বিএনপি

বিএনপির নেতা কে, প্রশ্ন ইসির

চলতি বছরের জানুয়ারিতে বিএনপি তাঁদের গঠনতন্ত্রের ৭ ধারা বাতিল করে। পরে এই সংশোধিত গঠনতন্ত্রই নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দেওয়া হয়। অনেকটা অগোচরেই গঠনতন্ত্রে এই সংশোধনের লক্ষ্যই ছিল দুর্নীতি দায়ে দণ্ডিত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং দুর্নীতি ও হত্যা-চেষ্টার দায়ে দণ্ডিত লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াকে সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বে বহাল রাখা।

কারণ, বিএনপির গঠনতন্ত্রে ৭ নম্বর ধারায় ‘কমিটির সদস্যপদের অযোগ্যতা’ শিরোনামে বলা ছিল, ‘নিম্নোক্ত ব্যক্তিগণ জাতীয় কাউন্সিল, জাতীয় নির্বাহী কমিটি, জাতীয় স্থায়ী কমিটি বা যেকোনো পর্যায়ের যেকোনো নির্বাহী কমিটির সদস্যপদের কিংবা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থীদের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। তাঁরা হলেন: (ক) ১৯৭২ সালের রাষ্ট্রপতির আদেশ নম্বর ৮-এর বলে দণ্ডিত ব্যক্তি। (খ) দেউলিয়া, (গ) উন্মাদ বলে প্রমাণিত ব্যক্তি, (ঘ) সমাজে দুর্নীতিপরায়ণ বা কুখ্যাত বলে পরিচিত ব্যক্তি।’

এদিকে, বিএনপির সংশোধিত গঠনতন্ত্র গ্রহণ না করতে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩১ অক্টোবর হাইকোর্ট এই নির্দেশনা জারি করে। একই সঙ্গে এক মাসের মধ্যে বিএনপির গঠনতন্ত্র সংশোধন কেন অবৈধ নয় এর ব্যাখ্যা ইসির কাছে চেয়েছে হাইকোর্ট। হাইকোর্টের রায়ের সার্টিফায়েড কপি অতি সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনে এসে পৌঁছেছে।

জানা গেছে, হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের সচিব এম হেলালউদ্দিন বলেছেন, এই রায়ে যেহেতু আমরা কোনো প্রতিপক্ষ না এবং রায় যেহেতু নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে কোনো ভাবে সাংঘর্ষিক নয়, তাই নির্বাচন কমিশন ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। এ কারণে ইসি এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে কোনো আপিল করবো না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, বিএনপিকে আজ বা কালকের মধ্যে একটি চিঠি দেওয়া হবে। যে চিঠিতে বলা হবে, যেহেতু বিএনপির ৭ ধারা বাদ দেওয়া সংশোধিত গঠনতন্ত্র গ্রহণযোগ্য নয়, সেহেতু দলটি তাদের নেতৃত্ব থেকে দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিতদের বাদ দিয়ে নতুন নেতৃত্বের তালিকা যেন তাদের কাছে অতিসত্বর পাঠায়। ইসি সূত্র আরও জানিয়েছে, বিএনপির নতুন নেতৃত্বের তালিকা নির্বাচন কমিশনের পাঠানো না হলে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী ও রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালার শর্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উল্লেখ্য, আরপিও ও রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা অনুযায়ী কোনো রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন দেওয়া থেকে বিরত ও নিবন্ধন বাতিল করতে পারে ইসি। কিন্তু, ইসির এই দুটি আইনে এমন কোনো বিধান নেই, যার মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলো গঠনতন্ত্রে কোনো ধারা রাখবে কি রাখবে না, তা নির্ধারণ করতে পারে। এছাড়া কোনো দলের গঠনতন্ত্র গ্রহণ বা বর্জনের বিষয়েও ইসির সুনির্দিষ্ট কোনো বিধান নেই বলে মত আইনজ্ঞদের।

শেয়ার করুন: