কচুর গাঁটি

কচুর গাঁটির ১১টি উপকারিতা

বর্তমান পরিস্থিতির কারণে ক্রমশ বাইরের খাবারের পরিবর্তে ঘরে তৈরি খাবার ও শাকসবজি খাওয়ার দিকে নজর ফেরাচ্ছে সবাই। এ ক্ষেত্রে যেমন রান্নাঘরে আবার জায়গা করছে সবুজ শাকসবজি, তেমনই আবার ঠাকুরমার আমলের অনেক খাবারই গুরুত্ব পাচ্ছে। তেমনই একটি খাবার হল কচু। কচুর অনেক রকমফের আছে। তার মধ্যে একটি হল কচুর লতি, অর্থাৎ কচু শাক। তার উপকারিতা নিয়ে এর আগে আলোচনা করা হয়েছে। আজ জেনে নেওয়া যাক গাঁটি কচুর উপকারিতা।

এক আধটি নয়। এর উপকারিতাও অনেক। এটি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার। এতে রয়েছে বিভিন্ন রকমের ভিটামিন, যেমন এ, বি, সি ও ডি। তা ছাড়া প্রোটিন, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, পটাশিয়াম, জিংক, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, সেলেনিয়াম, বিটা ক্যারোটিন এবং ক্রিপ্টোজেন্থিন নামক খনিজ উপাদান থাকে। এতে গ্লুটেন থাকে না। এ ছাড়াও এতে ১৭ প্রকারের অ্যামাইনো অ্যাসিড এবং ওমেগা ৩ ও ওমেগা ৬ অয়েল থাকে।

১। হৃদযন্ত্রের জন্য: কচুর মুখি বা গাঁটি কচুতে ফ্যাট ও কোলেস্টেরলের পরিমাণ অনেক কম থাকে। ফলে ধমনীর ভেতরে খারাপ কোলেস্টেরলও জমে যাওয়া প্রতিরোধ করে। প্রতি দিন এক কাপ কচু খেলে ভিটামিন ডি-র দৈনিক চাহিদা ১৯% পূরণ করা যায়। কচু খেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেক কমে যায়। কার্ডিওভাস্কুলার রোগ ও অন্যান্য রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে।

২। হাইপারটেনশন: বর্তমান পরিস্থিতিতে হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ হওয়াটা খুব অস্বাভাবিক ব্যাপার নয়। সে ক্ষেত্রে কচু উপকারী। হাইপারটেনশনের রোগীদের কম চর্বি যুক্ত ও কম সোডিয়াম যুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। সে ক্ষেত্রে এক কাপ গাঁটি কচুতে ২০ গ্রাম সোডিয়াম ও ০.১ গ্রাম ফ্যাট থাকে। ফলে এটি হাইপারটেনশনের রোগীদের জন্য ভালো।

৩। কিডনি: যাদের কিডনির সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রেও উপকারী হল গাঁটি কচু।

৪। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের চাহিদা অনেকাংশেই পূরণ করে গাঁটি কচু। এতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে। এক কাপ গাঁটি কচু ভিটামিন সি-র দৈনিক চাহিদার ১১%-ই পূরণ করে। শুধু তা-ই নয়, শরীরের মধ্যেকার দূষিত পদার্থ দূর করতেও সহায়তা করে।

৫। রোগ প্রতিরোধ: করোনার মতো অতিমারির হাত থেকে শরীরকে বাঁচাতে হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করা যে জরুরি সে কথা এখন সকলেই ভালো মতো জানেন। সে ক্ষেত্রে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিওক্সিডেন্ট এই সমস্ত খাদ্যগুণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

৬। এনার্জি: গাঁটি কচু ক্লান্তি দূর করে। কর্মক্ষমতা বাড়ায়। এনার্জি ধরে রাখতে সহায়তা করে। এতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকে। এই কারণে অ্যাথলেটদের জন্য এটি খুবই ভালো।

৭। হজমে: এতে প্রচুর ফাইবার থাকে। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার পরিপাক প্রক্রিয়ার জন্য ভালো। তা ছাড়া ফাইবারের কারণে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে পারে।

৮। পাকস্থলীর জন্য: পাকস্থলী পরিষ্কার রাখার অন্যতম হাতিয়ার গাঁটি কচু। এর ফাইবার পরিপাক প্রক্রিয়ায় যেমন সাহায্য করে, তেমনই পাকস্থলীর বর্জ্য পদার্থ বের করে দিতেও সাহায্য করে। ফলে পেট পরিষ্কার থাকে ও শরীর ভেতর থেকে সুস্থ থাকে।

৯। ক্যানসারে: এর সমস্ত খাদ্য উপাদান ক্যানসার প্রতিরোধেও সহায়তা করে।

১০। মেদ ঝরাতে: মেদ ঝরাতে এর উপকারিতা কম নয়। কারণ গাঁটি কচুর ক্যালোরির পরিমাণ খুবই কম।

১১। তারুণ্য ধরে রাখতে: এর খাদ্য উপাদানগুলো ভালো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা রোগের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়। ফলে বয়স বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে ধীর গতি করে।

শেয়ার করুন: