শিশু

ছোটমণি নিবাসে যেভাবে কাটছে সেই শিশুর সময়!

শিশু হাসপাতালের টয়লেট থেকে উদ্ধার হওয়া সেই শিশুকে আজিমপুরে অবস্থিত সমাজসেবা অধিদপ্তরের ছোটমনি নিবাসে স্থানান্তর করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) দুপুর দেড়টার দিকে ছোটমনি নিবাসের কর্মকর্তাদের কাছে তুলে দেওয়া হয় শিশু গহীনকে। পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে শিশুটিকে আজিমপুরে নিয়ে যাওয়া হয়।

সর্বশেষ পাওয়া সংবাদ অনুযায়ী, ছোটমণি নিবাসের তিন তলায় শিশু ওয়ার্ডে স্থান হয়েছে গহীনের। তার মতো পরিবারহীন আরো ২০ জনের স্থান হয়েছে ওয়ার্ডটিতে। রাখা হয়েছে সাড়ে সাড়ে সাজানো ছোট ছোট স্টিলের খাটে।

পৃথিবীতে আসার সাতদিন পূর্ণ হতে যাচ্ছে গহিনের। কখনো হাসি আবার কখনো কান্না। ছোটমনি নিবাসে এভাবেই ‘খালামনিদের’ আদর-মমতায় দিন কাটছে তার। বিছানা তার অপছন্দ। কোলে নিয়ে ঘোরাঘুরি করলেই ঘুম। শুক্রবার (১৭ মে) দুপুরে ওয়ার্ডে দায়িত্বরত মেট্রোন নাজমা আক্তারের সাথে কথা হলে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।

ছোটমণি নিবাসের পরিচারিকা ‘খালামনিরা’ জানান, গহীনকে কোলে নিয়ে ঘোরাঘুরি করার সময় কোলেই ঘুমিয়ে পড়ছে। পরে বিছানায় রাখতে গেলে আবার উঠে পড়ছে। মাঝে মধ্যে কান্নাও করছে গহীন।

প্রতিদিন অসংখ্য লোক আসছে গহীনকে দত্তক নেয়ার জন্য। যারা খাবার নিয়ে আসছেন, কোলে নিচ্ছেন তাদের দিকে বার বার তাকাচ্ছে সে। হয়ত তাদের মধ্যে খুঁজে ফিরছে চিরচেনা মুখটি মায়ের।

ছোটমনি নিবাসের উপ-তত্ত্বাবধায়ক জুবলি বেগম রানুর সাথে সকাল ১১টার দিকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কখনো বাজারে আছেন, আবার কখানো ব্যস্ত আছি বলে জানান।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গাজী মোহাম্মাদ নূরুল কবিরের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আপনারা বিকাল তিনটা পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। গহীনকে দেখানোর ব্যবস্থা করছি। আমি বলে দিয়েছি জুবলি বেগম রানুকে। পরে বিকাল তিনটার পর জুবলি বেগম রানুকে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

হাসপাতারের বাথরুমে শিশুটির সন্ধান পাওয়ার পর থেকে আদর যত্ম নিয়েছেন শিশু হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার রাসেল মাহমুদ ও তার স্ত্রী পলি বেগম। এই দম্পতির ১০বছর আগে বিয়ে হলেও তারা নিঃসন্তান।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায় গহীনকে ছোটমণি নিবাসে নিয়ে যাওয়ার সময় পলি কোনভাবেই কোল ছাড়া করতে চাননি। অন্যদিকে শিশুটিকে দত্তক নিতে আবেদনের হিড়িক পড়েছে। অনেকেই আসছেন তাকে দত্তক নিতে। একাধিক আবেদন হওয়াতে গহীনের অভিভাবক কে হচ্ছেন সেটি এখন আদালতই নির্ধারণ করবে।

শিশুটিকে যেকোন প্রয়োজনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সব সময় পাশে থাকার কথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। এছাড়া তার পুনর্বাসনের দায়িত্ব ও সরকারের। পুলিশের তেজগাঁও জোনের সহকারি কমিশনার মাহমুদ হাসান জানান, শিশুটির বাবা-মাকে খুঁজতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাচ্চাটির ছবি সহ পোস্ট দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে শিশু আইনে যা সিন্ধান্ত হবে পুলিশ সেটাই মেনে কাজ করবে বলে জানান তিনি।

শেয়ার করুন: