গ্যাংরিন

করোনা সংক্রমিতদের শরীরে গ্যাংরিন ছড়িয়ে পচনের শঙ্কা!

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিপর্যস্ত গোটা বিশ্ব। এই ভাইরাস প্রতিষেধক টিকা আবিষ্কার হলেও কমছে না সংক্রমণ। গণহারে টিকা দেয়ার ফলে মৃত্যুহার কিছুটা কমলেও আক্রান্তের শরীরে নানান জটিলতা রেখে যাচ্ছে করোনাভাইরাস। করোনায় আক্রান্তদের অনেকে ছত্রাকজনিত ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। ভারতে এই ছত্রাকজনিত রোগ সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশ হওয়ায় তা দ্রুতই বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়ছে। এরইমধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামে বেশ কয়েকজন ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন।

তবে এবার আরও একটি ছত্রাকজনিত সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে ভারতে। চিকিৎসকরা এটিকে ‘গ্যাংরিন’ বলছেন। কোনো ব্যক্তির শরীরে করোনা সংক্রমণ হলে তা সেরে যাওয়ার অনেক দিন পরও গ্যাংরিন হতে পারে। গ্যাংরিন হলে মূলত ত্বক ও শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে পচন দেখা দেয়। দিল্লির বেশ কয়েকজন চিকিৎসক গ্যাংরিনে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা দেয়ার কথা জানিয়েছেন।

দিল্লির রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে এক রোগীর দেহে গ্যাংরিনের অস্তিত্ব পাওয়াও গেছে। দেশটির সরকারি ওই হাসপাতালে ভর্তি ৬৫ বছর বয়সী ব্যক্তির করোনার সংক্রমণ ছাড়া আর কোনো শারীরিক সমস্যা ছিল না। তবে রোগটি ওই একজনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। পরে সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে আরও বেশ কয়েকজন করোনায় আক্রান্তের গ্যাংরিনের সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

গ্যাংরিন কী? করোনার কারণে রক্ত সঞ্চালনের অভাবে ত্বকের কোষ মরতে শুরু করে। ক্রমে তা ছড়িয়ে পরে ভেতরের অঙ্গেও। হাতের আঙুল, পায়ের পাতা তো বটেই চিকিৎসায় দেরি হলে ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোতও আক্রান্ত হতে পারে গ্যাংরিনে। এ রোগ থেকে বাঁচতে অতি দ্রুত চিকিৎসা বিকল্প নেই।

করোনা আক্রান্তদের গ্যাংরিন ছড়ানোর কারণ: চিকিৎসকেরা বলছেন—রক্ত জমাট বেঁধে এই সমস্যা হতে পারে। এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসক হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ সরোজ মণ্ডলের মতে—কোভিড আক্রান্তদের অনেকেই রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যায় ভুগছেন। রক্ত জমাট বাঁধা থেকে হৃদরোগ তো বটেই অন্যান্য সমস্যাও হতে পারে। তবে করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে গ্যাংরিনের মতো সমস্যা হলেও তার পেছনে প্রকৃত কারণ কী, তা নিয়ে এখনও স্পষ্ট নয় চিকিৎসকরা।

তারা বলছেন—যাদের রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি, অন্য জটিল রোগ আছে, তাদের বেশি মাত্রায় সতর্ক থাকতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। ত্বকের কোথাও দুর্গন্ধযুক্ত প্রদাহ হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলছেন চিকিৎসকরা।

শেয়ার করুন: