সিয়াম সাধনার মাস রমজান। এ মাস আমাদের সবার কাছেই ধর্মীয় দিক দিয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ মাসে আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাসের অনেক ভিন্নতা আসে।
যারা ডায়াবেটিক রোগে আক্রান্ত তাদেরও ভিন্নতা আসে মেডিকেশন ও ডায়েটে। ডায়াবেটিকে আক্রান্ত অনেকেই চিন্তায় পরে যান যে সুস্থভাবে তারা রোজা পালন করতে পারবেন কি না।
ডায়াবেটিক রোগীরা রোজার আগেই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে তাদের ওরাল মেডিসিন অথবা ইনসুলিনের মাত্রা ঠিক করে নেবেন এবং সেইসঙ্গে অবশ্যই একজন পুষ্টিবিদের সঙ্গেও ডায়েট বিষয়ক পরামর্শ করে নিতে হবে। কেননা যারা ওরাল মেডিসিন নিবেন ও যারা ইনসুলিন নিবেন তাদের ডায়েটে ক্যালরির ভিন্নতা থাকবে।
ইফতার: সারাদিন রোজা রাখার পর দিনের প্রথম খাবার ইফতার। তাই ইফতারিতে শরবত হিসেবে ডাবের পানি বা লেবুর শরবত অথবা মৌসুমি ফলের মধ্যে যেগুলো কম মিষ্টিযুক্ত সেগুলো খেতে পারেন। এছাড়া টক দইয়ের লাচ্ছি বা লাবাং হতে পারে ইফতারের স্বাস্থ্যকর পানীয়।
সেইসঙ্গে ছোট দুটি খেজুর। খেজুরে যথেষ্ট পরিমাণে আঁশ বা ফাইবার রয়েছে, তাই খুব ধ্রুত ব্লাড সুগার বাড়ার সম্ভাবনা থাকে না।
কার্বোহাইড্রেট এর উৎস হিসেবে মুড়ি, চিড়া অথবা ওটস এগুলোর মধ্যে যে কোনও একটিকে ইফতারে বেছে নিতে পারেন। ছোলা সেদ্ধ, টক দই, ডিম হতে পারে প্রোটিন ও ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের ভাল উৎস।
সেই সঙ্গে পরিমিত পরিমাণে টক জাতীয় ফল। তবে যে দিন ফলের শরবত খাবেন সে দিন আর কোন ফল খাবেন না। ইফতারটিকে লো গ্লাইসেমিক করার জন্য রাখা যেতে পারে সবুজ সালাদ।
রাতের খাবার: ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য পরামর্শ থাকবে তারা যেন কখনই রাতের খাবার বা ডিনার বাদ না দেন। কেননা ছয়টি খাবারের সময়ের পরিবর্তে রমজানে মাত্র তিনটি খাবারের সময়ের মধ্যে ডায়াবেটিক ডায়েটটিকে সঠিকভাবে ভাগ করা হয়।
রাতের খাবারে হালকা কিছু কিন্তু পুষ্টিকর খাবার থাকতে হবে। সে ক্ষেত্রে লাল আটার রুটি, সবজি, মাছ বা মাংস। সেইসঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি যেন পানি শূন্যতা ও কোষ্ঠকাঠিন্য না দেখা দেয়।
সেহরি: সেহরির খাবার মেন্যুটি ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সেহরিতে ওরাল মেডিসিন বা ইনসুলিনের মাত্রাও পরবর্তী দিনের জন্য বিবেচনার বিষয়। তাই সেহরির মেন্যুতে এমন খাবার নির্ধারণ করতে হবে যা সারা দিন ডায়াবেটিক রোগীদের এনার্জি দিবে এবং হাইপোগ্লাইসেমিয়া প্রতিরোধে সহায়ক হবে।
সে ক্ষেত্রে সেহেরিতে ভাত হতে পারে কার্বোহাইড্রেট এর ভাল উৎস যা সারা দিন শরীরে গ্লুকোজের সরবারহ করে থাকবে। নরম করে রান্না করা আঁশযুক্ত সবজি ফাইবারসহ গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা পূরণ করবে। মাছ হতে পারে প্রোটিনের উৎস। তবে কেউ যদি মাছ সেহরিতে খেতে না চান সে ক্ষেত্রে মাংস, ডিম বা টক দইকে প্রোটিন হিসেবে নিতে পারেনে।