ঘুমের সমস্যা হওয়ার জন্য দায়ী হতে পারে অনেককিছুই। বিশেষ করে এই মহামারিকালে নানা ধরনের দুশ্চিন্তা কাজ করে। কারও শারীরিক সমস্যা, কারও আর্থিক। সব মিলিয়ে পড়ে মানসিক চাপ। সেই চাপ সামলে ঘুম নিয়ে আসা সহজ কাজ নয়।
এদিকে ঘুম কম হলে বা অনিয়মিত হলে তার প্রভাব পড়ে শরীরে। প্রতিদিনের জীবনযাপন হয় বিঘ্নিত। কাজে মন বসে না, সারাক্ষণ খিটিমিটি লাগে। এমন সমস্যায় অনেকে নির্ভরশীল হয়ে পড়েন ঘুমের ওষুধের ওপরে। যা শরীরে পার্শপ্রতিক্রিয়ার কারণ হতে পারে।
ভালো ঘুমের জন্য কী করবেন: ভালো ঘুমের জন্য নিয়ম মেনে চলা জরুরি। আপনি যদি অগোছালো থাকেন বা নিয়ম মেনে না চলেন তবে ঘুম কীভাবে সময়মতো আসবে? তাই প্রতিদিনের রুটিন এমনভাবে করুন যেন ঘুমে সমস্যা না হয়। রাতে অনেকেই ভারী খাবার খেয়ে থাকেন। এটি ঘুমে ব্যাঘাত ঘটানোর জন্য যথেষ্ট।
তাই রাতের বেলা তেল-মশলাযুক্ত খাবার না খেয়ে হালকা ধরনের খাবার খান। চেষ্টা করুন রাতের খাবার যতটা সম্ভব আগে খেতে। ধূমপান বা মদ্যপান এড়িয়ে চলুন। খাবারের পর চা কিংবা কফি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। ঘুমের অন্তত দুই ঘণ্টা আগে রাতের খাওয়া শেষ করুন। অন্তত সাত-আট ঘণ্টা বরাদ্দ রাখুন ঘুমের জন্য।
এক গ্লাস গরম দুধ: ঘুমের আগে দুধ খেলে গ্যাসের সমস্যা হতে পারে অনেকের ধারণা। তবে এই সমস্যার জন্য দুধ দায়ী নয়, বরং জীবনযাপনের ক্ষেত্রে নানা অনিয়ম দায়ী।
ঘুমের আগে হালকা গরম দুধ পান করা ঘুমের জন্য সহায়ক। দুধে ট্রিপ্টোফান নামের এক ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে। যা ঘুমে সাহায্য করে। হালকা গরম দুধ শরীর শিথিল করে, মন সতেজ রাখে। এতে থাকা কার্বোহাইড্রেটও ভালো ঘুমের ক্ষেত্রে সহায়ক।
আমন্ডের দুধ: আপনার যদি দুধ পানে কোনো ধরনের সমস্যা থাকে যেমন অ্যালার্জি বা ল্যাক্টোজ ইনটলারেন্স ইত্যাদি, তাহলে পান করতে পারেন আমন্ডের দুধ। এতেও থাকে প্রচুর ট্রিপ্টোফান। সেইসঙ্গে আরও থাকে প্রচুর ম্যাগনেশিয়ামও। এটি শরীরের মাংসপেশি শিথিল করে এবং আরাম জোগায়। ফলে ভালো ঘুম হয়।
মধুমিশ্রিত গ্রিন টি: গ্রিন টি স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী এ নিয়ে কারও সন্দেহ নেই। এটি ভালো ঘুমেও সহায়ক। রাতে ঘুমের আগে গ্রিন টি এর সঙ্গে সামান্য মধু মিশিয়ে পান করুন।
বাড়িতে গ্রিন টি না থাকলে হালকা গরম পানিতে মধু মিশিয়েও পান করতে পারেন। মধুতে থাকে প্রচুর ট্রিপ্টোফান। প্রতি রাতে এই পানীয় পান করলে ঘুম নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবে না।
ডাবের পানি উপকারী: ডাবের পানি এমনিতেই অনেক উপকারী। ভালো ঘুমের ক্ষেত্রেও এটি সহায়ক। ডাবের পানিতে থাকে প্রচুর ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়াম। ঘুম আনার ক্ষেত্রে এই দুই উপাদান খুব ভালোভাবে কাজ করে। তাই ঘুমের সমস্যা হলে নিয়মিত ডাবের পানি পান করুন।
খেতে পারেন ক্যামোমাইল টি: ঘুমের ক্ষেত্রে আরেকটি সহায়ক পানীয় হতে পারে ক্যামোমাইল টি। প্রতি রাতে ঘুমের আগে পান করলে উপকার পাবেন।
এতে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আমাদের স্নায়ুকে শিথিল করে দেয়। ফলে অনেক হালকা বোধ হয় এবং ঘুম নেমে আসে। এই চা পান করে ঘুমাতে গেলে সকালেও সতেজ অনুভব করবেন।