এটাই সেই বস্তি যেখানে এক রাত কাটাতে লাগবে ২ হাজার টাকা

দারিদ্র্য আর তার থেকে জন্ম নেওয়া হাজার একটা অসুবিধার সাথে লড়াই করে কীভাবে টিকে থাকে বস্তিবাসী ভারত, সেটা আমাদের খুব একটা অজানা নয়।

ছবি, ছায়াছবি, তথ্যচিত্র তো আছেই সেই পরিচিতির জন্য। এছাড়া যাওয়া-আসার মাঝেও শহরের বস্তিজীবনের কয়েক ঝলক চোখে পড়ে সবারই। কিন্তু যেচে টাকা দিয়ে সেখানে থাকতে যাওয়া?

শুনতে অবাক লাগলেও এবার ভারতীয় পর্যটনের তালিকায় জুড়েছে দারিদ্র্য। চাইলে কিছু টাকার বিনিময়ে বস্তির ঘরে কাটিয়ে আসা যাবে এক রাত। খাবারের বন্দোবস্ত করে দেবেন ওই ঘরের মালিকই!

সম্প্রতি মুম্বাইয়ের ধারাভি বস্তিতে এই উদ্যোগ শুরু হয়েছে ডেভিড বিল নামের এক ওলন্দাজের হাত ধরে। বস্তিজীবন নিয়ে কাজ করে- মুম্বাইয়ের এমন একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সাথে তিনি অনেক দিন ধরেই যুক্ত।

‘লোকে যে বস্তিতে ঘুরতে আসে না, তা নয়। কিন্তু তা আর কতটুকু সময়ের জন্য? গাইডের সাথে দল বেঁধে পর্যটকরা আসেন, বিশেষ দু-একটা অলিগলি ঘুরে দেখেন, তারপর ফেসবুকে দেওয়ার জন্য কিছু ছবি তুলে নিয়ে চলে যান।

তাতে বস্তির মানুষগুলোরও কোনো উপকার হয় না, পর্যটকরাও বস্তিজীবনের সংগ্রামের দিকটা বুঝতে পারেন না, জানিয়েছেন বিল।

সেই জন্যই এবার রবি সানসি নামের এক ধারাভি-বাসী এবং বলের যৌথ উদ্যোগে শুরু হয়েছে এই অভিনব পর্যটন উদ্যোগ। ২০০০ টাকা দিলে খাওয়া-দাওয়া সমেত রবির ঘরে এক রাত কাটাতে পারবেন পর্যটকরা।

তার জন্য ঘরের উপরে একটা শক্তপোক্ত মাচাও তৈরি করেছেন রবি। সেখানে রয়েছে এসি মেশিন, কালার টিভি আর নতুন তোষকও। ‘ইতিমধ্যেই এই পর্যটন দারুণ জনপ্রিয় হয়েছে।

বিদেশ থেকে প্রচুর মানুষ যেমন থাকতে আসছেন, তেমনই বস্তির অনেক লোকও নিজেদের ঘরে এরকম পর্যটকদের থাকার বন্দোবস্ত করার জন্য আমার সাথে যোগাযোগ করছে, জানিয়েছেন বিল।

তবে, বিল যা-ই বলুন না কেন, তার এই উদ্যোগ সম্পূর্ণ সাধুবাদ পাচ্ছে না বিশ্বদরবারে। বিশেষ করে যেখানে প্রথম বিশ্বে তৃতীয় বিশ্বের দারিদ্র্য চড়া দামে বিক্রি হয়, সেখানে তার এই উদ্যোগ নেতিবাচক বলেই মনে করছেন অনেকে।

‘পুরো ব্যাপারটাই অত্যন্ত বোকা বোকা! বিশেষ করে মাত্র এক রাত কাটানোর ব্যাপারটা! উনি দাবি করছেন, যে কয়েক ঘণ্টার ট্যুরে বস্তিজীবনের কিছুই জানা যায় না! ঠিক কথা! কিন্তু এক রাতেই বা কী এমন বিশদ জ্ঞান লাভ হবে?’ পাল্টা যুক্তি আন্তর্জাতিক বস্তি সংগঠনের আইনজীবী জকিন আরপুথামের!

শেয়ার করুন: