রাসায়নিক সার ফসলের দ্রুত বৃদ্ধি ঘটায়। কিন্তু পরিবেশের ক্ষতি করে থাকে। এগুলোর দামও বেশি। তাই প্রতিটি রাসায়নিক সারের বিকল্প হতে পারে জৈব সার। প্রতিটি রাসায়নিক সারের প্রকৃতিক বিকল্প সার আছে। যেমন পটাশ সারের কথাই ধরা যাক, গাছের বৃদ্ধিতে এই সারের বিকল্প নেই। কিন্তু এই সার আপনি চাইলে রান্না ঘরেই পাবেন। পটাশের আদর্শ বিকল্প হতে পারে চুলার ছাই কিংবা কলার খোসা।
পটাশের উপকারিতা
এমওপি বা মিউরেট অব পটাশ সারে শতকরা ৫০ ভাগ পটাশিয়াম থাকে। এমওপি উদ্ভিদ কোষের ভেদ্যতা রক্ষা করে। উদ্ভিদে শর্করা বা শ্বেতসার দ্রব্য পরিবহনে সহায়তা করে। লৌহ ও ম্যাংগানিজের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। উদ্ভিদে প্রোটিন বা আমিষ উৎপাদনে সহায়তা করে থাকে। উদ্ভিদে পানি -+পরিশোষণ, আত্তীকরণ ও চলাচলে অর্থাৎ সার্বিক নিয়ন্ত্রণে অংশগ্রহণ করে। গাছের কাঠামো শক্ত করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। নাইট্রোজেন ও ফসফরাস পরিশোষণে সমতা বজায় রাখে।
পটাশের অভাবজনিত লক্ষণ
এমওপি সারের ঘাটতিজনিত লক্ষণঃ গাছে পটাশ সারের ঘাটতি দেখা গেলে পুরাতন পাতার কিনারা থেকে বিবর্ণতা শুরু হয়। পরে পাতার আন্তঃশিরায় বাদামি বর্ণের টিস্যু দেখা যায়। এছাড়াও পাতার উপরিভাগে কুঞ্চিত হতে বা ভাঁজ পড়তে থাকে। গাছ বিকৃত আকার ধারণ করে এবং গাছের ছোট আন্তঃপর্বসহ বৃদ্ধি কমে যায়। পরবর্তীতে প্রধান কাণ্ডটি মাটির দিকে হেলে পড়ে। গাছে পোকামাকড় ও রোগবালাইয়ের আক্রমণ বেড়ে যায়।
পটাশের পরিমাণ বেশি হলে
জমিতে বা গাছে পটাশ প্রয়োগের পরিমাণ বেশি হলে ক্যালসিয়াম ও বোরনের শোষণ হার কমে যায়। ফলে বোরনের অভাবজনিত লক্ষণ দেখা যায়। পানি নিঃসরণের হার কমে যায় এবং গাছের বৃদ্ধি অস্বাভাবিকভাবে হ্রাস পায়।
পটাশের বিকল্প ছাই, কলার খোসা
- পটাসিয়াম সারে পটাশ নামে একটি পদার্থ থাকে, যা কাঠ পোড়ালে এবং খনি ও সমুদ্র থেকে পাওয়া যায়।
- যদিও পটাশ প্রযুক্তিগত উদ্ভুত পদার্থ তবে কিছু কিছু জৈব উপাদানে এর উপস্থিতি পাওয়া যায়।
- আপনি যদি মাটিতে পটাসিয়াম যুক্ত করতে চান তবে আপনি পটাশ বা অন্যান্য বাণিজ্যিক পটাসিয়াম সার ব্যবহার না করে বিভিন্ন জৈব উপায়ে এটি করতে পারেন। যেমন কলার খোসাতে পটাসিয়াম খুব বেশি থাকে।
- কাঠের ছাই থেকে ও পটাশ পেতে পারেন তবে এটি ব্যবহার করবেন পরিমিত পরিমাণে কারন বেশি ব্যবহার করলে আপনার গাছ পুড়ে যেতে পারে।
- যেহেতু গাছ দেখে পটাসিয়ামের ঘাটতি বুঝা কঠিন তাই মাটি পরীক্ষা করতে পারেন।