তারেক রহমান
তারেক রহমান

তারেক রহমান দেশে ফিরতে চান, নাকি ফিরিয়ে আনা হবে?

কয়েকটি মামলায় দণ্ড নিয়ে লন্ডনে থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশে ফিরতে চান, নাকি ফিরিয়ে আনা হবে? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছ থেকে এ দুই ধরণের কথাই এসেছে। তারেক রহমানকে দেশে ফেরাতে যুক্তরাজ্য সরকারের কাছে বাংলাদেশের আবেদনের প্রায় তিন সপ্তাহ পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছ থেকে ওইসব কথা আসলো।

এটা নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন কিছুটা উত্তেজনায় ছেয়েছে। তাছাড়া মির্জা ফখরুল যেদিন বললেন, ‘তারেক রহমান দেশে ফিরতে চান’, এর ঠিক তিনদিনের প্রান্তে লন্ডনে অবস্থানরত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেই দিয়েছেন- যেকোনোভাবেই সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে নেয়া হবে, বিষয়টি বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন। দুই জনের মন্তব্যের দিনক্ষণ খুব কাছাকাছি হওয়ায় বিষয়টি সবার দৃষ্টি কেড়েছে।

গত ২৯ এপ্রিল দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বৃহত্তর ময়মনসিংহ ফোরামের উদ্যোগে খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং তারেক রহমানের মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে অনুষ্ঠিত সভায় ফখরুল বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় প্রায় এক যুগের উপরে নির্বাসিত হয়ে আছেন। প্রতি মুহূর্তে তিনি দেশের কথা চিন্তা করছেন, দলের কথা চিন্তা করছেন। তিনি ভাবছেন কীভাবে দেশে ফিরে আসা যায়।

১০দিনের সরকারি সফরে গত ১ মে লন্ডনে গমন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি বলেছেন, যে কোনো ভাবেই সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে নেয়া হবে। বিষয়টি বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন। চোখের চিকিৎসা করাতে লন্ডন এসে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা না করলেও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসা শেষে খুব শিগগিরই সব নেতাকর্মীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করার কথা আছে।

ধারণা করা হচ্ছে, সেসময় তিনি তারেক রহমানের বিষয়ে আরও কিছু বলবেন। লন্ডনে পৌঁছেই তাজ হোটেলে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় নেতারা তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। কথা হয় লন্ডনে অবস্থানরত তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক বলেন, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) তারেক রহমান সম্পর্কে বলেছেন, যথা সম্ভব দ্রুত বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হবে।

সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে গ্রেপ্তার তারেক পরের বছর ২০০৮ সালে জামিনে মুক্তি নিয়ে লন্ডনে যান। তারপর প্রায় এক যুগ ধরে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সেখানেই বসবাস করছেন তিনি। লন্ডনে থেকেই বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিবের পদ থেকে জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান হন দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান। দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হয়ে গত বছর ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা কারাগারে যাওয়ার পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হন তিনি।

তারেকের অনুপস্থিতিতেই মুদ্রা পাচার ও জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় তাকে সাত ও ১০ বছরের সাজার রায় দেন আদালত। এছাড়া ২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলার মামলাতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত তিনি। এসব সাজা কার্যকর করতে তারেককে দেশে ফেরাতে চেষ্টা-তদবির চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। আওয়ামী লীগ নেতারা তারেককে দেশে ফিরে মামলা মোকাবেলার আহ্বান জানিয়ে আসছেন। এর পাল্টায় বিএনপি নেতারা বলছেন, সুস্থ হলেই দেশে ফিরবেন তারেক।

শেয়ার করুন: