সজনে ডাঁটা

বারোমাসি সজনের উৎপাদন

ফাল্গুন-চৈত্র মাসের মওসুমি সবজি সজনের ডাঁটা এখন যশোরে বারো মাস পাওয়া যাবে। যশোর হর্টিকালচার সেন্টার বারোমাসি এই সজনের চারা উৎপাদন করে বিতরণ করছে। বিভিন্ন এলাকায় রোপণকৃত ওই সব চারায় ডাঁটা ধরতে শুরু করেছে। যশোর হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্যানতত্ত্ববিদ আমিনুল ইসলাম বলেন, বারোমাসি সজনেগাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায়। চারা লাগানোর ছয় মাসেই গাছে ডাঁটা ধরে এবং সারা বছরই এ থেকে ডাঁটা পাওয়া যায়। একটি পূর্ণবয়স্ক গাছে এক হাজার ৬০০টি পর্যন্ত সজনেডাঁটা ফলে। সাধারণত ২০টি ডাঁটায় এক কেজি হয়। এ হিসাবে একটি গাছে দুই মণ ডাঁটা ধরে। ৮০ টাকা কেজি হিসেবে এর দাম ছয় হাজার ৪০০ টাকা। বাণিজ্যিকভাবে কেউ এর চাষ করলে তিনি এক বিঘায় ৪০টি গাছ লাগাতে পারবেন। এই গাছ থেকে পাওয়া যাবে বছরে দুই লাখ ৫৬ হাজার টাকা। আমিনুল ইসলাম বলেন, খুলনা বিভাগে যশোর হর্টিকালচার সেন্টার এ বছরই প্রথম এই সজনের চারা উৎপাদন করেছে।

প্রতিটি ১০ টাকা মূল্যে ইতোমধ্যে প্রায় সাত হাজার চারা বিতরণ করা হয়েছে। কিছু শিাপ্রতিষ্ঠানের শিার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে বিনামূল্যে। যশোর সদর উপজেলার ডাকাতিয়া গ্রামের আবদুর রহমান লাগিয়েছেন ১০টি চারা। তার সব গাছে পূর্ণভাবে ডাঁটা ধরা শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, বিনাযতেœ সম্পূর্ণ লাভজনক হলো সজনের চাষ। একবার লাগালেই হলো। গরু-ছাগলের উপদ্রব ঠেকানো ছাড়া সার ও কীটনাশক কিছুই ব্যবহারের দরকার নেই। সারা বছর ডাঁটা ধরবে। সব মানুষের প্রিয় সবজি হলেও দেশে এর আবাদে কারো তেমন কোনো ভূমিকা না থাকায় এটি বিলুপ্তির পথে। এ অবস্থায় চট্টগ্রামের রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্র গবেষণা চালিয়ে এর অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার পাশাপাশি বারোমাসি জাত উদ্ভাবনে সফল হয়েছে।

এ ফর্মুলার ভিত্তিতে যশোর হর্টিকালচার সেন্টারে চারা উৎপাদন ও বিতরণ শুরু হয়েছে। খাদ্যমান ছাড়াও সজনের ওষুধি গুণ অনেক। কৃষি কর্মকর্তারা জানান, বাতজ্বর চিকিৎসায় সজনে ব্যবহৃত হয়। পোকামাকড়ের কামড়ে অ্যান্টিসেপটিকের কাজ করে এর পাতার রস। হৃদরোগ, রক্তের প্রবাহ বৃদ্ধি, শ্বেতী, টাইফয়েড, প্যারালাইসিস, লিভার, ত ও চোখের রোগ প্রতিরোধ করে। সজনের বাকল, শেকড়, ফুল, পাতা, বীজ এমনকি এর আঠাতেও ওষুধিগুণ আছে। যশোর হর্টিকালচার সেন্টার সূত্রে জানা গেছে,বসতবাড়ির আঙিনা ও বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সবজি েেত এই শজনে চাষ করা যাবে। বিদেশ থেকে আনা‘পিকেএম-২’ জাতের এই সজনের চারা কৃষি কাবের সদস্য ও প্রাকৃতিক দুর্যোগকবলিত এলাকার কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ শুরু হয়েছে। যশোর সেন্টারে বর্তমানে দুই হাজার চারা আছে। আরো পাঁচ হাজার চারা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।

শেয়ার করুন: