‘বিনিয়োগ করলে বেহেশত, ইহকালে দ্বিগুণ লাভ, পরকালে মুক্তি’ এমন সব চটকদার কথা বলে পিরোজপুর ও আশপাশের এলাকার ধর্মপ্রাণ মানুষকে আকৃষ্ট করতে থাকে এহসান গ্রুপ। তাদের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে হাজার হাজার মানুষ বিনিয়োগ করতে থাকেন গ্রুপটিতে। বিনিয়োগের অংক ও গতি বাড়াতে এহসান গ্রুপ ব্যবহার করে ধর্মীয় বক্তা, মসজিদের ইমাম ও খাদেমদের মতো ব্যক্তিদেরও। ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব পরিচয়ে অনেকের নানান প্রকারের বক্তব্যে মানুষ আরও টাকা ঢালতে থাকে এহসান গ্রুপে। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ধর্মপ্রাণ মানুষ বুঝতে পারেন, তারা প্রতারিত হচ্ছেন। এখন অনেক কষ্টের বিনিয়োগ হারিয়ে তারা ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে। সম্প্রতি গ্রুপটির প্রতারণা-জালিয়াতি ধরা পড়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে।
জালিয়াতির জাল বিছিয়ে প্রতারণা করে ১৭ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান রাগীব আহসানকে গ্রেফতার করে র্যাব। পরে গ্রেফতার করা হয় আরও চারজনকে। র্যাব বলছে, সারাদেশে রাগীব আহসানের বিরুদ্ধে ১৫টির বেশি মামলা হয়েছে। জেলা পুলিশের ভাষ্যে, কেবল পিরোজপুরেই পাঁচটি মামলা রয়েছে রাগীবের এহসান গ্রুপের বিরুদ্ধে।
রাগীব আহসান ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত হাটহাজারীর একটি মাদরাসা থেকে দাওরায়ে হাদিস এবং ১৯৯৯ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত খুলনার একটি মাদরাসা থেকে মুফতি কোর্স সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি পিরোজপুরে একটি মাদরাসায় চাকরি শুরু করেন। এর মধ্যে ২০০৬-২০০৭ সালে এস মাল্টিপারপাস নামে একটি এমএলএম কোম্পানিতে ৯০০ টাকা বেতনে চাকরি নেন। মূলত ওই প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুবাদে এমএলএম কোম্পানির প্রতারণা কার্যক্রম রপ্ত করেন। পরে নিজে ২০০৮ সালে এহসান রিয়েল এস্টেট নামে একটি এমএলএম কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর নানান কথা আর কৌশলে চলতে থাকে তার প্রতারণা।
র্যাব সূত্র জানায়, রাগীব আহসান সুদবিহীন বিনিয়োগের বিষয়টির ব্যাপকভাবে প্রচারণা চালান। ওয়াজ মাহফিল আয়োজনের নামে ব্যবসায়িক প্রচার-প্রচারণা করতেন। হাউজিং, ল্যান্ড প্রজেক্ট, দোকান, ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের আড়ালে সাধারণ গ্রাহকদের কষ্টার্জিত অর্থ আত্মসাৎ করেন। এখন পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ১১০ কোটি টাকা সংগ্রহের স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
এক মামলায় ৯৫ জনের টাকার হিসাব: এহসান গ্রুপের বিরুদ্ধে এক মামলার বাদী পিরোজপুরের হারুনার রশীদ। তিনি এজাহারে বলেছেন, ‘২০০৮ সাল থেকে শরিয়তভিত্তিক ও সুদমুক্ত হালাল ব্যবসার কথা বলে মানুষের কাছ থেকে টাকা নেওয়া শুরু করেন মুফতি মাওলানা রাগীব আহসান। তিনি বলেন ইসলামে সুদ মায়ের সঙ্গে ব্যভিচারের সমান পাপ। তাই হারাম ও সুদভিত্তিক ব্যবসা করা যাবে না। ব্যবসার ওপর লাভের কথা বলে মানুষের কাছ থেকে ব্যাংকের মতো টাকা নিতেন। বলতেন আল্লাহ ব্যবসাকে হালাল এবং সুদকে হারাম করেছেন। কৌশল হিসেবে তাই একই পরিমাণ লাভ না দিয়ে এক লাখ টাকায় মাসে কখনো দুই হাজার টাকা আবার কখনো এক হাজার ৮০০ টাকা দিতেন। আবার কখনো দুই হাজার ২৫ টাকা দিতেন। বলতেন ব্যবসায় যেরকম লাভ হয় সেরকম দিচ্ছি। কিন্তু মূল টাকা ফেরত চাইলে তার প্রতারণা ধরা পড়ে।’
তিনি বলেন, ‘আমি যে মামলাটি করেছি তাতে ৯৫ জনের টাকার হিসাব রয়েছে। আমার আছে ১৬ লাখ টাকা। এরকম কয়েক হাজার গ্রাহক প্রতারিত হয়েছেন। আর এই গ্রাহকদের মধ্যে পুলিশ ও প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তাও আছেন। পিরোজপুর এলাকার বিভিন্ন মসজিদ ও মাদরাসার এক হাজারের বেশি ইমাম ও মাওলানা তার সঙ্গে কাজ করতেন। তাদের তিনি খণ্ডকালীন কর্মী হিসেবে কাজে লাগাতেন। ফলে ধর্মভীরু লোকজন সহজেই তার প্রতারণার ফাঁদে পড়েন। আর দেশের বিশিষ্ট মাওলানাদের এনে তিনি তার ব্যবসার পক্ষে ওয়াজ নসিহত করাতেন, ফলে সবাই বিশ্বাস করতো। মুফতি মাওলানা রাগীব আহসানও ভালো বক্তৃতা করতে পারেন।’
প্রতারণার ফাঁদ ১৭টি প্রতিষ্ঠান: গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাগীব আহসান জানিয়েছেন, তিনি ১৭টি প্রতিষ্ঠানের নামে প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করেন। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- (১) এহসান গ্রুপ বাংলাদেশ, (২) এহসান পিরোজপুর বাংলাদেশ (পাবলিক) লিমিটেড, (৩) এহসান রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড বিল্ডার্স লিমিটেড, (৪) নূর-ই মদিনা ইন্টারন্যাশনাল ক্যাডেট একাডেমি, (৫) জামিয়া আরাবিয়া নূরজাহান মহিলা মাদরাসা, (৬) হোটেল মদিনা ইন্টারন্যাশনাল (আবাসিক), (৭) আল্লাহর দান বস্ত্রালয়, (৮) পিরোজপুর বস্ত্রালয়-১ ও ২, (৯) এহসান মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড, (১০) মেসার্স বিসমিল্লাহ ট্রেডিং অ্যান্ড কোং, (১১) মেসার্স মক্কা এন্টারপ্রাইজ, (১২) এহসান মাইক অ্যান্ড সাউন্ড সিস্টেম, (১৩) এহসান ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস, (১৪) ইসলাম নিবাস প্রজেক্ট (১৫) এহসান পিরোজপুর হাসপাতাল, (১৬) এহসান পিরোজপুর গবেষণাগার, (১৭) এহসান পিরোজপুর বৃদ্ধাশ্রম।
‘এহসান গ্রুপকে যারা বিশ্বাস করবে না তারা মুনাফেক’: স্থানীয়রা জানান, এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান রাগীব আহসান তার প্রতারণা পাকাপোক্ত করতে ২০১৩-১৪ সালের দিকে সৌদি আরব থেকে একজন বক্তাকে নিয়ে আসেন। ওই বক্তার ওয়াজ মাহফিলে আশপাশের কয়েক জেলা থেকে মুসল্লিরা সমবেত হন। ওই বক্তা টানা ৪৫ মিনিটের মতো আরবিতে ওয়াজ করেন। পরে তাকে বলার জন্য রাগীব আহসান আরবিতে লিখে দেন একটি বাক্য। যাতে লেখা ছিল এমন- ‘সবাই এহসান গ্রুপে বিনিয়োগ করুন। এখানে বিনিয়োগ করলে শান্তি পাবেন।’
রাগীব আহসানকে গ্রেফতার করতেই অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে কুয়াকাটা হজুর নামে পরিচিত পটুয়াখালীর হাফিজুর রহমান সিদ্দিকের ওয়াজের একটি ভিডিও ক্লিপ। সেখানে তাকে বলতে শোনা যায় ‘এহসান গ্রুপ গোটা জাতির জন্য রহমত’, ‘যারা আমাদের ভালোবাসেন তারা এহসান নিয়ে কোনো প্রশ্ন করবেন না’, ‘এহসান গ্রুপকে যারা বিশ্বাস করবে না তারা মুনাফেক’।
জমি বেচার ১৮ লাখ টাকা বিনিয়োগ, না পেয়ে শোকে স্ট্রোক: এহসান গ্রুপে বিনিয়োগ করায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যশোর শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকার মফিজুল ইসলাম ইমনের পরিবার। ইমন বলেন, আমার বাবা নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতেন মসজিদে। ২০১১ সালের শেষদিকে বাবা জমি বিক্রি করে ১৮ লাখ টাকা পান। সেই টাকা ইসলামী ব্যাংকে রাখেন। বিষয়টি জানতেন স্থানীয় পূর্ব বাউন্দি মাঠ পাড়া জামে মসজিদের একজন ইমাম। নামাজ পড়তে গেলে ইমাম আমার বাবাকে বোঝাতে সক্ষম হন, ব্যাংকে টাকা রাখলে ইহকালে গোনাহ এবং পরকাল বরবাদ হয়ে যাবে। বরং আলেম-ওলামাদের তৈরি প্রতিষ্ঠানে টাকা রাখলে ব্যাংকের চেয়েও বেশি লভ্যাংশ ও মেয়াদ শেষে গচ্ছিত টাকার দ্বিগুণ পাওয়া যাবে।
ইমন আরও বলেন, বাবা তার কথায় প্রভাবিত হন এবং এহসান গ্রুপে ১৮ লাখ ছয় হাজার টাকা রাখেন। প্রথম দুই বছর লাখে মাসিক ১৬০০ টাকা দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। এরপর থেকেই শুরু হয় তাদের টালবাহানা। টাকার শোকে ২০১৬ সালে স্ট্রোক করে বিছানায় পড়ে যান বাবা।
সাড়ে ১২ লাখ টাকা এহসান গ্রুপে, চিকিৎসা করাতে পারছেন না আফসার: ৬৭ বছর বয়সী যশোরের কসাবার বাসিন্দা আফসার উদ্দিন। চাকরি করতেন দেশের একটি অভিজাত বাহিনীতে। ২০১১ সালে অবসর গ্রহণ করেন। চাকরি শেষে যেতে চেয়েছিলেন হজে। কিন্তু এলাকার মসজিদের খাদেমের প্ররোচনায় চিরকুমার আফসার সাড়ে ১২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন এহসান গ্রুপে। প্রায় আড়াই বছর মুনাফাও পান তিনি। কিন্তু ২০১৪ সাল থেকে আর কোনো যোগাযোগ করতে পারেননি এহসান গ্রুপের সঙ্গে।
আফসার এখন গ্রাংরিন ও প্রটেস্ট গ্লান্ডের রোগে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী। বর্তমানে তার সময়টা কাটছে ভাই-বোনের কাছে। তার অভিযোগ, এহসান গ্রুপে সাড়ে ১২ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে আজ তিনি নিঃস্ব। হজে যাওয়া তো দূরের কথা, তিনি করাতে পারছেন না নিজের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাও। তিনি বলেন, আল্লাহ্ মেহেরবান, আমার কী হলো? আমার হজ আর হলো না! ইমন-আফসারের মতো এমন হাজারো ভুক্তভোগী এহসান গ্রুপে বিপুল অংকের টাকা বিনিয়োগ করে এখন দিশেহারা। ভুক্তভোগীরা বলছেন, মসজিদের খাদেম ও ইমামদের টার্গেট করে তাদের মাধ্যমে টাকা টানছিল এহসান গ্রুপ। সেই ফাঁদে পড়ে তারা এখন প্রায় নিঃস্ব।
যশোর এহসান ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক সংগ্রাম কমিটি: ২০১৪ সালের শেষে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের টাকা আদায়ে গঠিত হয় ‘যশোর এহসান ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক সংগ্রাম কমিটি’। ওই কমিটির সাধারণ সম্পাদক হন মফিজুল ইসলাম ইমন। এরপর এহসান গ্রুপে যারা বিনিয়োগ করেছিলেন তাদের তালিকা তৈরি করে টাকা ফেরতের চেষ্টা চালান তিনি। মফিজুল ইসলাম ইমন দাবি করেন, এহসান গ্রুপে টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন ১৬ হাজারের বেশি গ্রাহক। সর্বনিম্ন এক লাখ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা বিনিয়োগেরও রেকর্ড আছে যশোরে। টাকা বিনিয়োগ করে শুধু যশোরেই টাকার শোকে মারা গেছেন ৫৬ জন।
তবে ইমনসহ সংশ্লিষ্টরা জানান, দীর্ঘ আট বছরে তাদের ‘সংগ্রাম কমিটি’ এহসান গ্রুপের দাপটে কিছুই করতে পারেনি। উল্টো তাদের নামেই মামলা দেওয়া হয়। এরপর ‘সংগ্রাম কমিটি’ ব্যাকফুটে চলে যায়। এহসান গ্রুপে প্রায় ৩০০ কর্মী ছিল। তাদের কেউ কেউ বেতন পেতেন। আবার কেউ কেউ পেতেন না, এরা মাঠপর্যায় থেকে বিনিয়োগকারী এনে দিলে বিনিয়োগের ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন পেতেন। এভাবে দ্রুত গ্রাহক সংখ্যা বাড়তে থাকে গ্রুপটির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্রগুলো বলছে, রাগীব তার পরিবারের সদস্যদের নাম যুক্ত করে ব্যবসায়িক কাঠামো তৈরি করেন। তার নিকট আত্মীয়দের মধ্যে শ্বশুর হন প্রতিষ্ঠানের সহ-সভাপতি, বাবা প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা, ভগ্নিপতি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার। এছাড়া রাগীব আহসানের তিন ভাইয়ের মধ্যে গ্রেফতার আবুল বাশার প্রতিষ্ঠানের সহ-পরিচালক, বাকি দুই ভাই প্রতিষ্ঠানের সদস্য।
যা বলছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা: সার্বিক বিষয়ে পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুদুজ্জামান বলেন, এহসান গ্রুপের রাগীব ও তার ভাই বাশারকে র্যাবের কাছ থেকে তারা গ্রহণ করে পিরোজপুরে নিয়েছেন। ঢাকা থেকে ওই দুজন গ্রেফতার হলেও পিরোজপুরের পুলিশ গত ৯ সেপ্টেম্বর রাগীবের অপর দুই ভাই মাহমুদুল হাসান ও খায়রুল ইসলামকে তাদের খলিশাখালী গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে। তারা দুজনই প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা কমিটির সদস্য। তাদের মধ্যে মাহমুদুল পিরোজপুর বাজার মসজিদের ইমামের দায়িত্বও পালন করছিলেন।
জানতে চাইলে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, ধর্মীয় আবেগ-অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে এমএলএম কোম্পানির ফাঁদ তৈরি করে ধর্মপ্রাণ সাধারণ মুসলমান, ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যুক্ত ব্যক্তি, ইমাম ও অন্যান্যদের টার্গেট করে ১৭ হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেন এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান রাগীব আহসান। রাগীব আহসান লাখ টাকার বিনিয়োগে মাসিক মাত্রাতিরিক্ত টাকা প্রাপ্তির প্রলোভন দেখিয়ে ২০০৮ সালে ১০ হাজার গ্রাহককে যুক্ত করেন। তার গ্রাহকের সংখ্যা গ্রেফতার হওয়ার আগ পর্যন্ত লক্ষাধিক ছাড়িয়ে যায়। বিভিন্ন গ্রাহকের কাছ থেকে যে টাকা পেয়েছেন তা এহসান গ্রুপের একাধিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসার জন্য ব্যবহার করেন রাগীব। এহসান গ্রুপের ১৭টি প্রতিষ্ঠান থেকে যা লভ্যাংশ হবে তা শরীয়াভিত্তিক দেবেন বলে মানুষের কাছে প্রচার করেন। তার প্রায় তিন শতাধিক মাঠকর্মী ছিল। তারা কয়েক মাস ধরে বেতন পাচ্ছিলেন না।
তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় এহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান রাগীব আহসানের বিরুদ্ধে সারাদেশে ১৫টির বেশি মামলা হয়। মামলাগুলোতে বিভিন্ন ব্যবস্থাপনায় তিনি জামিন নেন। পাশাপাশি ভুক্তভোগী গ্রাহকদের বিরুদ্ধে তিনি উল্টো মামলাও করেন। এছাড়াও ২০১৯ সালের একটি মামলায় তিনি গ্রেফতার হয়ে কারাভোগ করেছেন।
পিরোজপুর জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সাঈদুর রহমান বলেন, আমি এসপি হিসেবে যোগদানের পর থেকেই মৌখিকভাবে কিছু মানুষ আসতেন তাদের টাকা আদায় করে দেওয়ার জন্য। ভুক্তভোগীদের মামলা করতে বললে তারা সেটা করতে চাইতেন না। ভুক্তভোগীরা মনে করতেন মামলা করলে হয়তো টাকা আর ফেরত পাওয়া যাবে না। এখন পর্যন্ত এহসান গ্রুপের বিরুদ্ধে কতটি মামলা হয়েছে এবং কতজন গ্রেফতার আছে জানতে চাইলে এসপি সাঈদুর রহমান বলেন, এহসান গ্রুপের বিরুদ্ধে (জেলায়) পাঁচটি মামলা হয়েছে। মামলায় এখন পর্যন্ত চারজন গ্রেফতার আছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যহত রয়েছে।