পেঁয়াজ

কয়েকদিনের ব্যবধানে কেজিতে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৫-২০ টাকা

হঠাৎ করেই বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। এক সপ্তাহেরও কম সময়ের ব্যবধানে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। পেঁয়াজের এই আচমকা ঝাঁজে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারি পর্যায়ে পেঁয়াজের সরবরাহ কম, দামও বেশি। তাই বাড়তি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। অন্যদিকে ভারতে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়াই এর কারণ বলছেন পাইকারি ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও কাঁঠালবাগান বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। অথচ গত বৃহস্পতিবারও প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকা আর ভারতীয় পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশে বছরে প্রায় ৩৩ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। সংরক্ষণের অভাবসহ নানা কারণে ৩০ শতাংশ বা প্রায় ১০ লাখ টন পেঁয়াজ নষ্ট হয়। বাকি থাকে ২৩ লাখ টনের মতো। অন্যদিকে প্রতিবছর দেশে পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে প্রায় ২৮ লাখ টন। পাঁচ লাখ টনের ঘাটতি থাকলেও প্রতি বছর গড়ে ৮ থেকে ১০ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। ফলে চাহিদার চেয়ে বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ দেশে থাকার কথা।

বাজারে হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষ। গত সোমবার রাজধানীর তেজকুনিপাড়ার একটি মুদি দোকানে পেঁয়াজ কিনতে আসা বেলাল নামের একজন ক্রেতা বলেন, তিন দিন আগেও কারওয়ান বাজার থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কিনেছেন তিনি। অথচ এখন প্রতি কেজিতে দাম চাওয়া হচ্ছে ২০ টাকা বেশি। প্রতিবছর নানা অজুহাতে অক্টোবর-নভেম্বর সময়টাতে পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

কী কারণে দাম বাড়ছে জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী মো. ইউসুফ বলেন, গত তিন-চার দিন ধরে পেঁয়াজের সংকট। পাইকারি বাজার থেকে পেঁয়াজ কম পাওয়া যাচ্ছে। আর পাইকারি ব্যবসায়ীরা তাদের জানিয়েছেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ কম আসছে। এ কারণেই দাম বেশি।

রাজধানীতে পেঁয়াজের বড় পাইকারি বাজার শ্যামবাজার। এ বাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি মো. মাজেদ বলেন, ভারত থেকে কয়েকদিন পেঁয়াজ আসেনি। তা ছাড়া সম্প্রতি ভারতে পেঁয়াজের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এ কারণে অনেকে এলসি খোলেননি। ফলে দেশের বাজারে সংকট তৈরি হয়েছে। দামও বেড়েছে। তবে এ পরিস্থিতিতে মিয়ানমার, তুরস্ক, চীনসহ বিকল্প কয়েকটি দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা যায় বলেও মনে করেন তিনি।

এ বিষয়ে হিলি স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি গ্রুপের সভাপতি হারুন উর রশীদ বলেন, সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ আমদানি হয় ভারতের বেঙ্গালুরু থেকে। কিন্তু সেখানে বৃষ্টির কারণে অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। এ কারণে মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হচ্ছে। নাসিকের পেঁয়াজের কেজি কয়েকদিন আগেও ১৮ থেকে ২০ রুপি ছিল। এখন সেখানে কেনা পড়ছে ২৭ থেকে ২৮ টাকা। তবে কয়েকদিন পরই বেঙ্গালুরুর পেঁয়াজ বাজারে আসবে। এ ছাড়া ভারতে পূজা শেষ হয়ে গেলে পেঁয়াজ আমদানি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। দামও কবে আসবে তখন।

শেয়ার করুন: