এই ১০টি লক্ষণ বলে দিবে আপনার জীবন অধঃপতনের দিকে যাচ্ছে!

মাঝেমধ্যে ঘুমাতে যাবার আগে আপনি কি কখনো চিন্তা করেছেন, জীবন যেভাবে চলছে ওভাবেই কি আপনি ভালো আছেন? বাড়ি- কাজ- বাড়ি, কোন বন্ধু বান্ধদের সাথে দেখা করা, ছুটির দিনে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হওয়া এবং মাঝেমধ্যে টিভি দেখা, আপনি কি এভাবে জীবনধারণ করতে স্বাছন্দ্যবোধ করছেন?

আপনার মনে হতে পারে, আপনি ভালই আছেন, কিন্তু গভীরভাবে চিন্তা করলে বুঝতে পারবেন আপনি আসলেই অনেকক্ষেত্রে সুখী নন। একঘেঁয়ে এই জীবন থেকে আপনি মুক্তি চান। আজকে আমরা আপনাদের জানাবো এমন দশটি লক্ষণ যেগুলো আপনাকে ধীরে ধীরে অধঃপতনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক!

১. কোন কিছুই আপনাকে আগ্রহী করে তুলে না: আপনি মনে করেন যে, পৃথিবীতে এমন কোন বিষয় নেই যা আপনাকে অবাক করে দিতে পারে এবং আপনি কোনও সংবাদ শোনার পর ভ্রূ কুঁচকিয়ে বিস্ময়ের প্রতিক্রিয়া জানান।(একটি রকেট মঙ্গলে পাঠানো হয়েছে?) একজন ব্যক্তির বয়স শুধুমাত্র তার পাসপোর্টের বা ন্যাশনাল আইডি কার্ডের সংখ্যা দ্বারা নির্ধারিত হয় না, কিন্তু নিজের মধ্যে নতুন কিছু খুঁজতে, শিখতে এবং বিকাশের ক্ষমতা দ্বারা নির্ধারণ করা হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আপনার জীবনে কতগুলো ঘটনা আপনাকে উদ্যমী করেছে?

২. আপনার নিজের বা বাড়ির ব্যাপারে যত্নশীল নন: আপনি আপনার চেহারার যত্ন নিতে পারেন না এবং গত মাসে শেষ বারের মতো বাড়ি পরিষ্কার করেছিলেন- তাহলে এটি আপনার ব্যক্তিগত সংকটের একটি স্পষ্ট লক্ষণ। আপনার শরীর এবং আপনার চারপাশের পরিবেশের উদাসীনতা শুধুমাত্র বলে যে, আপনার জীবন ভালভাবে যাচ্ছে না এবং আপনি সেটিই মেনে নিয়ে সব কিছু ছেড়ে দিয়েছেন।

অনেকেই বলে থাকে, আপনি যদি জীবনে পরিবর্তন চান তাহলে সেটা আপনার ঘর থেকে শুরু করা উচিৎ। এর পিছনে একটি কারণ আছে। পরিষ্কার থাকা জীবনের জন্য অত্যন্ত জরুরীঃ এটা আপনাকে দুশ্চিন্তা থেকে দূরে রাখবে এবং আপনার মাথা থেকে জগাখিচুড়ি চিন্তা দূর করতে সহায়তা করবে।

৩. আপনি আপনার জবকে অপছন্দ করেন: কার্যদিবস মাত্র শুরু হয়েছে এবং আপনি ইতোমধ্যেই সময় গণনা করছেন এবং কাজ শেষ করার জন্য অপেক্ষা করছেন। আপনার চাকুরীর প্রতি ঘৃণা জন্মানো কিছু পরিবর্তনের কারণ হতে পারে। আপনি সম্ভবত আপনার বিরক্তিকর ভূমিকা, বিরাগপূর্ণ সহকর্মীদের পছন্দ করেন না বা শহরের ব্যস্ততম রাস্তায় এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাতায়াত করতে পছন্দ করেন না। আপনি যদি আপনার অপছন্দের কারণ বুঝতে পারেন তাহলে পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসা আপনার পক্ষে সহজ হবে।

৪. আপনি যোগাযোগ করতে অস্বীকার করেন: প্রত্যেকেরই ব্যক্তিগত স্থানের প্রয়োজন হয়, কিন্তু আপনি যদি একেবারে কাউকে দেখতে বা শুনতে চান না, বন্ধু এবং আত্মীয়দের এড়িয়ে চলেন এবং সামাজিক নেটওয়ার্কে ব্রাউজ করার জন্য ‘অজ্ঞাত’ মোডে যান, তাহলে বুঝতে হবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।

৫. সব কিছুতেই আপনি রেগে যান এবং বিরক্ত হন: আপনি সবকিছুতে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছেন বা রেগে যাচ্ছেন, তার মানে এই আপনি সহজেই আপনার মেজাজ হারিয়ে ফেলেছেন এবং কান্না করা থেকে শুরু করে প্রচন্ড ক্রোধে কিছু করছেন বা ভাঙ্গছেন।

৬. আপনার মধ্যে অনেকগুলো খারাপ অভ্যাস থাকা: সমস্যা সমাধান করার অন্য উপায় হিসেবে আপনি হয়তো মদ, সিগারেট, অতিভোজন বা মধ্যরাতে ব্রাউজিং করার মতো খারাপ অভ্যাসের সাহায্য নিচ্ছেন। কিন্তু এগুলো আপনার জীবনে সমস্যা সমাধানে কাজে দিবে না, শুধু চেহারায় পরিবর্তন আনবে।

৭. আপনি অতীত নিয়ে পড়ে থাকেন বা ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক সময় ধরে স্বপ্ন দেখতে থাকেন: আপনি মনে করেন যে, পুরানো স্মৃতির মধ্যে থাকা ভাল এবং পুরানো স্মৃতিগুলো মনে করতে থাকেন। বা বিপরীতে, আপনি মনে করেন ‘আগামীকাল ভাল হবে’ এবং আপনাকে একটু অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু এই ‘একটু’ সপ্তাহ, মাস এবং এমনকি বছর কেটে যাওয়ার পরও আর শেষ হয় না।

বছর ধরে চলতে থাকে। মাঝেমধ্যে দিবাস্বপ্নে হারিয়ে যেতে কোন সমস্যা নেই, কিন্তু আপনি যখন ক্রমাগত “ভাল সময়ের” উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করার চেষ্টা করেন, তা অতীত বা ভবিষ্যৎ যাই হোক, আপনি অবচেতনভাবে বর্তমান থেকে পালানোর চেষ্টা করছেন।

৮. আপনার কোনখানেই ‘চার্জ’ নেই: প্রত্যেকেরই খারাপ মেজাজের সাথে ডিল করার জন্য তাদের নিজস্ব প্রমাণিত উপায় রয়েছে। অনেকেই ব্যাগে ঘুসি মারে, অনেকে পার্কে বেড়াতে যায় এবং অনেকে আবার তাদের বেড়ে উঠা শহরে ভ্রমণ করে আধ্যাত্মিক শক্তি পুনরুদ্ধার করে।

৯. আপনি আপনার নিজের ফোনে বন্দী হয়েছেন: পিটসবার্গ মেডিকেল স্কুলে ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন যে সামাজিক নেটওয়ার্কগুলিতে যারা এক ঘন্টার বেশি সময় ব্যয় করে তারা হতাশায় ভুগছে।

সোশ্যাল মিডিয়ার নিউজ ফিডে মানুষের সাফল্যের খবরগুলো অনেকের মধ্যে ঈর্ষার অনুভূতি জাগ্রত করে। কারণ তার নিজের চেয়ে অন্য ব্যক্তিদের জীবন আরো উজ্জ্বল এবং তারা সফল জীবন যাপন করছে। এজন্য অফলাইনে থাকার চেষ্টা করুন এবং এটি আপনাকে সুখি রাখবে।

১০. আপনি আপনার জীবনকে ‘নির্ধারিত’ হিসেবে বিবেচনা করেন এবং সেভাবেই পুনরাবৃত্তি করেনঃ ‘শনিবার শুরু হচ্ছে’ শনিবার, সেপ্টেম্বরের ১ তারিখ বা নববর্ষ থেকে ‘নতুন জীবন’ শুরু হতে পারে না। একটা কথা মনে রাখুনঃ ‘আগামীকাল কখনোই আজ না!

আপনি কি সকালে ঘুম থেকে উঠে বলতে পারবেনঃ ‘অবশেষে আগামীকাল চলে এসছে?’ আপনি যদি কোন কিছু পরিবর্তন করতে চান, তাহলে কোন একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের দিন বা একটি ভাল তারিখের জন্য অপেক্ষা করবেন না। যা পরিবর্তন করতে চান তা আজকের মধ্যে এখনি শুরু করে দিন।

শেয়ার করুন: