নিসিন্দা (Negundo, Nishinda Tree) এটি একটি গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Vitex negundo Linn। ইউনানী নাম সাম্ভালু এবং আয়ুর্বেদিক নাম নিসিন্দা, সিন্দুবার। এই গাছ বর্ষাকালে রোপন করা হয়। এবং বীজ ও কলম থেকে গাছ উৎপন্ন হয়। এই উদ্ভিদ সাধারণত ৫-৬ ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়। এদের পাতার রং উপরে সবুজ,মাঝে সাদা।ফুল নীল বা নীলাভ বেগুণি রংয়ের অথবা নীলাভ সাদা।
বীজ অনেকটা গোলমিচের মত, তবে আকারে কিছুটা ক্ষুদ্রাকৃতির। বীজের রং কাল অথবা সাদা।পাতার একপ্রকার গন্ধ থাকে। দুরকম নিসিন্দা গাছ দেখা যায়। এক শ্রেনীর ফুল নীল এবং আর শ্রেনীর ফুল সাদা। বাংলাদেশের প্রায় সব এলাকায়, বিশেষ করে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে পাওয়া যায়। এই গাছটির ফল, মূল, পাতা, গাছের ও মূলের ছাল (ত্বক্)ও (ক্ষীর )দুধের মত আঠা বা নির্যাস)- সব অংশই ঔষধার্থ ব্যবহার করা হয়ে থাকে ।
গুণাগুণ: বাতব্যথা নিবারক, সংকোচক, সর্দিজ্বর ও শ্লেষ্মা নিবারক, কৃমিনশক, বলকারক, মূত্রবর্ধক। তাছাড়া রিউমাটয়েড আর্থারাইটিস, রিউম্যাটিক ফিভার, মূত্রথলির ব্যথা ও গেঁটেবাতে উপকারী।
উপকারিতা: ১। ঘিয়ের সঙ্গে দু’টি নিসিন্দা পাতা ভেজে খেলে স্মৃতি শক্তি ভালো থাকে। ২। শিশু বা বৃদ্ধদের তরল পায়খানা হলে মলদ্বারে ক্ষতের উপদ্রব হলে নিসিন্দা পাতার রস ২/৩দিন লাগালেই সেরে যায়। ৩। নিসিন্দা পাতার রস তিল তৈলের সঙ্গে মিশিয়ে সেই তেলে ফোঁড়া দিলে ফোঁড়া দ্রুত ফেটে ভালো হয়ে যায়। ৪। নিসিন্দা পাতার রস তেলের মতো মাথায় ব্যবহার করলে মাথার খুসকি ভালো হয়। এবং অকালের টাকও পড়া থেকে বাঁচায়। ৫। নিসিন্দার চুর্ণ গরম পানিতে দিয়ে খেলে ব্যথা কমে যায়, কিছুদিন খেলে আর বায়ুর শুল থাকে না।
৬। নিসিন্দার তৈল ব্যবহার করলে চুলকানি সেরে যায়। ৭। কোন জায়গা ফুলে উঠলে নিসিন্দা পাতা সামান্য ভেজে সেই ফোলা জায়গায় ন্যাকড়া দিয়ে বেঁধে রাখলে ফোলা কমে যায়। ৮। কোন জায়গায় আঘাত লাগলে বা থেঁতলে গেলে নিসিন্দা পাতা বেটে সেখানে লাগালে খুব ভালো ফল পাওয়া যায়। ৯। নিসিন্দা পাতা ঘিয়ে ঘিয়ে ভেজে খেলে রক্তপিও রোগ সারে। ১০। সাপে কামড়ালে শ্বেত নিসিন্দার মূলের ছাল বেটে ঠান্ডা পানির সঙ্গে খেলে বিষের ক্রিয়া নষ্ট হয়। ১১। কৃমি হলে নিসিন্দা পাতার রস মধু সহ খেলে কৃমি ভালো হয়। ১২। রজঃস্রাবে নিসিন্দা পাতার বীজ বেটে পানির সঙ্গে মিশিয়ে খেলে রজঃস্রাবে হ্রাস পায়। ১৩। নিসিন্দা গাছের ছালের ক্বাথ চায়ের মত খেলে হাঁপানি কমে যায়।