Hurrem Sultan

জনকল্যাণে সুলতান সুলাইমানপত্নীর অমরকীর্তি

যুগে যুগে মুসলিমরা ওয়াকফ সম্পত্তির মাধ্যমে জনসেবায় সম্পৃক্ত ছিলেন। আব্বাসি খেলাফতের পর উসমানি খেলাফতকালে ওয়াকফের ধারাও আরো বিস্তৃতি লাভ করে। বিশ্বব্যাপী ওয়াকফ সম্পত্তির সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে দারিদ্রবিমোচন ও অসহায়দের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ মেলে।

হাসাকি সুলতান ইমারাত জেরুজালেমের বিখ্যাত কিচেন যেখান থেকে প্রতিদিন পাঁচ শয়ের বেশি মানুষকে বিনামূল্যে খাবার সরবরাহ করা হয়। ১৫৫২ সালে উসমানি সম্রাজ্যের সুলতান প্রথম সুলাইমানের প্রিয়তমা স্ত্রী হাসেকি হুররেম সুলতান সুবিশাল ওয়াকফ কমপ্লেক্সের অংশ হিসেবে তা প্রতিষ্ঠা করেন।

উসমানি সম্রাজ্যের উৎকর্ষতার যুগে সুলতান হাসাকি ওয়াকফ কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়। কমপ্লেক্সের মধ্যে গণ রান্নাঘর, মসজিদ, হাজিদের জন্য ৫৫ রুম বিশিষ্ট বিশ্রামাগার ও মুসাফিরদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। ​

সুলতানের অনুমোদনে বিশাল সেবা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ ও পরিচালনায় বিভিন্ন সম্পদ থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব ব্যবহার করা হয়। ফিলিস্তিন ও ত্রিপোলির অনেক স্থাপনাও এর মধ্যে অন্তর্ভূক্ত ছিল।

ওয়াকফকৃত বিশাল স্থাপনার আগে আদায় করা রাজস্বের অংশটুকুও ওয়াকফ সম্পত্তিতে যুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। বাইত দাজন, ইয়াজুর, কাফর আনা, লুড, আনাবা ও জিব নামের গ্রামগুলোর রাজস্ব হেসেকি সুলতান ইমরাত কমপ্লেক্সের জন্য দেওয়া হয়।

হাসেকি সুলতান ইমারাতের সেবামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে শুধুমাত্র ইসলামের দাতব্য কার্যক্রমের প্রয়োজনীয়তা পূরণ হয়নি। বরং সমাজে অটোম্যান সাম্রাজ্যের উদার অবস্থান ও সুদৃঢ় রাজনৈতিক অবস্থান তৈরিতে সহায়তা করে।

সুলতান হাসাকি ওয়াকফের মাধ্যমে সমাজসেবা পরিচালনায় একটি সুশৃঙ্খল পরিষদ গঠন করা হয়। প্রশাসক ও কর্মচারীদের নিয়োগ দেওয়া হয়। তাছাড়া সমাজের অসহায়-দরিদ্র শ্রেণিও নির্ধারণ করা হয়।

স্থানীয় অভিজাত পরিবারের সদস্যরা সাধারণত প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। মূলত তাঁরা বিশাল ওয়াকফ পরিচালনায় বিভিন্ন কর্মচারি নিয়োগ দিতেন। তাছাড়া ওয়াকফ কমপ্লেক্সের খাবার বিতরণের ক্রমবিন্যাস, খাবারের পরিমাণ ও সময়ও তাঁরা নির্ধারণ করতেন।

শেয়ার করুন: