তিল (Sesame)একবর্ষজীবি উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Sesamum indicum, গোত্র Pedaliaceae । এর বীজে তেলের পরিমান ৪৫-৫৫%তিল বছরে দুবার হয়। তিলের চাষ নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে হয়। বর্ষাকালে তিল বোনা হয় এবং শরৎকালে কাটা হয়। হেমন্তকালে যে তিল বোনা হয় সেটা কাটা হয় গ্রীষ্মের শুরুতে।
এই গাছ প্রায় ৫০ থেকে ১০০ সেমি (১.৬ থেকে ৩.৩ ফু) লম্বা, এবং এর উল্টো পাতা সাধারনত ৪ থেকে ১৪ সেমি (১.৬ থেকে ৫.৫ ইঞ্চি) পর্যন্ত লম্বা এবং মাঝথানে ব্যবধানসহ বিস্তৃতভাবে ভল্লাকার হয়ে থাকে ৫ সেমি (২ ইঞ্চি) পর্যন্ত। ফুল সাধারণ নীল রঙের হয় এবং প্রতিফুলে একটি করে ফল অর্থাৎ বীজ থাকে। প্রতিটি ফলে খাঁজকাটা বিভাগে অনেক বীজ থাকে।আমাদের দেশে সাধারণত চার রকম তিল দেখতে পাওয়া যায়। যেমন: তিল, কালো তিল, রক্তাভ তিল, মেটে রঙের তিল।
কালো তিল সাধারণত ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সাদা তিলে গন্ধ কম হয় এবং খেতেও ভালো লাগে। সেই কারণে খাদ্যে এবং প্রসাধনে এই সাদা তিলের তেল অনেকে ব্যবহার করেন। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত,মায়ানমার, আফ্রিকা, গন চীন,সুদান, নাইজার,সোমালিয়ায় এর চাষ করা হয়ে থাকে। তিলের তেল,বীজ, খইল, ফুল, এবং শুকনো গাছ ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
পুষ্টিগুন: তিলে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। যা শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এতে রয়েছে শর্করা ২৬.০৪ গ্রাম, চিনি ০.৪৮ গ্রাম, খাদ্য ফাইবার ১৬.৯ গ্রাম, প্রোটিন ১৬.৯৬ গ্রাম যা আমাদের শরীরকে ভালো লাগে।
উপকারিতা: ১। কালো তিল বেটে তার সাথে যবের ছাতু ও টকদই সামান্য একসাথে মিশিয়ে অল্প গরম করে ফোঁড়ায় দিন উপকার পাবেন। ২। তিলের ফুল বেটে তার সাথে ঘি এবং মধু মিশিয়ে টাকের ওপর প্রলেপ দিন। কিছুদিনের মধ্যেই টাকে চুল হতে থাকবে। ৩। তিলের খইল এনে পানির সাথে বেটে গায়ে মাখুন। প্রায় আধঘণ্টা গায়ে রেখে গোসল করে নিলে কয়েকদিন খাবার পর পিপাসা কম হবে।
৪। দেহের কোন স্হানে ক্ষত হয়ে পচতে শুরু করলে কালো তিল বেটে ক্ষতের ওপর প্রলেপ দিলে উপকার পাওয়া যায়৷ ৫। মাথার ব্যথা হলে কালো তিল দুধের সাথে বেটে মাথায় প্রলেপ লাগালে মাথা ব্যথা সেরে যায়। ৬। আমবাতের সমস্যা হলে তিল বেটে পানির সাথে সারা দেহে মাখুন।তারপর আধঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন দেখবেন আমবাত ভালো হয়ে গেছে। ৭। রক্ত আমাশয় হলে কালো তিল পানি দিয়ে বেটে আধাকাপ ছাগলের দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে রক্ত আমাশয় ভালো হয়। ৮। তিলের তেল লেবুর সাথে মিশিয়ে মুখে লাগালে ত্বক ভালো থাকে।