শফি আহমদ চৌধুরী
শফি আহমদ চৌধুরী

বিএনপির শোকজের জবাবে শফি বললেন ‘জনগণের চাপে’ নির্বাচনে

সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক সাংসদ শফি আহমদ চৌধুরীকে কারণ দর্শানোর জন্য শোকজ করেছিল কেন্দ্রীয় কমিটি। গত মঙ্গলবার (১৫ জুন) রাতে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় শোকজ নোটিশে তাকে তিনদিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়। শুক্রবার (১৮ জুন) ওই নোটিশের জবাব লিখিতভাবে দিয়েছেন শফি আহমদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘জনগণের চাপে’ তিনি নির্বাচন করছেন।

শুক্রবার রাতে শফি আহমদ চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘দলের কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক স্বাক্ষরিত শোকজ নোটিশের জবাবে তিন পাতার একটি লিখিত জবাব দিয়েছি। নির্বাচন কেন করছি, রাজনৈতিক পরিস্থিতি- সবই বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছি। আমি বিএনপির রাজনীতির একজন হিসেবে এই জবাব দিয়েছি। এখন দল সিদ্ধান্ত নেবে। তবে আমি নির্বাচন করছি, আমার নির্বাচনী এলাকার জনগণের চাপ আছে নির্বাচন করতে। চিঠিতেও এ বিষয়টি বলেছি। এটাই আমার জীবনের শেষ নির্বাচন।’

গত ১১ মার্চ করোনা আক্রান্ত হয়ে সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা-ফেঞ্চুগঞ্জ-বালাগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগের সাংসদ মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী মারা যান। ১৫ মার্চ আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। মনোনয়নপত্র দাখিলের আগের দিন ১৪ জুন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সিলেট ফিরে এসে এ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়পত্র দাখিল করেন সাবেক এমপি শফি আহমদ চৌধুরী। মনোনয়নপত্র দাখিলের পর গত মঙ্গলবার রাতে বিএনপির কেন্দ্রীয় দফতর থেকে তাকে চিঠি দিয়ে তিনদিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়।

শফি আহমদ বিগত চারদলীয় জোট সরকার আমলে এ আসনে বিএনপির সাংসদ ছিলেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি বিএনপির প্রার্থী ছিলেন। ‘জনগণের চাপে’ দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করেছেন কি-না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘দেখুন, আমি দল করি ঠিক, কিন্তু নির্বাচন করছি এলাকাবাসীর স্বার্থে, জনগণের জন্য কিছু করার জন্য। এ আসনে ১৯৮৬ সালের সংসদ নির্বাচনে আমি কিন্তু স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রথম নির্বাচন করেছিলাম এবং জয়ী হয়েছিলাম। এরপর বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলাম। এখন আমার অবসরে থাকার সময়। বয়স ৮৩ বছর। এটাই আমার শেষ নির্বাচন।’

শফি আহমদ আরও বলেন, ‘এখন দেখছি, শুরুটা যেভাবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এমপি নর্বাচিত হয়েছিলাম, নির্বাচনের শেষ সময়টাও স্বতন্ত্র হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েই শেষ করতে চাই।’

তিনি বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত জীবনে চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। নির্বাচনী এলাকার মানুষের কল্যাণে কাজ কাজ করতে চাই। শেষ পর্যায়ে কিছু কাজ করার ইচ্ছা আছে। এই ইচ্ছাতেই প্রার্থী হয়েছি। আমি আমার রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই আছি। আমার সঙ্গে বিএনপি-আওয়ামী লীগের সবাই আছেন। এটা ভালোবাসা থেকে হয়েছে।’

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৪ জুন প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। প্রতীক বরাদ্দ হবে ২৫ জুন সকালে। দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ এই তিন উপজেলা নিয়ে গঠিত এ সংসদীয় আসনটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ৫২ হাজার। ভোটকেন্দ্র রয়েছে ১৪৯টি।

শেয়ার করুন: