ইতালি

সেমিফাইনালে ইতালি ও স্পেন

চলতি ইউরোর প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে টাইব্রেকারে সুইজারল্যান্ডকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে স্পেন। রাশিয়ার সেন্ত পিতার্সবুর্গে শুক্রবার নির্ধারিত সময়ে ১-১ গোলে সমতায় ছিল ম্যাচ। লাল কার্ড খেয়ে ১০ জনের দল নিয়েও স্পেনের আক্রমণ সামাল দিয়েছিল সুইজারল্যান্ড। কিন্তু টাইব্রেকারে আর পারল না সুইসরা। এতে কোয়ার্টারেই শেষ সুইসদের স্বপ্নযাত্রা।

অপরদিকে নয় বছর পর উয়েফা ইউরোর সেমিফাইনালে উঠেছে ইতালি। শুক্রবার (২ জুলাই) দিবাগত রাতে ইউরো-২০২০ এর দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালে বেলজিয়ামকে ২-১ গোলে হারিয়ে শেষ চার নিশ্চিত করে রবার্তো মানচিনির শিষ্যরা।

সেন্ট পিটার্সবার্গে ম্যাচের ৮ মিনিটেই আত্মঘাতী গোলে এগিয়ে যায় স্পেন। জর্দি আলবার শটে ডেনিস জাকারিয়ার পায়ে লেগে দিক পরিবর্তন করে বল জড়িয়ে যায় জালে। এই গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় লুইস এনরিকের শিষ্যরা।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সারাবিয়ার জায়গায় ড্যানি অলমোকে নিয়ে আসেন এনরিকে। আলভারো মোরাতার জায়গায় এলেন জেরার্ড মোরেনো। ম্যাচের ৬৮ মিনিটে স্প্যানিশ রক্ষণভাগের ভুলে ম্যাচে সমতা ফিরিয়ে আনল সুইজারল্যান্ড। গোল করলেন শাকিরি। কিন্তু ৭৭ মিনিটে ১০ জনের দলে পরিণত হয় সুইজারল্যান্ড। এ সময় সরাসরি লাল কার্ড দেখে বিদায় নেন রেমো ফ্রেউলার। বাকি সময় ১০ জন নিয়েই খেলতে হয় সুইজারল্যান্ড।

ফলে ডিফেন্স জোরাল করার জন্য শাকিরি এবং সেফেরওভিচকে তুলে নিলেন সুইস ম্যানেজার। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের শেষ দিকে একের পর এক আক্রমণ করে গেলেও গোলের দেখা পায়নি স্পেন। সুইস গোলরক্ষক ইয়ান সমার একাই রুখে দেন স্প্যানিশদের সকল প্রচেষ্টা। এরপর ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। বাড়তি সময়েও স্পেনকে জালের নাগাল পেতে দেয়নি তারা। তাতে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।

টাইব্রেকারে প্রথম শট পোস্টে লাগে বুসকেটসের। মিস করেন রিদ্রি। কিন্তু সুইস দলের হয়ে তিনজন মিস করেন। বৃথা গেল সুইস গোলরক্ষকের অনবদ্য লড়াই। শেষ শটে গোল করেন মিকেল। এতে টাইব্রেকারে ৩-১ ব্যবধানে সুইজারল্যান্ডকে হারিয়ে শেষ চারে পৌঁছে গেলেন আলভারো মোরাতারা।

সবশেষ ২০১২ সালে সেমিফাইনালে উঠেছিল তারা। সেবার অবশ্য ফাইনালও খেলেছিল। কিন্তু স্পেনের কাছে হেরে রানার্স-আপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল। এরপর ২০১৬ সালে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল তাদের।

জার্মানির মিউনিখের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় বেলজিয়ামের বিপক্ষে ম্যাচের ১৩ মিনিটেই জালের নাগাল পেয়েছিল ইতালি। কিন্তু অফসাইডের কারণে সেটি বাতিল হয়।

৩১ মিনিটের মাথায় লিড নেয় আজ্জুরিরা। এ সময় সেট পিচ থেকে বেলজিয়ামের দুইজন রক্ষণভাগের খেলোয়াড়কে বোকা বানিয়ে ডান পায়ের শটে গোল করেন নিকোলো বারেলা। ৪৪ মিনিটের মাথায় ব্যবধান দ্বিগুণ করেন লরেঞ্জে ইনসিগনি। এ সময় বারেলার কাছ থেকে বক্সের বাইরে বল পেয়ে যান ইনসিগনি। সেখান থেকেই ডান পায়ে শট নেন। তার নেওয়া শট গোলপোস্টের ডান কোণার ওপরের অংশ দিয়ে জালে জড়ায়।

অবশ্য বিরতিতে যাওয়ার আগে একটি গোল শোধ দেয় বেলজিয়াম। যোগ করা সময়ে (৪৫+২) ইতালির জিওভানি ডি লরেঞ্জো বক্সের মধ্যে ফাউল করেন বেলজিয়ামের জেরেমি ডোকুকে। রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। পেনাল্টি থেকে গোল করে ব্যবধান কমান রোমেলু লুকাকু। তাতে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় ২০০৬ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

বিরতির পর কিছুটা রক্ষণাত্মক পন্থা অবলম্বন করে খেলে ইতালি। সেই সুযোগে একের পর এক আক্রমণ শানায় বেলজিয়াম। তৈরি করে দারুণ কিছু সুযোগ। ৬১ মিনিটের মাথায় বামদিক থেকে কেভিন ডি ব্রুইনের বাড়িয়ে দেওয়া বল অল্পের জন্য জালে জড়াতে ব্যর্থ হন লুকাকু। গোললাইনের সামনে থেকে তার নেওয়া শট কোনেরকমে ফিরিয়ে দেন ইতালির লিওনার্দো স্পিনাজ্জোলা। ৭১ মিনিটের মাথায় আরও একটি গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন বেলজিয়ামের দ্রিস মার্টেন্স। কিন্তু সেটা থেকেও গোল করতে ব্যর্থ হন তিনি।

এরকম গোল মিসের মহড়ায় শেষ পর্যন্ত ২-১ ব্যবধানে হেরে বিদায় নেয় ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে থাকা বেলজিয়াম। ২০১৬ সালের পর ২০২০ সালেও ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিলো রেড ডেভিলসরা। আগামী শুক্রবার দিবাগত রাতে সেমিফাইনালে ওয়েম্বলিতে স্পেনের মুখোমুখি হবে ইতালি।

শেয়ার করুন: