নির্বাচন

ঐক্য থেকে ছিটকে পড়লেন ‘অবিশ্বস্ত’ দুই চৌধুরী

গত মাসের ২২ সেপ্টেম্বর মহানগর নাট্য মঞ্চে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতারা বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে এক মঞ্চে হাজির হন ড. কামাল হোসেন ও বি. চৌধুরী। মঞ্চে দাঁড়িয়ে তারা একে অপরের হাতে হাত রেখে শপথ নেন যে, কার্যকর গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে এক যোগে কাজ করবেন। কিন্তু তা আর হলো না। ঠিক ২১ দিনের মাথায় চূড়ান্ত ঘোষণার দিনক্ষণে বৃহত্তর ঐক্য থেকে নাটকীয়ভাবে ছিটকে পড়লেন বি. চৌধুরী ও মাহী বি. চৌধুরী। সঙ্গে ভেঙ্গে গেলো বাপ-বেটার সংগঠন বিকল্পধারা।

তবে এ নিয়ে খুব অবাক হননি রাজনৈতিক মহল। কারণ রাজনৈতিক অঙ্গণে বেশ কিছুদিন ধরে চাউর হচ্ছিলো, ‘বাপ-বেটা সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে।’ তাই চূড়ান্ত ঘোষণার আগেই বিদায় নিতে হলো দুই চৌধুরীকে। ঘটনার শুরুটা এভাবে। গত শুক্রবার রাতে আ স ম রবের বাসায় ঐক্য প্রক্রিয়া, যুক্তফ্রন্ট ও বিএনপির সমন্বয়ে জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট গঠনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়।

জানানো হয়, ১৩ অক্টোবর বিকেল ৫টার দিকে ড. কামাল হোসেনের বেইলি রোডের বাসায় দেয়া হবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। সেভাবেই চলর্ছিলো সব আয়োজন। এজন্য গতকাল দুপুরে ড. কামালের মতিঝিল অফিসে চলছিলো প্রস্তুতি সভা। লক্ষ্য ছিলো, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচন কমিশন ঢেলে সাজানোর দাবিতে আন্দোলনের রূপরেখা চূড়ান্ত করতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা ঠিক করা।

এ সময় দুই চৌধুরী ওই বৈঠকে না গিয়ে বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ড. কামালের বাসায় চলে যান। ততক্ষণে সংবাদ সম্মেলনের সময় বিকেল তিনটার বদলে বিকেল পাঁচটা করা হয়। নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই ঘন্টা আগে আসার কারণে তাদেরকে কেউ অর্ভ্যথনা জানাতে আসেননি। এতে বাপ-বেটা গোসসা হয়ে ফিরে যান। শুধু ফিরেই যাননি, এই অপমানে সংবাদ সম্মেলন করবেন বলেও প্রেসকে জানান তারা।

খবর নিয়ে জানা গেছে, পর্দার অন্তরালে বাপবেটার বিভিন্ন খেলা চলছিলো। এ কারণেই শেষ পর্যন্ত জাতীয় ঐক্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত দলগুলোর কাছে বিশ্বস্ততা হারান দুই চৌধুরী। দু’জনের ভূমিকা নিয়ে অনেক আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ। মাহী বি. চৌধুরীর দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আমরা তো ছেলের কাছে বিক্রি হয়ে যাই। যারা আজকে জাতীয় ঐক্য করছেন তাদের অনেকের ছেলের ভিওআইপি ব্যবসা আছে। ভিওআইপি ব্যবসা কার থেকে নিয়েছে? আওয়ামী লীগের কাছ থেকে।’

অবিশ্বস্ত আচরণের কারণেই জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া প্লাটফর্মে বাপ ও ছেলেকে না রাখার সিদ্ধান্ত হয়। মতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠকে অংশ নেয়া এক নেতা বলেন, ‘বি. চৌধুরী ও মাহী বি. চৌধুরীর সঙ্গে সরকারের আঁতাত রয়েছে। রাজনৈতিকভাবে তাদের বিশ্বাস করা যায় না। এ কারণে তাদের জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

শেয়ার করুন: