশির উৎপাত এত বেশী হয় যে তাতে রোগী মৃত্যুর ভয়ে কাতর হয়ে পড়ে।
হাঁপানীর আক্রমণের যখন সেটি ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে, তখন খাওয়াতে পারলে একোনাইট কাজ করবে যাদুর মতো। হাঁপানীর আক্রমণ এত মারাত্মক হয় যে তাতে রোগী মৃত্যুর ভয়ে শংকিত হয়ে পড়ে।
এংজাইটি বা টেনশান যদি হঠাৎ দেখা দেয় এবং সাথে যদি ‘এখনই মরে যাব’ এমন ভয় হতে থাকে, তবে একোনাইট খেতে হবে।
ভয় পেয়ে মাসিক বন্ধ হয়ে গেলে একোনাইট খেতে হবে।
ছটফটানি ও মৃত্যুভয় (মৃত্যুর সমায় বা তারিখ বলে) বাচিবে না বলিয়া হতাশা, অত্যন্ত পিপাসা পানি মিষ্টি অন্য সবকিছু তিত, একবার শিত একবার গরম, হঠাৎ পীড়ার আক্রমন।
প্রতিশব্দ
১/ হেলমেট ফ্লাওয়ার
২/ নেকডের বিষ
৩/ একোনাইট
৪/ ফ্রায়ার্স ক্যাপ
বাংলা নাম: মিঠাবিষ, কাঠবিষ
উৎস: এটি এক ধরনের বিষাক্ত গাছের পুষ্প ও মূল সংগ্রহ করে ঔষধ প্রস্তুত করা হয়।
চিনার উপায়: এই গাছটি বহুবষজীবি সোজা খাড়া, এবং ওল বা আলুজাতী মূল। ইহা কান্ড হইতে মূল ৬ ফুট লম্বা হয়।
প্রুভার: ডাঃ হ্যানেম্যান ১৮০৫ সালে রোগীতে প্রয়োগ করেন।
ক্রিয়াস্থান: স্নায়ূমন্ডলী, পৃষ্ঠদেশ, মস্তিষ্ক এবং রক্ত সঞ্চালনের আধিক্য ঘটায়।
নির্দেশক লক্ষণ: ১। আকস্মিকতা ২। বিষন্নতা ৩। মৃত্যুভয় ৪। অস্থিরতা ৫।প্রচন্ডশীত ও প্রচন্ড গরমের প্রকোপ ৬।পিপাসা ও জ্বালা ৭। পানি মিষ্টি
যে সমস্ত রোগে কার্যকারী: জ্বর, সর্দি, কাঁশি, ক্রপ, ডেঙ্গু জ্বর, হাঁপানী, ব্রংকাইটিস, নিউমোনিয়া, ধনুষ্টংকার, মুত্রারোধ, মূত্র না জমা, হুপিং কাঁশ, দাঁতের ব্যাথা, ভয় জনিত রোগ, ইনফ্লুয়েঞ্জা, লেরেঞ্জাইটিস, যকৃতের প্রদহ, প্লুরিসি, ওলা উঠা, (বিশেষত: লাল তরমুজের ঘোলানবৎ মল) শিশু ডাইরিয়া, এপোপ্লোক্সি, পানি বসন্ত, হার্নীয়া, অন্ড কোষ প্রদাহ, দৃষ্টিহীনতা রোগে যদি একোনাইটের প্রকাশ পায়।
ধাতু প্রকৃতি: বলিষ্ট রক্ত প্রধান ব্যক্তি।
চরিত্রগত লক্ষণ:
১/ পেশী সমূহ দৃঢ়।
২/ চক্ষুর তারা কাল।
৩/ রক্ত প্রধান ধাত তাদের হঠাৎ ও তীব্র রোগে।
৪/ হঠাৎ পীড়ার আক্রমন।
৫/ অতিশয় ছটফটানি ও মৃত্যুভয়, চলিতে ফিরিতে বা বেড়াইতে সর্বদা শঙ্কা, বাচিবে না বলিয়া হতাশা।
৬/ নাড়ী খুব দ্রুত, কঠিন ও পুষ্ট।
৭/ জ্বালা-পোড়া, একবার গরম একবার শিতবোধ হয়।
৮/ পীড়ার লক্ষণসমূহ রাত্রিতে বৃদ্ধি এবং সকল পীড়া হঠাৎ প্রকাশিত হয়।
৯/ পানি পান ছাড়া সকল জিনিষই তিক্ত বোধ।
১০/ ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব, প্রস্রাব লালবর্ণ, গরম ও যন্ত্রনাদায়ক, শিশুদের ভূমিষ্ট হইবার পরই প্রস্রাব বন্ধ।
মানসিকগত লক্ষণ:
১। ভীষনভীতি , ও উৎকন্ঠা
২। মৃত্যুভয় ও অস্থিরতা ,(মৃত্যুর সময় নির্দেশ বা তারিখ বলে)
৩। সর্বদাই পরিবর্তনশীল মন।
৪। ভয়ে কাতর হইয়া পড়ে।
৫। লোক সমাগমে যাইতে চায় না।
৬। রোগীর অস্থিরতা, মানসিক অবসাদ হেতু ছটফটানি।
৭। বন্ধু-বান্ধব ও আত্নীয় স্বজনের প্রতি উদাসীন।
৮। রাস্তা – ঘাট পার হইতে ভয় বোধ হয়।
রোগ বৃদ্ধি: সন্ধ্যাকালে, বিছানা থেকে উঠিলে, গরম ঘরে,আক্রান্ত পাশ্ব শয়ন করিলে, ভয় পাইলে
রোগ উপশম: মুক্ত বাতাসে।
প্রতিষেধক: সালফার , পরিপূরকও সালফার।
পরবর্তী ওষুধ: আর্সেনিক, সালফার, বেলেডোনা, ব্রায়োনিয়া, ক্যান্থারিস, হিপার, ইপিকাক, পালসেটিলা, রাসটক্স, সাইলিসিয়া, স্পঞ্জিয়া।
ক্রিয়ানাশক: বেলেডোনা, সালফার, কফিয়া, এসেটিক এসিড।
ক্রিয়া কাল: ১ দিন।
শক্তি: ১x হইতে ২০০।