শিমুল গাছ

শিমুল গাছের উপকারীতা

শিমুল (Silk cotton) এর সারা দেহে কাঁটা, সুবিশাল বৃক্ষ। এর বৈজ্ঞানিক নামঃ Bombax ceiba Linn। আর ইউনানী নাম সেম্ভল এবং আয়ুর্বেদিক নাম শিমুল, শেম্ভল। এটি Bombacaceae পরিবারের অন্তভূক্ত। এই বৃক্ষের কান্ড গাএ নিঃসৃত আঠাকেই মোচরস বলে। শিমুল গাছ ৩০ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়, গাছের গায়ে কাঁটা থাকে। কাঁটার গোড়া মোটা এবং অগ্রভাগ সরু ও তীক্ষ্ণ।

পাতা বোঁটাযুক্ত, করতলাকার যৌগিক, ৫-৭ টি পত্রক নিয়ে গঠিত। শীতের শেষে পাতা ঝরে পড়ে। বসন্তে ফুল হয়, ফুল লালচে বর্ণের। পাঁচ প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট লম্বাকৃতি ফল হয়। ফলের ভিতরে তূলা ও বীজ হয়। বৈশাখ মাসে ফল পাকে এবং ফল ফেটে বীজ ও তুলা বের হয়ে আসে। বীজের রঙ কালো।

শিমুল তুলা লেপ, তোষক ইত্যাদি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।এর স্ত্রীকেশর পুংকেশর অপেক্ষা লম্বায় বড় হয়। বাংলাদেশের সর্বত্রই শিমুল গাছ জন্মে। এছাড়াও ভারত, চীন, মালোয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ায় এ গাছ প্রচুর জন্মে। শিমুল গাছের মূল, গাছের ছাল, কষ, ফুল ও বীজ ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

রাসায়নিক উপাদান: শিমুলে রয়েছে ছালে ট্যানিন, স্টেরল, ফিনল জাতীয় পদার্থ, লুপিয়ল, ন্যাফতোকুইনোন, ল্যাকটোন ও গ্লাইকোসাইড বিদ্যমান। বিচিতে টকোফেরল ও টার্পিন থাকে। যা বিভিন্ন রোগ সারাতে সহায়তা করে।

উপকারিতা: ১। শিমুলের ছাল বেটে ব্রনের ওপর প্রলেপ দিলে ব্রেন ভালো হয়। ২। শিমুলের ফুল বেটে ঘিয়ে ভেজে লবনের সঙ্গে খেলে প্রদরে উপকার হয়। ৩। কাশি হলে শিমুলের মূল বেটে লেবুর রসের সাথে মিশিয়ে খেলে কাশি ভালো হয়। ৪। মেছতা হলে শিমুলের কাঁটা দুধে বেটে মুখে মাখলে মেছতা ভালো হয়। ৫। কুকুর কামড়ালে ৭ টি শিমুলবীজ ৭ দিন কলার ভিতর দিয়ে রোজ সকালে খেলে জলাতঙ্কের আশঙ্কা থাকে না। ৬। শিমুল তুলা নিয়ে তাতে শিমুল গাছের ছাল অর্থাৎ মোচরস দিয়ে ভিজিয়ে পোড়া ঘায়ে দিন, ঘা সেরে যাবে। ৭। শিমুলের ছাল ‍চুর্ণ করে ছাগলের দুধের সঙ্গে মিশিয়ে দু’বেলা খাওয়ালে উপকার হয়। ৮। ফোঁড়া হলে শিমুল গাছের ছাল ধুয়ে বেটে, তার ওপর প্রলেপ দিলে উপকার হয়।

শেয়ার করুন: