দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দী, খুব কষ্টে আছেন। সেজন্য সংলাপের আগে থেকেই নৈশভোজ গ্রহণে বিরত থাকার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন বিএনপি নেতারা। গত ১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপের আগে তাঁরা বলেছিলেন, গণভবনে গিয়ে জল পর্যন্ত স্পর্শ করবেন না। বিএনপির নেতাদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে জানিয়ে দেন নৈশভোজ যেন না দেওয়া হয়।
কিন্তু ঐক্যফ্রন্টের কথা না শুনে অতিথি আপ্যায়নে নৈশভোজের ব্যবস্থা রাখেন প্রধানমন্ত্রী। আর কী অদ্ভুত ব্যাপার! খাবার টেবিলে চিজকেক, জুস, মোরগ পোলাও, শিক কাবাবের মতো লোভনীয় সব খাবারের উপস্থিতি দেখে লোভ সংবরণ করতে পারলেন না বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। সব অভিমান, দুঃখ-কষ্ট, রাগ-ক্ষোভ ভুলে সংলাপে প্রথম এক ঘণ্টার পর বিরতিতে তাঁরা নৈশভোজ গ্রহণ করেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, নৈশভোজের প্রশংসাও শোনা যায় নেতাদের মুখে।
পরবর্তীতে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের নৈশভোজ গ্রহণের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দলে এবং দলের বাইরে বিপুলভাবে সমালোচিত হন তাঁরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এ নিয়ে ট্রলের বন্যা বয়ে যায়। কষ্টটা বিএনপিরই বেশি। সংলাপে গিয়ে দলীয় নেতাদের আরামসে খাওয়া-দাওয়ার ছবি দেখে বিএনপির সংলাপে না থাকা নেতারা তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। বলেন, ‘আমাদের নেতারা এত বুভুক্ষু।’
আবার নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না আরেক কাঠি সরেস। খাইয়ে-দাইয়ে ছবি তোলায় তিনি সরকারের ওপরই ক্ষিপ্ত। সরকারকে ‘ছোটলোক’ বলে অভিহিত করেন তিনি। গত কয়েকদিন ধরে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের ভোজনের ‘নিরীহ’ ছবি নিয়ে এমনই তুলকালাম চলছে দেশজুড়ে। ছবি নিয়ে এতসব ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করে এবার বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতারা তওবা করেছেন, সংলাপে গিয়ে আর কিচ্ছু খাবেন না তাঁরা।