চন্দন

চন্দনের অসাধারণ কিছু উপকারিতা

চন্দন (sandal) ছোট থেকে মাঝরি ধরণের চিরহরিৎ বৃক্ষ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Santalum album Linn। এটি Santalaceae পরিবারের অন্তভূক্ত। চন্দন একটি সুগন্ধি গাছের নাম। চন্দন বিভিন্ন প্রকার আছে। তার মধ্যে চার প্রকার চন্দনের কথা জানা যায়। যেমন: রক্তচন্দন, পীতচন্দন, শ্বেচন্দন, এবং কুচন্দন। এই প্রজাতির উদ্ভিদের উচ্চতা সাধারণত ১৫ থেকে ১৮ মিটার পর্যন্ত হয় এবং প্রস্থ হতে পারে ২ থেকে ৪ মিটার পর্যন্ত। এরা ১০০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে।

এটি সবচাইতে বেশি পাওয়া যায় ভারতে, এছাড়াও দক্ষিণ এশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়াসহ অন্যান্য দেশেও এই সুগন্ধি গাছ পাওয়া যায়। যেখানে বছরে ৬০০ থেকে ১৬০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হয় এবং তাপমাত্রার পরিসর ২০-৪৫০ সেসসিয়াস থাকে, সেখানে এই বৃক্ষ জন্মাতে পারে।এটি বিভিন্ন মৃত্তিকা, যেমন বেলে, ক্লে, লাল, ল্যাটেরাইট দোঁআশ এবং কালো মৃত্তিকায় জন্মায়। ভারতে এ উদ্ভিদের ফুল আসে মার্চ থেকে এপ্রিল এবং উদ্ভিদে ফুল আসে মার্চ থেকে এপ্রিল এবং শীতকালে ফল পরিপক্ক হয়।

পাকা ফল পাখিদের প্রিয় খাদ্য এবং পাখির মাধ্যমে বীজের বিস্তার ঘটে। টাটকা বীজ প্রায় দু’মাস সুপ্তাবস্থায় থাকে এবং তারপর ৮-১৪ দিনের মধ্যে এদের অঙ্কুরোধগম হয়। সাকারের মাধ্যমেও এ উদ্ভিদের বংশবিস্তার হয়। একাধারে সুগন্ধ ও অন্যদিকে ঔষধি গুণের জন্যই চন্দনের এত কদর ও সুখ্যাতি। গাছের অসার অংশ সাদা এবং গন্ধহীন।চন্দন বৃক্ষের সবচেয়ে মূল্যবান অংশ হল সুগন্ধযুক্ত।

রাসায়নিক উপাদান: চন্দনের আছে হাজারো ঔষুধি গুনাগুন কারন এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান। যা আপনার মুখের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। এর কাঠের রাসায়নিক উপাদানের মধ্যে আছে ৩-৬% উদ্বায়ী তেল (প্রধানত সেসকুইার্পিন, এ্যালকোহল, আলফা ও বিটা স্যান্টালোল), রেজিন এবং ট্যানিন রয়েছে ।

উপকারিতা: ১। শ্বেত চন্দন ঘষা, চিনি ও মধুসহ চালধোয়া পানির সাথে মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। ২। চন্দন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান সমূহের সমন্বয়ে গঠিত যা আপনার মুখের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়। এর বিরোধী প্রদাহজনক এজেন্ট আছে, যা বলি রেখা দূর করতে সাহায্য করে। ৩। চন্দন ঘসা বা চূর্ণ দিয়ে নাভিদেশ পূরন করলে নাভির ক্ষত ভালো হয়। ৪। অঙ্গে বেদনা ও দাহ থাকলে চন্দনের প্রলেপ হিতকর।

৫। শসার রস, চন্দনের গুঁড়ো, দই ও গোলাপ জল একসাথে মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে রোদে পোড়া ত্বকে লাগালে রোদে পোড়া দাগ দূর হয়। ৬। গোলাপজলে চন্দন ঘসে তার মধ্যে কর্পূর মিশিয়ে মাথায় প্রলেপ দিলে মাথা ব্যথা ভালো হয়। ৭। মেহ রোগের যন্ত্রণা হলে চন্দন ঘষে শরবতের সাথে পান করলে উপকার পাওয়া যায়।

৮। মসৃণ ও উজ্জ্বল ত্বকের জন্য হলুদ বাটা ও চন্দনের গুঁড়ো মিশিয়ে লাগান। ৯। আপনার যদি ডার্ক সার্কেল থাকে তাহলে অল্প পরিমাণ চন্দনের গুরার সাথে গোলাপ জল মিশিয়ে চোখের চারপাশে লাগান। সারারাত রেখে সকালে ধুয়ে ফেলুন। এক সপ্তাহের মধ্যে চোখের চারপাশের দাগ ভালো হয়ে যাবে। ১০। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে চন্দন কাঠের পেস্ট নিয়ে, আধা কাপ দুধের সাথে ভালভাবে মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়। এছাড়াও মুখের ত্বক উজ্জ্বল করতে,কালো দাগ দূর করতে চন্দনের তুলনা হয় না।

শেয়ার করুন: