কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষা শুরু, বাণিজ্য ঠেকাতে মাঠে ৬৪ টিম

শনিবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া । এ নিয়োগে যে কোনো অনিয়ম, তদবির ও আর্থিক লেনদেন ঠেকাতে দেশের ৬৪ জেলার জন্য ৬৪টি তদারকি টিম করেছে পুলিশ সদর দফতর।

পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর নির্দেশে এই টিম করা হয়েছে।

সারাদেশে এই নিয়োগ পরীক্ষা চলবে ৯ জুলাই পর্যন্ত।

পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া) মো. সোহেল রানা বলেন, ‘পুলিশের নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে তদারকির জন্য ৬৪টি টিম করা হয়েছে। প্রতিটি টিমের নেতৃত্ব দেবেন একজন পুলিশ সুপার (এসপি) সমমর্যাদার কর্মকর্তা।’

তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন বা অবৈধ পন্থা অবলম্বন করলে নিয়োগ বাতিলসহ তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, নিয়োগে তদবির-বাণিজ্য ঠেকাতে প্রতিটি রেঞ্জের ডিআইজি ও এসপিদের কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আইজিপি। পাশাপাশি তদারকি কমিটিকেও জড়িতদের তাৎক্ষণিক গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, তদারকি টিমকে বলা হয়েছে- যদি একজন এসপিও নিয়োগ বাণিজ্যে লিপ্ত থাকেন তাকে তৎক্ষণাৎ গ্রেফতার করা যাবে। এ ছাড়া কোনো প্রার্থী উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই রাজনৈতিক নেতাদের দিয়ে তদবির করালে তার প্রার্থিতা বাতিল করতে হবে।

নিয়োগপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে কোনোভাবেই সরকারি ফি ১০৩ টাকার বেশি না নেয়ার নির্দেশনা দেন আইজিপি। কেউ বেশি টাকা দাবি করলে রেঞ্জ ডিআইজি, এসপি কার্যালয় বা থানায় যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। আর তদবির করলেই প্রার্থিতা বাতিলসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।

বাংলাদেশ পুলিশে ‘ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি)’ পদে এবার মোট ৯ হাজার ৬৮০ জনকে নিয়োগ দেয়া হবে। এর মধ্যে ৬ হাজার ৮০০ জন পুরুষ ও ২ হাজার ৮৮০ জন নারী। আগ্রহীরা পুলিশ সদর দফতরেরনির্ধারিত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, নির্দিষ্ট তারিখে নিজ নিজ জেলা পুলিশ লাইনস ময়দানে বাছাইতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

নির্বাচন পদ্ধতি

ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট রেঞ্জের অধীনে সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ লাইনস ময়দানে পর্যায়ক্রমে ২২, ২৪, ২৬, ২৯ জুন ও ১, ৩ জুলাই সরাসরি শারীরিক মাপ ও শারীরিক পরীক্ষা (দৌড়, রোপিং, জাম্পিং ইত্যাদি) হবে। এ ধাপে যোগ্য প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিতদের ৪০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। এ পরীক্ষায় ৪৫ শতাংশ নম্বর পাওয়া প্রার্থীরা সর্বশেষ ধাপের পরীক্ষা (মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক, ২০ নম্বর) দিতে পারবেন।

(ক) প্রতিটি জেলায় নিয়োগযোগ্য প্রকৃত শূন্য পদে কোটার অনুকূলে লিখিত, মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রার্থীদের প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত করা হবে।

(খ) পুলিশ ভেরিফিকেশন সন্তোষজনক ও স্বাস্থ্য পরীক্ষায় যোগ্য বিবেচিত হলে প্রার্থীকে প্রশিক্ষণের জন্য প্রাথমিকভাবে মনোনীত করা হবে। উল্লেখ্য, পুলিশ ভেরিফিকেশন ফরমে কোন তথ্য গোপন অথবা মিথ্যা তথ্য প্রদান করা হলে চূড়ান্ত প্রশিক্ষণের জন্য মনোনয়ন প্রদান করা হবে না।

বেতন ও ভাতা

প্রশিক্ষণ সাফল্যের সঙ্গে সমাপ্তির পর ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেলের ১৭তম গ্রেড অনুযায়ী নিয়োগপ্রাপ্তদের বেতন দেয়া হবে সর্বসাকল্যে ৯ হাজার থেকে ২১ হাজার ৮০০ টাকা। এ ছাড়া ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা দেয়া হবে।

শেয়ার করুন: