অনেকেই শখের বশে নাম রেখে থাকেন পশু-পাখির। আদর করে তাকে সেই নামে ডাকেন। আবার কেউ কেউ মানুষের নামেও পশুর নাম রাখেন। প্রশ্ন হচ্ছে, এভাবে পশুর নাম রাখা বৈধ কি না? এ বিষয়ে ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিভঙ্গি নিম্নরূপ—
যেকোনো পশু-পাখি বা প্রাণীর নাম রাখা ইসলামী শরিয়তে বৈধ। এমনটি রাসুল (সা.) থেকে বিষয়টি প্রমাণিত। রাসুল (সা.)-এর ঘোড়া ও গাধার নাম রেখেছেন। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.)-এর ‘আজবা’ নামের একটি উটনী ছিল। তাকে অতিক্রম করে যাওয়া যেত না।
একবার একজন বেদুঈন তার একটি উটে সওয়ার হয়ে এলে সেটি তাকে (অর্থাৎ আজবাকে) অতিক্রম করে গেল। মুসলমানদের কাছে তা মনঃকষ্টের কারণ হয়। তারা বলল যে আজবাকে তো অতিক্রম করে গেল। তখন রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহর বিধান হলো, কোনো কিছু অবনত করে দুনিয়া থেকে তুলে নেওয়া। (বুখারি, হাদিস : ৬৫০১ )
ইমাম বাগাভি (রহ.) বলেন, উল্লিখিত হাদিস থেকে প্রমাণিত হয়, পশু-পাখির নাম রাখা বৈধ। এবং আরবদের অভ্যাস ছিল তারা বিভিন্ন প্রাণী ও যুদ্ধের সরঞ্জামের নাম রাখত, যা দ্বারা সবার কাছে পরিচিত ছিল। (শরহুস সুন্নাহ : ৮/২২২)
মানুষের নামে পশুর নামকরণ করার বিধান: পশু-পাখির নাম রাখা বৈধ; কিন্তু মানুষের নামে কোনো পশুর নাম রাখা বৈধ নয়। কেননা আল্লাহ তাআলা মানবজাতিকে সম্মানিত করেছেন।
পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই আমি (আল্লাহ) আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি, আমি তাদের স্থলে ও জলে চলাচলের বাহন দান করেছি; তাদের উত্তম জীবনোপকরণ প্রদান করেছি এবং তাদের অনেক সৃষ্ট বস্তুর ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি।’ (সুরা ইসরা, আয়াত : ৭০)
তাই মানুষের নামে কোনো পশুর নাম রাখা মানুষকে এক ধরনের তাচ্ছিল্য করার শামিল। এমন একটি প্রশ্ন করা হয়েছিল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শায়খ ড. আহমদ তালেবের কাছে।
জবাবে তিনি বলেছেন, মানুষের নামে কোনো প্রাণীর নাম রাখা বৈধ নয়। কারণ এর দ্বারা মানবজাতির সম্মানহানি হয়। মানুষের নামে পশুর নাম রেখে প্রকারান্তে মানুষের নামকে অপমান করা হয়। তাই এ ক্ষেত্রে আমাদের সতর্ক থাকা উচিত।
মূল কথা হলো, পশু-পাখির নাম রাখা বৈধ; কিন্তু মানুষের জন্য ব্যবহৃত নামে সেগুলোর নামকরণ করা যাবে না। মহান আল্লাহ আমাদের অনুধাবন করার তাওফিক দান করুন।