তমা মির্জা

ভিক্ষা করা অসুস্থ সেই মেকআপম্যানের পাশে তমা মির্জা

কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একজন মেকআপম্যানের ছবি ভাইরাল হয়। আবদুর রহমান নামের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সেই মেকআপম্যান খুবই অসুস্থ। তার চোখে ছানি পড়েছে, যার কারণে তিনি চোখে দেখতে পাচ্ছেন না। হারিয়েছেন কাজ। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেন না। বাধ্য হয়ে পথে পথে ভিক্ষা করেন।

হৃদয়বিদারক এ বিষয়টি নজরে আসে চিত্রনায়িকা তমা মির্জার। তার এমন অবস্থা দেখে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র মেকআপম্যান সমিতির সঙ্গে যোগাযোগ করেন তমা। সেখানে তিনি নিশ্চিত করেন যে আবদুর রহমানের চিকিৎসা করাবেন নিজ দায়িত্বে।

এ বিষয়ে কে তমা মির্জা বলেন, ‘বিষয়টা খুবই দুঃখজনক। আমাদের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির একজন গুণী মেকআপম্যান চোখে দেখতে পাচ্ছে না এবং চিকিৎসাও করতে পারছে না। যিনি এত সুন্দর দৃষ্টি নিয়ে আমার মতো শিল্পীদের সাজিয়ে তুলেছেন পর্দায়, আজ সেই চোখে তার দৃষ্টি নেই।

কাজ করতে পারছেন না। যদিও উনার কাছে আমার মেকআপ নেয়ার সুযোগ হয়নি তারপরও আমার খুব খারাপ লেগেছে। নিউজটা দেখার পর আমি কিছুদিন অপেক্ষা করেছিলাম, কেউ উনার দায়িত্ব নেয় কি না।

পরে মেকআপম্যান সমিতিতে হক ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করে জানি যে কেউ দায়িত্ব নেয়নি। তখন আমি উনার চোখের চিকিৎসার দায়িত্ব নিতে চেয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি যতটুকু জেনেছি উনার চোখের ছানি পড়েছে যার কারণে দেখতে পাচ্ছেন না। তাই আমি উনার চোখের অপারেশনটা করাতে চাই। এছাড়াও শুনেছি উনি ব্রেইন স্ট্রোক করেছিলেন।

চোখের অপারেশন করানোর পর যদি আবদুর রহমান ভাই বলেন যে উনার মাথার যে সমস্যা আছে সেটার জন্য আমি চিকিৎসার ব্যবস্থা করবো। আমার নিজের যতটুকু সামর্থ্য আছে সেটা দিয়ে উনার চিকিৎসা করার চেষ্টা করবো।’

তমা মনে করেন, ‘আমরা শিল্পীরা যারা কাজ করি তাদের প্রত্যেকের কাছে কম-বেশি টাকা থাকে। সেখান থেকে কিছু দিয়ে যদি একজন শিল্পীর চিকিৎসা করা যায় আমি মনে করি তাহলে তারাও সুস্থ জীবনযাপন করতে পারবেন, কাজও করতে পারবেন।

আর এটুকু করার জন্য কারও ইন্সপায়ারেশনের প্রয়োজন হয় না। তাদের প্রতি আমাদেরও কিছু না কিছু দায়িত্ব আছে। আমি সেই দায়িত্বটাই পালনের চেষ্টা করি।’

যোগ করে তমা মির্জা আরও বলেন, ‘আমি এখন উত্তরার আনন্দবাড়ি শুটিং হাউজে ‘গহীনের গান’ ছবির টানা শুটিং করছি। এ লটের শুটিং শেষ হবে আগামী ৩১ অক্টোবর। শুটিং শেষ করে ২ নভেম্বর আবদুর রহমান ভাইকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাবো।

এরপর ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী উনার যা চিকিৎসা করা প্রয়োজন সেটা আমি আমার দায়িত্ব থেকে করার চেষ্টা করবো। উনার পাশে দাঁড়ানোর মতো এতটুকু সামর্থ্য আমার আছে। আমি আমার সামর্থ দিয়ে চেষ্টা করব উনার চোখের আলো ফিরিয়ে আনতে।’

প্রসঙ্গত, আবদুর রহমান ২০১০ সালে ‘মনের মানুষ’ ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ মেকআপম্যান হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। এরপর ২০১৪ সালে মাসুদ পথিক পরিচালিত সরকারি অনুদানের ছবি ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’ ছবির জন্য দ্বিতীয়বারের মতো শ্রেষ্ঠ মেকআপম্যান হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। সর্বশেষ ‘ভুবন মাঝি’ চলচ্চিত্রে মেকআপম্যানের কাজ করেছিলেন তিনি। ‘বেদের মেয়ে জোছনা’, ‘গোলাপী এখন ট্রেন’র মতো ছবিতেও কাজ করেছেন তিনি।

শেয়ার করুন: