সৌদিতে ‘হালাল নাইটক্লাব’ খোলার ঘোষণা নিয়ে বিতর্ক

সৌদি আরবের জেদ্দায় একটি নাইটক্লাব খোলা নিয়ে দেশটিতে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি জেদ্দায় বিখ্যাত ব্র্যান্ড নাইটক্লাব হোয়াইটের কার্যক্রম শুরুর ঘোষণা দেয়া হলে বিষয়টি নিয়ে সৌদি নাগরিকদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ও বিতর্ক সৃষ্টি হয়।

পবিত্র নগরী মক্কা শহরের পাশে এমন কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে দেশটির অধিকাংশ নাগরিকই অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তবে নাগরিকদের মধ্যে সমালোচনা ও বিতর্ক থাকলেও দেশটির সরকার এসব ব্যাপারে কোনো কিছু স্পষ্ট করেনি।

ধর্মীয়ভাবে রক্ষণশীল দেশ হিসেবে পরিচিত সৌদি আরবে এতদিন সিনেমা, নারীদের গাড়ি চালানোসহ বিভিন্ন বিষয় ধর্মীয় কারণে নিষিদ্ধ ছিল। ভিশন-২০৩০ অনুযায়ী, দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ‘কট্টরপন্থা’ উপড়ে ফেলে ‘মধ্যপন্থার’ ইসলাম ধর্মে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন।

মধ্যপন্থী ইসলামের প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে তিনি আধুনিক সৌদি আরব গড়ার পরিকল্পনা করেছেন বলে জানিয়েছেন। সে হিসাবে ২০১৮ সালের জুন থেকে সৌদি আরবে নারীদের গাড়ি চালাতে দিচ্ছে সৌদি আরব। দীর্ঘ ৩৫ বছরের পর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে চালু করা হয়েছে সিনেমা হলও।

সেই ধারাবাহিকতায় দুবাই ও বৈরুতের বিখ্যাত ব্র্যান্ড নাইটক্লাব হোয়াইট সৌদি আরবের জেদ্দায় হালাল নাইটক্লাব চালুর ঘোষণা দেয়।

এ হালাল নাইটক্লাবে বিশ্বের খ্যাতনামা মিউজিক গ্রুপের পরিবেশনা ও সুস্বাদু খাবারের ব্যবস্থা থাকলেও মদ বা অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় পাওয়া যাবে না। তবে ইলেক্ট্রনিক ড্যান্স মিউজিক, কমার্শিয়াল মিউজিক, আরএনবি এবং হিপহপ মিউজিক উপভোগ করা যাবে এখানে।

নারী-পুরুষ সবার জন্য উন্মুক্ত রেখে এই নাইটক্লাবের লাউঞ্জের একটি অংশে ড্যান্স ফ্লোর থাকবে। যাতে ড্যান্সে আগ্রহীরা অংশ নেবেন। সৌদিতে বেশ কয়েকজন উদ্যোক্তা গত কয়েক মাসে এ ধরনের বিভিন্ন পার্টির আয়োজন করে তেমন সফল হননি। নাগরিকদের পক্ষ থেকে সাড়া না পাওয়ায় অবশেষে তারা ক্যাফেগুলো বন্ধ করে দিয়েছেন।

হোয়াইটের চালু করা নতুন ক্লাবটি রাত ১০টা থেকে ভোর ৩টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে এতে ১৮ বছরের কম বয়সীদের প্রবেশের অনুমতি থাকবে না। নাইটক্লাবটিতে প্রবেশমূল্য রাখা হয়েছে ৫০০ থেকে ১০০০ রিয়াল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওই নাইটক্লাবের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যাতে হোয়াইটের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তিকে কথা বলতে শোনা যায়। বিনোদনের জন্য ডিস্কোকে একটি সম্মানিত কাজ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।

তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়াই বেশি পাওয়া যাচ্ছে। নাইটক্লাব খোলার বিষয়ে সৌদি সরকারের নীরবতাকে কর্তৃপক্ষের আবিষ্কৃত ‘নতুন ধর্ম’ হিসেবে আখ্যায়িত করছেন সমালোচকরা।

শেয়ার করুন: