কচু একধরনের কন্দ জাতীয় উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Colocasia esculenta। এটি Araceae এর গোত্রভুক্ত। কচু মানুষের চাষকৃত প্রাচীন উদ্ভিদগুলোর মধ্যে একটি। রাস্তার পাশে, বাড়ির আনাচে কানাচে, বিভিন্ন পতিত জমিতে অনাদরে-অবহেলায় অনেক সময় কচু জন্মাতে দেখা যায়। এই গাছ আদা বা হলুদ গাছের মতেই জন্মায়। কচু পাতা ১-২ ফুট লম্বা হয় এবং সবুজ হয়। কচুর বীজ সাদা রঙের হয়। কচুগাছের মূল ও পাতা ছাড়াও এর ডাল, কাণ্ড, ফুল, লতি সবই খাওয়া যায়।
বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব এলাকায় কম বেশি কচু দেখতে পাওয়া যায়। বনে জঙ্গলে যেসব কচু আপনাআপনি জন্মায় সেগুলোকে সাধারণত “বুনো কচু” বলা হয়। এ ধরনের কচুর অনেকগুলো জাত মানুষের খাবারের উপযোগী নয়। খাবার উপযোগী জাতগুলোর অন্যতম হচ্ছে মুখীকচু, পানিকচু, পঞ্চমুখী কচু, পাইদনাইল, ওলকচু, দুধকচু, মানকচু, শোলাকচু ইত্যাদি। সবজি হিসেবে ব্যবহার ছাড়াও সৌন্দর্যের কারণে কিছু কিছু প্রজাতির কচু টবে ও বাগানে চাষ করা হয়। এদের মধ্যে কতগুলোর রয়েছে বেশ বাহারী পাতা, আবার কতগুলোর রয়েছে অত্যন্ত সুন্দর ফুল।
রাসায়নিক উপাদান: কচুর মূল উপাদান হলো আয়রন (Fe),যা রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রেখে শরীরে অক্সিজেনের সরবরাহ ঠিক রাখে। প্রতি ১০০ গ্রাম কচুশাকে ৩৯ গ্রাম প্রোটিন, ৬.৮ গ্রাম শর্করা, ১৫ গ্রাম চর্বি, ২২৭ মিলি গ্রাম ক্যালশিয়াম, ১০ মিলি গ্রাম আয়রন ও ৫৬ মিলিগ্রাম খাদ্যশক্তি থাকে।
পুষ্টিগুণ: কচু শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ, বি, সি, ক্যালসিয়াম ও লৌহ রয়েছে। ভিটামিন এ জাতীয় খাদ্য রাতকানা প্রতিরোধ করে আর ভিটামিন সি শরীরের ক্ষত সারাতে সাহায্য করে। তাই শিশুদের ছোট বেলা থেকেই কচু শাক খাওয়ানো উচিত।
উপকারিতা: ১। কচুর বীজ গুড়ো করে খেলে মুখের দুর্গন্ধ থাকে না। ২। কচুু নিয়মিত খেলে রক্ত শূন্যতা দূর হয়। কারণ কচুতে আছে আয়রন। ৩। কচুর মূল পানি সহ বেটে সেবন করলে মূএজনিত সমস্যা দূর হয়। ৪। কচুতে ভিটামিন আছে যা খেলে গর্ভবতী মা ও শিশুর জন্য দারুন উপকারি। ৫। কচুতে অনেক আঁশ থাকে যা হজমে সহায়তা করে।
৬। প্রতিদিন কচু খেলে কোলন ক্যান্সার ও ব্রেষ্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে। ৭। কচু খেলে দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে। ৮। কচুশাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম ও ম্যাংগানিজ। যা দাঁত ও হাড় গঠনে সহায়তা করে। ৯। কচু শাক খেলে শরীরের পানির ঘাটতি পূরণ হয়। ১০। কচু শাক খেলে রাতকানা, ছানিসহ চোখের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান হয়।