দারুচিনি

দারুচিনির গুণের কথা

দারুচিনি( Cinnamon) আমাদের দেশে মসলা হিসেবে খুব পরিচিত । এর বৈজ্ঞানিক নাম Cinnamomus Zeylanicum। এটি একটি প্রাচীন মসলা ফসল। দারুচিনির আদি নিবাস শ্রীলংকায়। দারুচিনি গাছ ১০ - ১৫ মিটার লম্বা হয়ে থাকে। দারুচিনি গাছের পাতা কিছুটা তেজপাতার মতো। এই গাছের ছাল মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। দারুচিনির সুগন্ধ যুক্ত তৈল ও পাওয়া যায়।দারুচিনি চাষের জন্য উত্তম নিকাশযুক্ত বেলে দোঁআশ মাটি উত্তম।

দারুচিনি গাছ একটানা খরা সহ্য করতে পারে না। দারুচিনি গাছ আর্দ্র ও শুষ্ক আবহাওয়ায় ভাল হয়। বেলে দোআঁশ মাটিতে দারুচিনি চাষ করলে গাছের বাকলের গুণগত মান ভাল হয়। পাঁচ বছর বয়সী গাছ থেকে নিয়মিত ছাল ছাড়াবার ডাল পাওয়া সম্ভব। একাধিকবার ডাল কাটা যায়, তবে সবচেয়ে ভাল একবার ডাল কাটা এবং সেটা কাটতে হয় এপ্রিল মে মাসে। সাধারনতঃ ১-৩ সেমি ব্যাসের এবং এক হতে দেড় মিটার লম্বা ডাল কাটা ভাল।

এ ধরনের ডাল হতে ভালমানের ছাল পাওয়া সম্ভব। পরিণত গাছ হতে বছরে প্রতি হেক্টর জমির গাছ হতে ২০০-৩০০ কেজি শুকনা ছাল পাওয়া সম্ভব। এই গাছ বাংলাদেশ,ইন্দোনেশিয়া, ভারত, চীন এ জন্মে ও চাষ করা হয়। দারুচিনির, পাতা,ছাল, মুল এবং তেল সবই ঔষধি হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

উপকারিতা: ১। শরীরের কোথাও ব্যথা হলে দারুচিনি হালকা গরম পানির মধ্যে দিয়ে মধুর সাথে মিশিয়ে মালিশ করলে উপকার পাওয়া যায়। ২। অ্যাসিডিটির সমস্যা হলে দারুচিনি গুড়ো করে মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে অ্যাসিডিটি ভালো হয়। ৩। পাতলা পায়খানা হলে দারুচিনির সঙ্গে হরীতকীর গুঁড়া মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।

৪। প্রতিদিন দারুচিনি ও দুধ একসাথে মিশিয়ে খেলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে থাকে। ৫। হালকা গরম পানির সাথে দারুচিনি মিশিশে খেলে হৃদরোগ ভালো হয়। এবং রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে। ৬। দারুচিনি খেলে ইস্ট ছত্রাক ঘটিত ইফেকশন প্রতিরোধ হয়।

৭। বাতের ব্যথা ও শরীরের হাড়ের ব্যথায় হলে আধা চামচ দারুচিনির গুড়ো এক চামচ মধুর সাথে মিশিয়ে খেলে ব্যথা দূর হয়। ৮। নিয়মিত দারুচিনি খেলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায়। ৯। দারুচিনি, দূর্বাঘাস ও হলুদ বেটে মুখে লাগালে মুখের উজ্জ্বল হয়। ১০। দারুচিনি খেলে আমাদের দেহের ক্যান্সার, টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। ১১। দারুচিনিতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

১২। দারুচিনি দিয়ে চা বানিয়ে খেলে মাথাব্যথা ভালো হয়। ১৩। দারুচিনি গরম পানিতে সেদ্ধ করে কুলকুচি করলে দাঁতের ক্ষয় ও মাড়ির সমস্যা ভালো হয়। ১৪। হঠাৎ টান বা অন্য কোন কারণে পেশীতে ব্যথা হলে আহত স্থানে দারুচিনি তেল দিয়ে মালিশ করলে উপকার পাওয়া যায়। ১৫। দারুচিনি নিয়মিত খেলে ওজন নিয়ন্ত্রনে থাকে। ১৬। ঠান্ডায় গলা ব্যথা বা কাশি হলে দারুচিনি দিয়ে চা বানিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।

শেয়ার করুন: