মায়ের খেদমতের দাবি নিয়ে আদালতে দুই ভাই

সম্পদের জন্য সন্তানদের মাঝে লড়াই ঝগড়ার ইতিহাস নতুন নয়। যুগে যুগে জমিজমার ভাগাভাগি নিয়ে সন্তানদের মাঝে বিরোধ ও ঝগড়া হয়ে থাকে। কিন্তু মায়ের খেদমতের জন্য আদালতে মামলা করার দৃষ্টান্ত খুঁজে পাওয়া মুশকিল। সৌদি আরবের হিজান আল হারাবী সেই নজীরই স্থাপন করছেন। সৌদি আদালতের রেকর্ডে থাকা এ ঘটনা শুনে বিস্মিত হয়েছে অনেকে।

দুই সহদরের মধ্যে মায়ের খেদমত করাকে কেন্দ্র করে মামলা হয় সৌদি আদালতে। দুই সহদরই মায়ের খেদমতে করতে চাচ্ছিল, কিন্তু কেউ কাউকে এককভাবে খেদমতের সুযোগ দিতে রাজী নয়। আবার এ সুযোগ হারাতেও চায় না কেউ। পরিশেষে মায়ের খেদমত ‘কে’ করবে- এই নিয়ে দুই ভাই হাজির হন আদালতে। বড় ভাই বাদী হয়ে ছোট ভাইয়ের নামে মামলা দায়ের করে।

হিজান আল হারাবী ও তার ভাইর মাঝে কয়েক বছর পূর্বে মায়ের খেদমাত নিয়ে মতানৈক্য দেখা দেয়। পরে বড় ভাই হিজান এ নিয়ে আদালতে মামলা করে। মামলায় ছোট ভাইর পক্ষে রায় দেয়া হয়। বড় ভাই মামলায় হেরে যান। কারণ বড় ভাই নিজেও বয়োবৃদ্ধ। একজন বৃদ্ধ আরেকজন বৃদ্ধের খেদমাত কিভাবে করতে পারে? এমন কারণ দেখিয়ে আদালত মায়ের খেদমাতের জন্য ছোট ভাইকে সমর্থন করে।

রায় শুনে বড় ভাই হিজান আল হারাবী খুব কান্না করে। কান্নার পরিমাণ এমন ছিল যে, প্রতিটি সৌদিয়ান তাঁর কান্নায় ব্যাথিত -মর্মাহত হয়। মায়ের খেদমত করার জন্য সন্তানের এত ইচ্ছা আর প্রবল আবেগ থাকতে পারে! সেটা হিজান আল হারাবীকে না দেখলে বুঝা যেতো না।

এ ঘটনা মায়ের খেদমতের প্রতি সন্তানদের মনে অনেক প্রেরণা যুগিয়েছে। এ ঘটনা সকল সৌদির মনে গেঁথে আছে। সৌদি আদালতের ইতিহাসে এটি ছিলো এক বিরল দৃষ্টান্ত।

আল আরাবিয়া ডটনেটের খবর অনুযায়ী, মামলাকারী হিজান আল হারাবী ইন্তেকাল করেছেন। কিন্তু সে দেশের মানুষের মনে এ বিস্ময়কর দৃষ্টান্তের ছাপ আজও লেগে আছে।

প্রসঙ্গত, গত এক মাস পূর্বে মায়ের খেদমাতের অংশ পেতে আদালতে মামলাকারী সৌদির ইতিহাসে এই অদ্বিতীয় ব্যক্তি হিজান আল হারাবী এক মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় আহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। সূত্র: আল আরাবিয়া ডটনেট।

শেয়ার করুন: