অশ্বত্থ (sacred fig) এটি বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Ficus Religiosa। অশ্বত্থ গাছ বট গাছের মত। তবে পাতার বৈসাদৃশ্য রয়েছে। এর পাতার অগ্রভাগ ক্রমশ সূক্ষ্ম হয়ে বর্ধিত হয়। এটিকে বোধিবৃক্ষও বলা হয়ে থাকে। অশ্বত্থ এমন এক গাছ যা ২৪ ঘণ্টাই অক্সিজেন দেয়।
অশ্বত্থ গাছ ৩০ মিটার লম্বা হতে পারে। এর কান্ডের বেড় ৩ মিটার পর্যন্ত হতে পারে। এর ফুলগুলো ফলের ভেতরে লুকায়িত থাকে।পাতা ১০-১৭ সেমি লম্বা এবং ৮-১২ সেমি চওড়া। শীতকালে এর পাতা ঝরে যায়, বসন্তে তামাটে রঙের কচি পাতা গজায়। এর ফল ডুমুরের মতই তবে পাকা ফল বেগুনি রঙের, কাচা ফল সবুজ, ফলের আকার ১-১.৫ সেমি। অশ্বত্থ গাছ দিয়ে বনসাই গাছ বানানো যায়।
অশ্বত্থ ভারতীয় উপমহাদেশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া যেমন বাংলাদেশ, ভুটান, চীন (ইউনান প্রদেশ), ভারত (আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ বাদে), লাওস, নেপাল, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম অঞ্চলের স্থানীয় বৃক্ষ। অশ্বত্থ একটি দীর্ঘজীবী বৃক্ষ। এর পত্র,পত্রমুকুল, ফল ও ত্বক সবই ঔষধদার্থে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
উপকারিতা: ১। বাত রক্তে: অশ্বত্থ গাছের ছালের ক্বাথ সামান্য মধু মিশিয়ে খেলে বাত রক্তে উপকার হয়। ২। পোড়া ঘায়ে এবং ফোঁড়ায়: অশ্বত্থ ছাল মিহি গুঁড়ো করে সেই চূর্ণ ঘায়ের ওপর ছাড়িয়ে দিলে পোড়া ঘা দ্রুত ভালো হয়। অশ্বত্থ পাতা দিয়ে ফোঁড়া ঢেকে রাখলে খুব দ্রুত ভালো হয়। ৩। কানে ব্যথা হলে : অশ্বত্থ গাছের পাতা ঠোঙা তৈরি করে সরষের তেল ভিজিয়ে কানের ফোটায় দিলে কানের ব্যথা ভালো হয়ে যায়। ৪। মুখের ক্ষতে: মুখে ঘা বা ক্ষত হলে অশ্বত্থ ছালের উপর যে চটা পড়ে তা চূর্ণ করে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে প্রলেপ দিলে উপকার হয়। ৫। স্মরণশক্তি বৃদ্ধি: অশ্বত্থের পাকা ফল খেলে স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়। ৬। হৃৎপিণ্ডের জন্য: অশ্বত্থের পাতা একটি পাতিলে নিয়ে সেদ্ধ করে সেবন করলে হৃৎপিণ্ডের উপকার পাওয়া যায়। ৭। কৃমি হলে: অশ্বথের পাতা চূর্ণ করে এবং গুড় সমান মাত্রায় মিশিয়ে মৌরির সঙ্গে দিনে ২ বার সেবন করলে পেটের কৃমি মরে যায়। ৮। শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি: অশ্বত্থ এর পাতা সেদ্ধ করে দিনে দুবার সেবন করলে শ্বাসকষ্ট বা হাঁপানি ভালো হয়।