শিম (Bean) এটি একটি লতানো বর্ষজীবী উদ্ভিদ। শিমের বৈজ্ঞানিক নাম Lablab Purpureas। এটা Papilionaceae গোত্রের লতানোজাতীয় উদ্ভিদ। শিম ৩.৮ সেমি. থেকে ৫ সেমি. চ্যাপ্টা, লম্বা বা বাঁকানো হয়ে থাকে। বীজের সংখ্যা তিন থেকে পাঁচটি। শিমের বিচি একটি জনপ্রিয় খাদ্য। বসন্ত ঋতুতে এর বীজ রোপন করা হয়। শীতকালে ফুল হয় এবং তা থেকে শিম হয়। ভারতীয় উপমহাদেশে শিমের উৎপত্তিস্থল বলে জানা যায়। শিম গাছের পাতা,মূল,বীজ নানারকম ঔষধরূপে ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশ সহ ভারতের সর্বত্র শিম চাষ করা হয়ে থাকে।
রাসায়নিক উপাদান: শিমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন আর মিনারেল। যার ফলে শিম খেলে অনেক উপকার হয়।
পুষ্টিগুণ: শিমে রয়েছে অনেক পুষ্টি। প্রোটিন, অ্যামাইনো এসিড, স্টেরল, ফ্যাটি এসিড, পালিটিক পামিটো লেইক, লাইনোলেয়িক। বিচিতে থাকে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রোটিন, গ্লোবিউলিন, অ্যালবুমিন লেকটিন, অ্যামাইনো প্রোপাইল, অ্যামাইনো অ্যালকোহল, প্রট্রোসিন, এনজাইম, কার্বোহাইড্রেট। বীজের বাকলে থাকে পেকটিক, পরিস্যাকরাইড। পুষ্টি বিজ্ঞানীদের মতে, প্রতি ১০০ গ্রাম উপযোগী শিমের পুষ্টি উপাদান হল- খাদ্যশক্তি ৪৮ কিলো ক্যালরি, আমিষ বা প্রোটিন ৩-৯ গ্রাম, শর্করা ৬.৭ গ্রাম, চর্বি ০.৭ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২১০ মিলিগ্রাম, খনিজ লবণ ০.৯ গ্রাম, লৌহ ২.৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-এ ১৮৭ মাইক্রোগ্রাম, বি-১ ০.০১ মিলিগ্রাম, বি-২ ২০.০৫ মিলিগ্রাম, সি ৯ মিলিগ্রাম, পানি ৮৫ গ্রাম।
প্রতি ১০০ গ্রাম খাওয়ার উপযোগী শিমের বিচিতে খাদ্য উপাদান হল- খাদ্যশক্তি ৩৪৭ কিলো ক্যালরি, আমিষ ২৪.৯ গ্রাম, চর্বি ০.৮০ গ্রাম, শর্করা ৬০-১ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৬০ মিলিগ্রাম, লৌহ ২.৭ মিলিগ্রাম।
উপকারিতা: ১। অল্প পরিমানের শিমের বীজ গুড়ো করে ঠান্ডা পানির সাথে সকাল বিকেল খেলে নাক দিয়ে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যায়। ২। জ্বর হলে শীতের বীচি গুড়ো গরম পানির সাথে মিশিয়ে ৪ ঘন্টা পর পর খেলে জ্বর ভালো হয়ে যায়। ৩। শিম শরীরের তলপেটের সংকোচনজনিত ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। ৪। শিম খেলে পেটের গ্যাস দূর হয় ও রুচি বাড়ে। ৫। যারা শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ান তারা নিয়মিত শিম খেলে বুকে দুধের পরিমাণ বাড়ে।