ক্যাসিনোকাণ্ডে যুবলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের যুক্ত থাকার অভিযোগে ওমর ফারুক চৌধুরী সংগঠনের শীর্ষ পদ হারিয়েছেন। ৭১ বছর বয়সী ওমর ফারুক দীর্ঘ সাত বছর চেয়ারম্যান পদ আঁকড়ে ছিলেন যুবলীগের। নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ড ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের কারণে আওয়ামী লীগের বৃহৎ এই সহযোগী সংগঠনের নেতৃত্ব থেকে শেষ পর্যন্ত বিদায় নিতে হলো তাকে।
পদ হারিয়ে হতবিহ্বল যুবলীগের পদচ্যুত এই চেয়ারম্যান এখন আর রাজনীতি নিয়ে ভাবছেন না। ফলে এখন তাকে একাকী পথ চলতে হচ্ছে। ঢাকার বাসা আর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে সময় কাটছে তার। রাজনৈতিক ভবিষ্যতের চিন্তা বাদ দিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সময় দেয়ার পরিকল্পনা করছেন তিনি। জানা গেছে, স্ত্রী-সন্তানসহ নিজের ব্যাংক হিসাব জব্দের পর থেকে এক প্রকার ‘উপোস’ আছেন বলে জানান ওমর ফারুক। তবে চেয়ারম্যান থাকাকালে তার কর্মকাণ্ড নিয়ে বিব্রত যুবলীগের সাবেক-বর্তমান নেতারা।
শুদ্ধি অভিযান শুরুর পর বিভিন্ন বক্তব্য দিয়ে সমালোচিত হন যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চোধুরী। পরে সুর নরম করলেও প্রকাশ হতে থাকে কমিটি বাণিজ্যসহ তার নানা কর্মকাণ্ডের খবর। যুবলীগ চেয়ারম্যানের পদ হারানোর পর জব্দ করা হয় ওমর ফারুকের ব্যাংক হিসাব। বিদেশ যাত্রায় আসে নিষেধাজ্ঞা। এখন রাজনৈতিক সহকর্মীদের কাছে সমালোচিত তিনি।
আওয়ামী যুবলীগের বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশীদ বলেন, সত্যি কথা বলতে এসব নিয়ে আমরা অনেকটা বিব্রত। মানুষ যেই অবস্থানেই থাকুক না কেন ভুল করাটা কিন্তু তার ব্যক্তিগত সমস্যা। প্রতিষ্ঠান মানুষকে ভুল করতে শেখায় না। উনি যে ভুল করেছেন এখন সেটার প্রায়শ্চিত্তই করছেন। যুবলীগের সাবেক নেতা মির্জা আজম মনে করেন, দুহাজার বারোতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন ওমর ফারুক। যুবলীগে কালিমা লেপনের দায়ে পদচ্যুত চেয়ারম্যান ছাড়াও বিদায়ী কমিটির নেতাদের সমালোচনা করেন সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির নানক।
তিনি বলেন, কয়েকজন নেতার কর্মকান্ড বা অপকর্ম সমস্ত যুবলীগকেই কালিমাযুক্ত করেছে। যারা যুবলীগের কার্যকরী কমিটিতে ছিলেন তাদের এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা উচিত ছিল। এদিকে ওমর ফারুককে ছাড়াই হচ্ছে যুবলীগের সপ্তম কংগ্রেস। তার ভাষ্য, তার বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার তিনি।