নুসরাত হত্যা: ওসি মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে অভিযেগের সত্যতা পেয়েছে পিবিআই

ফেনীর সোনাগাজী থানার তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দি রেকর্ড করে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশশের (পিবিআই) তদন্তে এ তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির প্রধান উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) বনজ কুমার মজুমদার। বুধবার এ তথ্য জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শিগগিরই এ বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।’

এদিকে নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলা প্রমাণ হওয়ায় সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।

অভিযুক্ত এসআই (নিরস্ত্র) মো. ইউসুফকে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয়ে এবং এসআই (নিরস্ত্র) মো. ইকবাল আহমদকে খাগড়াছড়ি জেলায় সংযুক্ত করা হয়েছে।

এছাড়া দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ফেনীর পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকারকে পুলিশ সদর দফতরে সংযুক্ত করা হয়।

প্রসঙ্গত, নুসরাত জাহান রাফি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা তাকে যৌন নিপীড়ন করে বলে অভিযোগ ওঠে। এ ব্যাপারে নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে ২৭ মার্চ সোনাগাজী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মামলা তুলে নিতে বিভিন্নভাবে নুসরাতের পরিবারকে হুমকি দেয়া হচ্ছিল। অভিযোগের ব্যাপারে থানায় নিজের মোবাইলে নুসরাতের জবানবন্দি রেকর্ড করেন তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন। সেই জবানবন্দির ভিডিও এরপর তিনি ছড়িয়ে দেন বলে অভিযোগ ওঠে।

পরবর্তীতে ৬ এপ্রিল সকাল ৯টার দিকে আলিম পর্যায়ের আরবি প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে যান নুসরাত। এ সময় তাকে কৌশলে একটি বহুতল ভবনে ডেকে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। সেখানে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়া হয়। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান নুসরাত।

পরবর্তীতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন বাদী হয়ে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন।

শেয়ার করুন: