হার্ট অ্যাটাক

হার্ট স্পন্দন বন্ধ হওয়ার ৬ মিনিট পর কীভাবে বেঁচে ওঠা সম্ভব!

চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাসে এই বিরলতম ঘটনাটির নায়ক হলেন সদ্যপ্রয়াত কিংবদন্তী পাকিস্তানী ক্রিকেটার হানিফ মোহাম্মদ। কয়েক সেকেন্ড নয়, দীর্ঘ ৬মিনিট তার হার্ট বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ডাক্তাররা আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত ঘোষণার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিছু সংবাদ মাধ্যম মৃত্যু সংবাদ প্রচারও করেছিল। কিন্তু সবাইকে বিস্ময়াভিভূত করে ৬ মিনিট পর স্পন্দিত হতে থাকে তার হৃদযন্ত্র! ক্লিনিক্যালি ডেড হয়েও আবার ফিরে আসেন তিনি। কিন্তু কীভাবে এটি সম্ভব?

চিকিৎসাবিজ্ঞান বলছে, সাধারণত সর্বাধিক তিন মিনিট হৃদযন্ত্র স্তব্ধ হয়ে থাকার পর তা আবার চালু হতে পারে। এবং এতে রোগীও পুরোপুরি আগের অবস্থায় ফিরে আসতে পারেন।

কারণ, দেহে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে যাওয়ার তিন মিনিট পর্যন্ত মস্তিষ্কের কোষে অক্সিজেন সরবরাহ হয়ে থাকে। যতক্ষণ মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ চালু থাকে রোগীও বেঁচে থাকে। তা বন্ধ হলেই অক্সিজেনের অভাবে ব্রেন ডেথ হয়। রোগীকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই অবস্থাকে বলা হয় অ্যানক্সিএনসেফালোপ্যাথি।

কিন্তু হানিফ মোহাম্মদের ক্ষেত্রে সময়টা ছিল এর দ্বিগুণ। ছয় মিনিট। তাহলে এক্ষেত্রে কী করে সম্ভব হলো? এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা দুটি সম্ভাবনার কথা বলেছেন। এক, যারা হাইপোথারমিয়ায় আক্রান্ত তাদের ক্ষেত্রে এটা সম্ভব এবং দ্বিতীয়টি হলো, ভেন্টিলেশনে থাকার সময় ঠিকঠাক ম্যাসাজ দিতে পারলে এটা সম্ভব।

হাইপোথারমিয়ার রোগীদের ক্ষেত্রে দেহের তাপমাত্রা অনেক কম থাকায় মেটাবলিজম বা বিপাক ক্রিয়া মন্থর গতিতে সম্পন্ন হয়। তাই তাদের দেহে অক্সিজেনের চাহিদাও কম হয়ে থাকে।

তাই হৃদযন্ত্র স্তব্ধ হয়ে যাওয়ার পর হাইপোথারমিয়ার রোগীরা অপেক্ষাকৃত অনেক বেশিক্ষণ বাঁচতে পারেন। একই ‘অবিশ্বাস্য’ ঘটনা ঘটতে পারে ম্যাসাজের সাহায্যেও। দক্ষ হাতে ম্যাসাজের মাধ্যমে কিছুক্ষণ মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন চালু রাখা সম্ভব। তবে এই ক্ষেত্রে হৃদযন্ত্র চালু করা গেলেও বেশিক্ষণ তা স্থায়ী হয় না।

বোধহয় এটিই হল হানিফ মোহাম্মদের ক্ষেত্রে। ৬ মিনিট তার হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে পড়েছিল। পরে আবারও তা সচল হলেও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। অবশেষে মৃত্যুর কোলেই ঢলে পড়েন এই ক্রিকেট কিংবদন্তী।

শেয়ার করুন: