মাশরাফির সমালোচনাকারী ডা. মৌমিতা জুলির আসল পরিচয়

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ও সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কটূক্তি করেছিলেন নওগাঁ জেলা হাসপাতালের ইনডোর মেডিকেল অফিসার ডা. মৌমিতা জলিল জুলি। ইতোমধ্যে জুলিকে শোকজ নোটিশ পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

সোমবার মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব শামীমা নাসরিন স্বাক্ষরিত শোকজ নোটিশে মাশরাফিকে নিয়ে তার ফেসবুক পোস্টের কথা তুলে ধরে বলা হয়, আপনার আচরণ একজন সরকারি কর্মকর্তার জন্য মানানসই নয় এবং অশোভনীয় আচরণ। এবং সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালার পরিপন্থী যা সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩ (খ) মোতাবেক ‘অসদাচরণ’ হিসেবে গণ্য।

অসদাচরণের দায়ে অভিযুক্ত করে কেন উক্ত বিধিমালার অধীনে যথোপযুক্ত দণ্ড প্রদান করা হবে না তা এ নোটিশ প্রাপ্তির তিন কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে তাকে।

তবে ডা. জুলির পরিচয় জেনে সবাই অবাক হয়েছেন। তিনি আওয়ামী পরিবারেরই সন্তান। বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক, উপদেষ্টাপরিষদের সদস্য আব্দুল জলিলের দ্বিতীয় মেয়ে জুলি।

আব্দুল জলিল বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে ১৯৬৯ সালে ব্যারিস্টারি পড়া ছেড়ে দিয়ে লন্ডন থেকে দেশে ফিরে নির্বাচনী রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধে ৭ নম্বর সেক্টরে ভারতের বালুরঘাঁট ক্যাম্পে কো-অর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর প্রায় চার বছর বিনাবিচারে কারা নির্যাতন ভোগ করে ১৯৭৯ সালে মুক্তি লাভ করেন জলিল।

১৯৮৪ সালে কারা নির্যাতিত এ নেতা নওগাঁ পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বঙ্গবন্ধু হত্যার ২১ বছর পর ৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে টেকনোক্র্যাট কোটায় ৯৯ সালে মাত্র ১৪ মাস বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০০২ সালের ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের ১৯তম কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান জলিল।

আওয়ামী লীগের বরেণ্য রাজনীতিকের মেয়ে জুলি যখন মাশরাফির ভালো কাজ নিয়ে সমালোচনা করেন তখন সবার অবাক হবারই কথা।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি নড়াইল সদর হাসপাতালে হঠাৎ পরিদর্শনে গিয়েছিলেন সংসদ সদস্য মাশরাফি। সেখানে তিনি কর্তব্যরত ডাক্তারদের কর্মস্থলে অনুপস্থিত পেলে একজন ডাক্তারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে অনুপস্থিতির কারণ জানতে চেয়ে কথা বলেন।

কথোপকথনের সে দৃশ্য পরবর্তীতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে অনেকে যেমন মাশরাফিকে বাহবা দেন ঠিক তেমনি কেউ কেউ বিশেষ করে ডাক্তার সমাজ মাশরাফির কথার ধরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলে তার সমালোচনা করেন। সেই সমালোচকদের একজন ডা. মৌমিতা জলিল। মাশরাফিকে নিয়ে অকথ্য ভাষা ব্যবহার করে তিনিও ফেসবুকে পোস্ট দেন, যা পরবর্তীতে ভাইরাল হলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়েরও নজরে আসে।

শেয়ার করুন: