আলু

পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে যেসব খাবার

ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, পটাশিয়াম আমাদের শরীরের একান্ত প্রয়োজনীয় খনিজ বা মিনারেল। মানবদেহে পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণ হয় মূলত পুষ্টিকর খাবারের মাধ্যমে। তার আগে জানতে হবে শরীরের পটাশিয়ামের প্রয়োজনীয়তা কতটুকু।

পটাশিয়ামের ঘাটতি মেটাতে ডায়েট তালিকায় কলা রাখার নির্দেশ দেন চিকিৎসকরা। তবে কলা ছাড়াও এমন অনেক খাদ্য রয়েছে যাতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে।

আলু: আলু প্রধানত স্টার্চযুক্ত সবজি। একটি ১৩৬ গ্রাম ওজনের আলুতে থাকে ৫১৫ মিলিগ্রামেরও বেশি পটাশিয়াম। বিশেষজ্ঞদের মতে, আলু পটাশিয়ামের অন্যতম উৎস। একটি ছোট আলু সিদ্ধতে পটাশিয়াম থাকে ৭৩৮ মিলিগ্রামের বেশি। তবে একেক প্রজাতির আলুতে এই মাত্রা একেক রকম হয়।

রাঙা আলু: অনেকেই আছেন, যারা রাঙা আলু খেতে পছন্দ করেন। রাঙা আলু ভাজি, সবজি, পরোটা কিংবা অন্য যেকোনোভাবে খাওয়া যায়। আলু আর রাঙা আলুর ব্যবহার মোটামুটি একই রকম। একটি মাঝারি আকারের রাঙা আলুতে প্রায় ৫৪১ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম থাকে। রাঙা আলুতে ফ্যাট কম থাকে। সামান্য প্রোটিনও থাকে। এ ছাড়া এতে আছে ভিটামিন 'এ'।

বিট: রাঙা আলুর মতো লাল কন্দ বিটেও থাকে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। সালাদ, তরকারি কিংবা আচারে বিটের ব্যবহার আছে। সাধারণত এক কাপ বা প্রায় ১৭০ গ্রাম সিদ্ধ বিটে প্রায় ৫১৮ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম থাকে । উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিট দারুণ কার্যকরী। হার্টের রোগ প্রতিরোধ করতেও বিট উপকারী।

পালং শাক: পালং শাক শুধু পুষ্টিকরই নয়, সুস্বাদুও বটে। এক কাপ বা প্রায় ১০০ গ্রাম পালং শাকে থাকে প্রায় ৫৫৮ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম। এ ছাড়া পালং শাকে আছে প্রায় ৩৬ শতাংশ ভিটামিন 'এ', ৫৭ শতাংশ ভিটামিন 'কে', ৫৭ শতাংশ ফুলেট এবং ২৯ শতাংশ ম্যাগনেসিয়াম। তবে ফ্রোজেন পালং শাকের পরিবর্তে টাটকা পালং শাকেই এসব ভিটামিন এবং মিনারেল পাওয়া যায়।

বেদানা: ফলের মধ্যে কলা ছাড়াও বেদানায় থাকে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। একটি স্বাভাবিক মাপের বেদানায় থাকে ৬৬৬ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম। এ ছাড়া বেদানায় আছে ভিটামিন 'সি' এবং ভিটামিন 'কে', প্রোটিন। প্রাকৃতিক শর্করা এবং ফাইবারে পরিপূর্ণ এই বেদানা।

টমেটো: টমেটো সিদ্ধ করে ভালো করে ছেঁকে যে পেস্ট বা জুস হবে তা পটাশিয়ামের ভালো আধার। পঞ্চাশ গ্রাম টমেটো পেস্টে থাকে প্রায় ৪৮৬ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম। এ ছাড়া টমেটোতে রয়েছে ভিটামিন 'সি', লাইকোপিন। টমেটোর রস ছাড়াও কমলা লেবুর রস এবং আঙুরের রসেও থাকে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম।

মাশরুম: অনেকেই মাশরুম খুব পছন্দ করেন। ১০০ গ্রাম মাশরুমে ৪২০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত পটাশিয়াম পাওয়া যায়। মাশরুমেরও নানা প্রজাতি রয়েছে, সেগুলোর একেকটির পটাশিয়ামের মাত্রা একেক রকম।

কুমড়া: প্রতি ১০০ গ্রাম কুমড়ায় আছে প্রায় ৩৪০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম। এ ছাড়া এতে আছে যথেষ্ট পরিমাণ ভিটামিন 'সি', আয়রন, ভিটামিন 'এ' প্রভৃতি।

সোয়াবিন: সোয়াবিনে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। এক কাপ বা ১৫৫ গ্রাম সোয়াবিনে পটাশিয়াম থাকে প্রায় ৬৭৬ মিলিগ্রাম। এ ছাড়া সোয়াবিনে আছে প্রায় ১২১ শতাংশ ফুলেট, ভিটামিন কে, ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি।

ডাবের পানি: ডাবের পানি সব সময়ই স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী। এক কাপ বা ২৪০ গ্রাম ডাবের পানিতে থাকে প্রায় ৬০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম। এ ছাড়া ডাবের পানিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম ইত্যাদি।

শেয়ার করুন: