কোমল পানীয়

কিডনির নীরব ঘাতক কোমল পানীয়

বিভিন্ন ধরণের ভাজাপোড়া খাবারের সাথে কোমল পানীয় থাকলে তো কথাই নেই। ঠান্ডা কোমল পানীয়তে প্রতিটি চুমুক যেন প্রশান্তির আরেকটি নাম।

এমন লোভনীয় বর্ণনা শুনে অনেকের হয়তো এক গ্লাস ঠান্ডা কোমল পানীয় পানের পিপাসা তৈরি হচ্ছে। যদি তাই হয়ে থাকে তবে সেই পিপাসা কিংবা ইচ্ছাকে গুরুত্ব দেওয়া যাবে না একেবারেই। কারণ কোমল পানীয় পানের মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব সরাসরি দেখা দেয় কিডনির উপর।

স্বাস্থ্য এবং বিশেষভাবে কিডনির জন্য নীরব ঘাতক হিসেবে কাজ করে থাকে বাজারে সহজলভ্য নানান স্বাদের ও বর্ণের কোমল পানীয়। গবেষণা থেকে দেখা গেছে, কিডনির বিভিন্ন ধরণের সমস্যা তৈরি হওয়ার পেছনে কোমল পানীয়ের ভূমিকা অনেকখানি।

কোমল পানীয় পানে কিডনিতে পাথর তৈরি হয় কি? কোমল পানীয় তৈরি করা হয় কার্বোনেটেড পানি, চিনি অথবা ফ্রুক্টোজ সিরাপ, ফ্রুক্টোজ কর্ন সিরাপ বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল পণ্য ও ফসফরাসের সমন্বয়ে। কোমল পানীয়তে থাকা উচ্চমাত্রার ফসফরিক এসিড, মূত্র বিসর্জনের স্বাভাবিক নিয়মের মাঝে বড় ধরণের পরিবর্তন নিয়ে আসে। যার প্রভাবে কিডনিতে পাথর তৈরি হবার সম্ভবনা বেড়ে যায় বহুগুণ।

কিডনির পাথর তৈরি হয় মূলত চারটি উপাদানের সমষ্টিতে। উপাদানগুলো হলো- ক্যালসিয়াম, অক্সালেট (Oxalate), ফসফেট এবং ইউরিক অ্যাসিড। অন্যদিকে কিডনিতে পাথর তৈরিতে বাধা প্রদান করে সাইট্রেট ও ম্যাগনেসিয়াম। নিয়মিত কোমল পানীয় পানের ফলে মূত্রতে ম্যাগনেসিয়াম ও সাইট্রেটের মাত্রা কমে যায় এবং অক্সালেটের মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে কিডনিতে পাথর তৈরি হবার সম্ভবনা বৃদ্ধি পায় প্রায় ৩৩ শতাংশ।

কোমল পানীয় তৈরি করে ক্রনিক কিডনির সমস্যা: কিডনিতে পাথর তৈরি করার পাশাপাশি, কোমল পানীয় পানের ফলে ক্রনিক কিডনির সমস্যাও দেখা দিয়ে থাকে। কোমল পানীয় তৈরিতে ব্যবহৃত চিনি ও বিভিন্ন ধরণের কেমিক্যাল সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে দেয় কিডনিতে। যার ফলে সময়ের সাথে সাথে কিডনি তার স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।

আর্টিফিসিয়াল সুইটনারযুক্ত কোমল পানীয় দায়মুক্ত নয়: ডায়বেটিসে আক্রান্ত রোগীর পাশাপাশি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য, ইদানীং অনেকেই সাধারণ কোমল পানীয়ের পরিবর্তে আর্টিফিসিয়াল সুইটনারযুক্ত কোমল পানীয় পান করে থাকেন। পাশাপাশি স্বাস্থ্য সচেতন অনেকেই বাড়তি ক্যালরি গ্রহণ থেকে বিরত থাকার জন্য কোমল পানীয়ের পরিবর্তে নিয়মিত পান করেন আর্টিফিসিয়াল সুইটনারযুক্ত কোমল পানীয়।

এই পানীয় তৈরিতে চিনি ব্যবহৃত হয় না ঠিকই, তবে কৃত্রিম মিষ্টিভাব তৈরি করার জন্য ব্যবহৃত হয় আর্টিফিসিয়াল সুইটনার। যার নেতিবাচক প্রভাব দেখা দেয় কিডনির উপরে। যার ফলে কিডনির স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হারানোর সম্ভবনা বৃদ্ধি পায় তুলনামূলকভাবে অনেক বেশী। অর্থাৎ যেকোন ধরণের কোমল পানীয়ই কিডনির জন্য ক্ষতিকর।

শেয়ার করুন: