যে কারণে এই নিরীহ প্রাণীটির দাম কালোবাজারে কোটি টাকা!

বন্যপ্রাণীর চোরাচালান পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম কালোবাজার। আর সেই বাজারে সব থেকে বেশি চাহিদা যে স্তন্যপায়ী প্রাণীর, তার নাম হল প্যাঙ্গোলিন। কিন্তু কেন এমন চাহিদা? আসলে প্যাঙ্গোলিনের শরীরময় যে আঁশ, তার চাহিদা বিপুল। সেখান থেকে প্রাচীন ঔষধি তৈরি হয়। আর তা বিক্রি করা হয় চড়া দামে।

এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশ মিলিয়ে আটটি প্রজাতির প্যাঙ্গোলিন পাওয়া যায়। সব ক’টি প্রজাতিকেই বিশেষ ভাবে সংরক্ষণ করা হয়। সিএনএন-এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্যাঙ্গোলিনের দু’টি প্রজাতি এরই মধ্যে লুপ্তপ্রায়। আইএউসিএন (ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার)-এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত পাঁচ বছরে দশ লক্ষেরও বেশি প্যাঙ্গোলিনকে হত্যা করা হয়েছে।

প্যাঙ্গোলিনের শরীরের আঁশ জঙ্গলে তাকে বিপদ থেকে রক্ষা করে। কিন্তু অন্য পশুদের থেকে রেহাই পেলেও ওই আঁশই তাকে লোভী চোরাশিকারীদের চোখে পরম লোভনীয় করে তুলেছে। গত এপ্রিল মাসে সিঙ্গাপুর পুলিশ ১৪ টন প্যাঙ্গোলিনে আঁশ উদ্ধার করেছে! নাইজিরিয়া থেকে ভিয়েতনাম পাচার করা হচ্ছিল ওই বিপুল পরিমাণের আঁশ।

প্রসঙ্গত, চীন ও ভিয়েতনামেই প্যাঙ্গোলিনের আঁশের চাহিদা সর্বাধিক। তাদের মাংসও বিক্রি হয়। তবে মূল চাহিদা আঁশেরই। প্রাচীন চীনা ঔষধিতে ওই আঁশ ব্যবহার হয়ে আসছে গত এক হাজার বছর ধরে। সেদেশের বহু প্রজাতির বিশ্বাস ওই আঁশ ক্যানসার প্রতিরোধ করে। মহিলাদের বুকের দুধের পরিমাণও নাকি বাড়ে ওই আঁশ থেকে তৈরি ওষধি খেলে।

প্যাঙ্গোলিনগুলিকে ধরার পড়ে ভয়ঙ্কর নিষ্ঠুর পদ্ধতিতে তাদের হত্যা করা হয়। গরম পানিতে জ্যান্ত ফেলে দিয়ে তাদের মেরে ফেলে শরীর থেকে রক্ত বের করে নেওয়া হয়। নিরীহ প্রাণীগুলির প্রতি এমন নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছেন পশুপ্রেমী ও সংবেদনশীল মানুষেরা। সম্প্রতি বিখ্যাত অভিনতা কুংফু মাষ্টার জ্যাকি চ্যান একটি ভিডিওতে এ ব্যাপারে সচেতন হতে অনুরোধ করেছেন।

শেয়ার করুন: