পায়ের দুর্গন্ধের অস্বস্তিঃ সহজ সমাধান

মিটিংয়ে মাঝেমধ্যে অন্যের পায়ের দুর্গন্ধের কারণে বসে থাকা দুষ্কর হয়ে যায়। পায়ের গ্রন্থিগুলো থেকে অতিরিক্ত ঘাম নিঃসরণ হলে এমন দুর্গন্ধ হতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায়, হাইপার হাইড্রোসিসে ভুগছেন বলে ধরে নেওয়া হয়। শীতকালে এ সমস্যা বেশিই থাকে।

বারডেম জেনারেল হাসপাতাল ও ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজের চর্ম ও যৌন বিশেষজ্ঞ মীর নজরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অতিরিক্ত ঘাম এবং পায়ে দুর্গন্ধ হওয়ার কারণ চিহ্নিত করতে প্রথমেই রোগীর ইতিহাস জেনে নিতে হয়। পায়ে দুর্গন্ধ হওয়ার অন্যতম কারণ অসুখজনিত। ঘাম কমাতে ড্রাই কেয়ার লোশন ব্যবহার করতে পারেন।’

যে কারণে পা থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়:  দীর্ঘ সময় পা ঘামে ভিজে থাকলে দুর্গন্ধ ছড়াবে। ঘামে ভেজা স্যাঁতসেঁতে ব্যাকটেরিয়ার বিস্তার দ্রুত হয়। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দুর্গন্ধও বাড়তে থাকে।

 সিনথেটিক মোজা পায়ে দুর্গন্ধ বাড়ায়। এসব মোজার ভেতর দিয় বাতাস চলাচল করতে পারে না। আবার ঘাম শোষণেও অকার্যকর।  কৃত্রিম চামড়ার জুতা পরলে পায়ে দুর্গন্ধ হওয়ার প্রবণতা বাড়ে। কৃত্রিম চামড়ার ভেতর থেকে বাতাস চলাচল করতে না পারার কারণে পা ঘেমে যায় দ্রুত।

 ফ্যাশনের জন্য অনেকেই কনভার্স কিংবা স্নিকার মোজা ছাড়াই পরেন। ঘামে ভিজে জুতার ভেতরটাই স্যাঁতসেঁতে ও নোংরা হয়ে থাকে। এভাবেও দুর্গন্ধ ছড়াতে পারে।  পায়ের যত্নে উদাসিনতা কিংবা আলস্যের কারণে পায়ে নানা ধরনের রোগ হয় এবং উপসর্গ হিসেবে দুর্গন্ধ ছড়ায়।

এড়ানোর উপায়: বিব্রতকর এই দুর্গন্ধ কেমন করে এড়ানো যায়, জানতে চাইলে ল্যাব এইড হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল ডার্মাটোলজিস্ট মো. কামরুল হাসান চৌধুরী বলেন, এই সমস্যা এড়াতে ই পায়ের যত্ন নেওয়া খুব জরুরি।

সাধারণ সাবান দিয়ে পা পরিষ্কার করার চাইতে গ্লিসারিনযুক্ত ময়েশ্চারাইজিং সাবান দিয়ে পা পরিষ্কার করলে পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হতে পারে। পা পরিষ্কারের পরে ত্বকের সুরক্ষায় ইউরিয়াযুক্ত ময়েশ্চারাইজিং লোশন মেখে নিলে ত্বক ভালো থাকবে। এতে ত্বকে ব্যাকটেরিয়ার বিস্তারও হবে কম। দুর্গন্ধও ছড়াবে না।

চা পাতার কেরামতিঃ ১) ফুটনো চা-পাতা দিয়ে প্রতিদিন ২০ মিনিট করে পা ভিজিয়ে রাখুন৷ এতে পা কম ঘামবে। ২) ফুটানো চা-পাতার অ্যাসিড জীবাণুনাশক।

জরুরি মোজাঃ ১) জুতার সঙ্গে মোজাও পরুন। পাতলা সুতির মোজা পায়ের ঘাম শুষে নেয়। ফলে পায়ে জীবাণু বাসা বাঁধতে পারে না। ২) প্রতিদিন একই মোজা ব্যবহার করবেন না।

অ্যান্টিফ্যাঙ্গাল ফুট পাউডারঃ ১) অ্যান্টিফ্যাঙ্গাল ফুট স্প্রে ব্যবহার করুন। ২) অ্যান্টিফ্যাঙ্গাল পাউডারও ব্যবহার করতে পারেন। পাল্টে পরুন জুতাঃ ১) প্রতিদিন জুতা পাল্টে নিন। একই জুতাতে পায়ে ঘাম বেশি হয়। ২) পায়ের পাতায় অক্সিজেন লাগালে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি কমে যায়। ফলে দুর্গন্ধও হবে না।

পায়ে লাগুক হাওয়াঃ ১) ঢাকা জুতা না পরে খোলা জুতা পরুন। ২) যদি একান্তই ঢাকা জুতা পরতে হয় তা হলে কাজের ফাঁকে মাঝে মাঝে জুতা খুলে নিয়ে পাযে হাওয়া লাগান।

শেয়ার করুন: