ইতিহাস সৃষ্টি করে স্বপ্নের জয় পেল টাইগাররা

বৃষ্টির বাগড়ায় পণ্ড হতে চলেছিল ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল। সেটা হলে অবশ্য ভালোই হতো। গ্রুপপর্বে ভালো করায় শিরোপা জিতে জেতো বাংলাদেশ। শিরোপা বাংলাদেশই জিতেছে। তবে বৃষ্টির কঠিন রসিকতাকে মোকাবেলা করে, বীরদর্পে। ২৪ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে বৃষ্টি আইনের জটিল হিসাব চুকিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে টাইগাররা।

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৫ উইকেটে হারিয়ে নিজেদের ইতিহাসের প্রথম ট্রফি (দ্বিপাক্ষিক সিরিজ বাদে) জিতল মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। বৃষ্টিতে দৈর্ঘ্য কমে আসা ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৪ ওভারে ১ উইকেটে ১৫২ রান করে। যার প্রেক্ষিতে ডি/এল মেথডের জটিল হিসেবে বাংলাদেশের জন্য লক্ষ্য স্থির হয় ২০১ রান। জবাবে ২২.৫ ওভারে ৫ উইকেটে ২১৩ রান করে জয় তুলে নেয় টাইগাররা।

ওয়ানডে ও টি-টুয়েন্টি মিলিয়ে এর আগের ছয়টি ফাইনালে শিরোপা শূন্য ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু নিজেদের সপ্তম ফাইনালকে ‘লাকি ম্যাচ’ বানিয়ে বাংলাদেশকে প্রথম শিরোপা জয়ের আনন্দ উপহার দিল টাইগারা। বিশ্বকাপের আগে এমন অর্জন নিঃসন্দেহে বাড়তি প্রেরণা যোগাবে মাশরাফি বাহিনীকে।

সৌম্য সরকারের ব্যাটে জয়ের স্বপ্নটা চওড়া হচ্ছিল খুব। ২৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি করে সেটা আরও বাড়িয়ে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ৪১ বলে ৬৬ রান করার পর সৌম্য বিদায় নিতেই জয়ের কাজটা ধীরে ধীরে কঠিন হতে শুরু করে।

মুশফিকুর রহীম, মোহাম্মদ মিঠুনরাও চেষ্টা করেন রানের চাকা সমানতালে এগিয়ে নিতে। কিন্তু নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়তে থাকায় সেটা আরও কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

দলীয় ১০৯ রানের মাথায় রেমন রেইফারের স্পিন ঘূর্ণিতে বিভ্রান্ত হয়ে ছক্কা মারতে যান সৌম্য। লং অনে ধরা পড়েন সেলডন কটরেলের হাতে। মুশফিকুর রহীম করেন ২২ বলে ৩৬ রান। মিঠুনের ব্যাট থেকে আসে১৪ বলে ১৭ রান।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বাংলাদেশের রান ২০.৫ ওভারে৫ উইকেট হারিয়ে ১৮৩। ১৫ রান নিয়ে ব্যাট করছেন মাহমুদউল্লাহ। সঙ্গে ২৬ রান নিয়ে আছেন মোসাদ্দেক সৈকত।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ করলো ২৪ ওভরে ১৫২ রান। জিততে হলে বাংলাদেশকে করতে হবে ২১০ রান। ক্রিকেটের অদ্ভূত বৃষ্টি আইন এটা। ডাকওয়ার্থ আর লুইস তৈরি করেছেন এই গাণিতিক হিসাব-নিকাশ।

জয়ের জন্য ২১০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনাই করেছিল বাংলাদেশ। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং সৌম্য সরকারের উড়ন্ত সূচনার পর ৫.৩ ওভারেই তারা গড়ে ফেলে ৫৯ রানের জুটি। ১৩ বলে ১৮ রান করে আউট হয়ে যান তামিম ইকবাল।

তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামেন সাব্বির রহমান। কিন্তু যে কারণে তাকে আগে নামানো হলো, সেটা মোটেও কাজে লাগলো না। শ্যানন গ্যাব্রিয়েলের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে কোনো রান না করেই ফিরে গেলেন সাব্বির রহমান। সাকিব আল হাসান না থাকার অভাবটা ভালোই টের পাওয়া গেলো। চার নম্বরে ব্যাট করতে নামেন মুশফিকুর রহীম।

এর আগে বৃষ্টির কারণে লম্বা সময় ধরে ম্যাচ বন্ধ থাকার পর আবারও খেলা শুরু হয়েছে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১০টায়। কার্টেল ওভারে ম্যাচটি নির্ধারণ করা হয় ২৪ ওভারের। সেই নির্ধারিত ২৪ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ করেছে ১৫২ রান। কিন্তু বৃষ্টি আইন ডার্কওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে বাংলাদেশের সামনে জয়ের জন্য লক্ষ্য দাঁড়ালো ২১০ রান। ওভার সেই ২৪টিই।

টস জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাট করতে নামার পর ২০.১ ওভারে বিনা উইকেটে ১৩১ রান তোলার পরই নামে বৃষ্টি। সে অবস্থায় দীর্ঘ সময় ধরে খেলা বন্ধ থাকার পর আবার বাংলাদেশ সময় সাড়ে ১০টায় খেলা শুরুর ঘোষণা দেয়া হয়।

বৃষ্টির আগে সাই হোপ ছিলেন ৫৬ বলে ৬৮ এবং সুনিল আমব্রিস ৬৫ বলে ব্যাট করছিলেন ৫৯ রানে। এরপর খেলা শুরু হলে ৬৪ বলে ৭৪ রান করে আউট হন সাই হোপ। মেহেদী হাসান মিরাজের বলে তার ক্যাচ ধরেন মোসাদ্দেক সৈকত।

সুনিল আমব্রিস ৭৮ বলে থাকেন ৬৯ রানে অপরাজিত। ড্যারেন ব্র্যাভো অপরাজিত থাকেন ৩ বলে ৩ রান করে।

শেয়ার করুন: