বাংলাদেশের এমন কোন জায়গা পাওয়া যাবে না যেখানে পেঁপে পাওয়া যায় না। পেঁপে খুবই উপকারী একটি সবজি বা ফল আমাদের শরীরের জন্য। কাঁচা অবস্থায় পেঁপে সবজি আর পাকা অবস্থায় ফল। যাদের পেটে গোলমাল দেখা দেয়, তারা পেঁপে খেতে পারেন। অন্যান্য ফলের তুলনায় পেঁপেতে ক্যারোটিন অনেক বেশি থাকে। আর ক্যালরির পরিমাণ বেশ কম থাকায় যারা মেদ সমস্যায় ভুগছেন তারা পেঁপে খেতে পারেন অনায়াসে। এই ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ও সি আছে।
যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের জন্য মিষ্টি খাওয়া হারাম। কিন্তু আমাদের দেশের অত্যন্ত সহজ লভ্য একটি ফল পেঁপে, যা মিষ্টি হলেও ডায়াবেটিস রোগীরা খেতে পারেন। চোখের সমস্যা বা সর্দি কাশির সমস্যা থাকলে পেঁপে খেতে পারেন, কাজে দেবে। যারা হজমের সমস্যায় ভোগেন তারা পেঁপে খেলে উপকার পাবেন। এই ফলে কোনো ক্ষতিকর উপাদান নেই। পেঁপেতে আছে পটাশিয়াম। তাই এই ফল রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। পাশা পাশি হাইপারটেনশন কমায় অনেক খানি। শরীরে থাকা বিভিন্ন ক্ষতিকর কোলেস্টরলের মাত্রা কমিয়ে দেয় পেঁপে।
তাই নিয়মিত পেঁপে খেলে হৃদযন্ত্রের নানা সমস্যা যেমন হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। যাদের কানে ঘন ঘন ইনফেকশন হয় তারা পেঁপে খেয়ে দেখতে পারেন, উপকার পাবেন। পেঁপে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ ফল, তাই ত্বকের লাবণ্য ও উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে। এছাড়া পেঁপে আরো নানা গুণের অধিকারী। বিভিন্ন রোগ ও রোগের উপসর্গ নিরাময়ে পেঁপে ব্যবহারের প্রথা আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বহু দিন ধরে চলে আসছে। যেমন-
★ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি ও ই আছে। এই ভিটামিন গুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে। এতে উপস্থিত ভিটামিন সি ত্বক, চুল ও মাড়ির জন্য খুবই উপকারী। পেঁপেতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ যা চোখ, মিউকাস মেমম্রেন ও সুন্দর ত্বকের জন্য জরুরী। এই উপাদান গুলোর উপস্থিতির কারণে পেঁপেকে একটি পুষ্টিকর ফল হিসেবে ধরা হয়।
★ শরীর শুকিয়ে গেলেঃ কোনো কারণ নেই অযথা শরীর শুকিয়ে যাচ্ছে, এমন অবস্থায় মুখোমুখি অনেককেই হতে দেখা যায়। বিশেষ করে অল্পবয়সীদের ক্ষেত্রে এ উপসর্গের প্রকোপ বেশি। শরীরে অবসাদজনিত ক্লান্তি, একটা মনমরা ভাব, পড়াশোনা বা কাজকর্মে অনীহা প্রভৃতি উপসর্গ এর সাথেই আসে। প্রায়ই এর সাথে জড়িয়ে থাকে কোষ্ঠকাঠিন্য। এক্ষেত্রে পেঁপে খুবই ফলপ্রসূ। কাঁচা বা পাকা যে অবস্থায়ই হোক। সকালে ও বিকেলে প্রতিদিন কয়েক টুকরো করে খেতে হবে। অন্তত এক মাস নিয়মিত খেতে হবে।
★ হজম শক্তি বাড়াতেঃ হজমের গোলমাল একটি ব্যাপক সমস্যা। হজম শক্তি কমে গেলে অম্বল হতে চায়, মুখে চোকা ঢেকুর ওঠে, পেট ব্যথা শুরু হয়। কখনো চিনচিনে ব্যথা, কখনো ভয়ঙ্কর ব্যথা হয়। কখনো কোষ্ঠ পরিষ্কার হয় না আর কখনো পেট খারাপ হয়। শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে, শরীরে অবসাদ দেখা দেয়। এক্ষেত্রেও পেঁপে উপকারে আসে। পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে এনজাইম আছে যা খাবার হজমে সহায়তা করে থাকে। এছাড়াও প্রচুর পানি ও দ্রবণীয় ফাইবার আছে। যারা হজমের সমস্যায় ভুগে থাকেন তাঁরা নিয়মিত পথ্য হিসেবে পাকা বা কাঁচা পেঁপে খেতে পারেন।
★ উচ্চ রক্ত চাপ কমাতেঃ চল্লিশ-পঁয়তাল্লিশ বছরের পর থেকে মানুষের রক্ত চাপ সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দেয়। হয়তো রক্ত চাপ বাড়ে নয়তো কমে। রক্ত চাপ বাড়লে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। হঠাৎ পড়ে গেলে শরীরের কোন অংশ অকেজো হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, শরীরে অসাড়তা দেখা যায়। উচ্চরক্তচাপ আক্রান্তরা কাঁচা বা পাঁকা পেঁপে ব্যবহার করতে পারেন। দুটোই উপকারী। তবে খাবেন কয়েক টুকরো এবং নিয়মিত। কয়েক মাস খেয়ে যেতে হবে।
★ ফাইলেরিয়া রোগ হলেঃ ফাইলেরিয়া মশা বাহিত রোগ। ফাইলেরিয়ার বিভিন্ন উপসর্গ নিরাময়ে পেঁপে গাছকে ব্যবহার করা যায়। কয়েকটি পেঁপে পাতা সংগ্রহ করে সেগুলোকে গরম পানিতে ভালো করে ফুটিয়ে নিতে হবে। এবার পাতাগুলোকে গরম অবস্থায় সেঁকে নিয়ে নিয়মিত কয়েক দিন সেঁক দিলে ফাইলেরিয়ার উপসর্গ অনেকটা কমে যাবে।
★ কোলেস্টেরল কমায়ঃ অন্যান্য ফলের মতই পেঁপেতে কোনো কোলেস্টেরল নেই। আর পেঁপেতে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। তাই কোলেস্টেরলের সমস্যায় যারা দুশ্চিন্তায় আছেন তাঁরা প্রতিদিনের খাবার তালিকায় পেঁপে রাখুন। অন্যান্য কোলেস্টেরল যুক্ত খাবারের বদলে পেঁপে খান। তাহলে আপনার কোলেস্টেরলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
★ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ক্যারোটিনের উৎসঃ পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিটা ক্যারোটিন, ফ্লেভানয়েড, লুটেইন, ক্রিপ্টোক্সান্থিন আছে। এছাড়াও আরো অনেক পুষ্টি উপাদান আছে যেগুলো শরীরের জন্য খুবই উপকারী। ক্যারোটিন ফুসফুস ও অন্যান্য ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে বয়সের ক্ষতির থেকে রক্ষা করে।
★ ভিটামিন বি এর অভাব পূরন করেঃ পেঁপেতে আছে ভিটামিন বি-১ ও ভিটামিন বি-৬, এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে ফলেট নামের একটি জরুরী ভিটামিন আছে। তাই ভিটামিন বি এর অভাব পূরণ করার জন্য নিয়মিত পেঁপে খাওয়া উচিত।
এছাড়াও পেঁপের রয়েছে আরও কিছু পুষ্টিগুণঃ – যেসব মায়ের সদ্য বাচ্চা হয়েছে কাঁচা পেঁপের তরকারি নিয়মিত খেলে তাদের স্তনের দুধ বাড়বে। – ওষুধ হিসেবে কাঁচা পেঁপের গুণ পাকা পেঁপের চেয়ে বেশি। পেপটিন বা পেঁপের আঠার গুণ অনেক।
– প্রতিদিন দুপুরে ভাত খাওয়ার পর এবং রাতে ভাত বা রুটি খাওয়ার পর এক টুকরা কাঁচা পেঁপে ভালো করে চিবিয়ে খেয়ে এক গ্লাস পানি খেলে সকালে পেট পরিষ্কার হয়। – কাঁচা পেঁপে বা পেঁপে গাছের আঠা পেটের অসুখ, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রভৃতি রোগের জন্য বিশেষ উপকারী।
– পেঁপের তরকারি নিয়মিত খেলে পেটের পীড়া বা উদরাময়ে উপকার হয়। – আমাশয় থেকে মুক্তি পাওয়ার অদ্ভুত শক্তি আছে কাঁচা পেঁপের আঠায়। – ক্রিমি বিনাশের ক্ষেত্রে পেঁপে এটি ফলপ্রদ ওষুধ।
প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা পেঁপেতে আছে- প্রোটিন ০.৬ গ্রাম, ফ্যাট ০.১ গ্রাম, মিনারেল ০.৫ গ্রাম, ফাইবার ০.৮ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ৭.২ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৩২ কিলো ক্যালরি, ভিটামিন সি ৫৭ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ৬.০ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৬৯ মিলিগ্রাম, আয়রন ০.৫ মিলিগ্রাম।
পাকা পেঁপে খেতে পছন্দ করেন অনেকেই। তবে কাঁচা পেঁপেতেও রয়েছে প্রচুর পরিমান ভিটামিন। পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ফলটি কাঁচা অবস্থায় সবজি হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন রকম অসুখ সারাতে কাঁচা পেঁপের জুড়ি মেলা ভার-
১. কাঁচা পেঁপের তরকারি লিভার বৃদ্ধিরোধ করে এবং পাইলসের সমস্যা দূর করে। ২. প্রতিদিন দুপুর ও রাতের খাবারের পর এক টুকরো কাঁচা পেঁপে ভালো করে চিবিয়ে খেলে এবং তারপর এক গ্লাস পানি খেলে সকালে পেট পরিষ্কার হয়। গ্যাস্ট্রিক ও বদহজমের কষ্ট দূর হয়। ৩.ঔষধ হিসেবে কাঁচা ও পাকা পেঁপের অনেক গুণ। পেপটিন বা পেঁপের আঠারও গুণ অশেষ। তবে গর্ভবতী মহিলাদের বেশি পেঁপে খাওয়া উচিত নয়।
৪. নিয়মিত পেঁপের তরকারি খাওয়া পেটের অসুখ ও হৃদরোগ সারাতে বেশ ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখে। ৫. যাদের খাবার ঠিকভাবে হজম হয় না, তাদের জন্য কাঁচা পেপে খুবই উপকারী।
★কাঁচা পেঁপের গুনাগুণঃ বাংলাদেশের সব জায়গায় কম বেশি পেঁপে পাওয়া যায় । পেঁপে খুবই উপকারী একটি সবজি বা ফল আমাদের শরীরের জন্য। কাঁচা অবস্থায় পেঁপে সবজি আর পাকা অবস্থায় ফল।
১. কাঁচা পেঁপে শরীরের জন্য খুব উপকারী । এতে রয়েছে প্রোটিওলাইটিক এনজাইম । এই উপাদানটি প্রটিন হজম করতে সাহায্য করে । ক্যান্সার নিরাময়েও ভূমিকা রাখে , এই জন্য পেঁপে রান্নার পরিবর্তে কাঁচা খাওয়াটাই উত্তম। ২. কাঁচা পেঁপে খেলে মেদ কমে এতে কোনো খারাপ কোলস্টেরল, চর্বি বা ফ্যাট নেই। মোটা মানুষ দুশিন্তা মুক্ত হয়ে খেতে পারেন ।
৩. কাঁচা পেঁপে আমাদের দেহের সঠিক রক্ত সরবরাহে কাজ করে। আমাদের দেহে জমা থাকা সোডিয়াম দূর করতে সহায়তা করে যা হৃদপিণ্ডের রোগের জন্য দায়ী। নিয়মিত পেঁপে খেলে উচ্চ রক্ত চাপের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এতে করে হৃদপিণ্ড জনিত যে কোনো সমস্যার সমাধান হয়।
৪. কাঁচা পেঁপে কোষ্ঠকাঠিন্যের মহৌষধ হিসেবে কাজ করে। কাঁচা পেঁপে এবং কাঁচা পেঁপের বীচির মধ্যে রয়েছে অ্যান্টি অ্যামোবিক এবং অ্যান্টি প্যারাসিটিক উপাদান যা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম। এছাড়াও হজমের সমস্যা, বুক জ্বালাপোড়া, গ্যাসের সমস্যা, পেটে ব্যথা ইত্যাদি সমস্যা সমাধানেও কাঁচা পেঁপের জুড়ি নেই।
৫. পেঁপেতে থাকে প্রচুর পরিমাণ পেপসিন। এই পেপসিন হজমে সাহায্য করে। কাঁচা পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে পেপেইন নামক হজমকারী দ্রব্য থাকে। অজীর্ণ,কৃমি সংক্রমণ, আলসার, ত্বকে ঘা, কিডনি ও ক্যান্সার নিরাময়ে কাজ করে। পাকা পেঁপে ফল ও কাঁচা পেপে সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। পেঁপে কাঁচা কী পাকা, দুটোতেই পুষ্টি গুণে ভরপুর।
৬.ত্বকের যত্নে পেঁপে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ ফল, তাই ত্বকের লাবণ্য ও উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে। প্রতিদিন পাকা পেপের সাথে মধু ও টকদই মিশিয়ে লাগালে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
৭. ব্রণের সমস্যা প্রায় সবারই থাকে। এসব ব্রণের কারণে মুখে আনেক ধরনের দাগ তৈরি হয়। এই বাজে দাগগুলো নিরাময় করতে পারে সুমিষ্ট এই ফলটি। মুখের অন্যান্য যেকোনো দাগ যেমন মেছতা, ফুস্কুরির দাগও খুব সহজেই দূর করে দিতে পারে।মুখের বিভিন্ন দাগ দূর করার পাশাপাশি পেঁপে ফলটি মুখের উজ্জ্বলতাও ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে।
৮.অপথ্যালমোলজি আর্কাইভস প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রতিদিন তিনবার পেপে খেলে চোখের বয়সজনিত ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। বয়স্কদের মধ্যে দৃষ্টি ক্ষতি প্রাথমিক কারণ, প্রতিদিনের খাবারে তলনামূলক ভাবে কম পুস্টি গ্রহণ করা।
পেঁপে আপনার চোখের জন্য ভাল এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন এ, সি, ও ই এর উপস্থিতির কারণে।
★ স্বাস্থ্যের জন্য পেঁপের ১০ উপকারিতাঃ পেঁপে এর স্বাদ ও গুনাগুণের জন্য বিশ্বের সবচাইতে জনপ্রিয় ফল। গ্রীষ্মকালীন এ ফলে আছে প্রাকৃতিক ফাইবার হিসাবে পুষ্টি এবং সাথে উদ্ভিদে বিদ্যমান পিঙ্গল পদার্থ, যেমন ভিটামিন এ, সি, এবং কে, যেমন নিয়াসিন, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, প্রোটিন । যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের জন্য মিষ্টি খাওয়া হারাম। যেকোনো রকম সুগারজাত খাদ্যদ্রব্য খাওয়ার নিষেধজালে আটকা পড়েন তারা। কিন্তু আমাদের দেশে অত্যন্ত সহজলভ্য একটি ফল পেঁপে, যা মিষ্টি হলেও ডায়াবেটিস রোগীরা খেতে পারেন।
এখানে পেপের বেশ কিছু গুনাগুণের কোথা তুলে ধরা হল: ১। হৃদ রোগ থেকে রক্ষা করে: নিয়োমিত পেপে খেলে অথেরোস্ক্লেরোসিস এবং ডায়াবেটিক হৃদরোগ প্রতিরোধ করে। পেঁপের ভিটামিন এ, সি এবং ই, সমূহের এবং শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস এর চমৎকার উৎস। এই তিনটি পুষ্টি কলেস্টেরল প্রতিরোধে সাহায্য করে, যা হার্ট এটাক ও স্ট্রোক এর প্রধান কারণ এক। পেঁপের এছাড়াও ফাইবার এর একটি ভাল উৎস, যা উচ্চ কলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সহায়তা করে।
২। দৃষ্টিশক্তি রক্ষা করে: অপথ্যালমোলজি আর্কাইভস প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রতিদিন তিনবার পেপে খেলে চোখের বয়সজনিত ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। বয়স্কদের মধ্যে দৃষ্টি ক্ষতি প্রাথমিক কারণ, প্রতিদিনের খাবারে তলনামূলক ভাবে কম পুস্টি গ্রহণ করা।
পেঁপে আপনার চোখের জন্য ভাল এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন এ, সি, ও ই এর উপস্থিতির কারণে।
৩। হজমে সহায়তা করে: বদ হজমের রোগিদের পাকা পেঁপে খেলে খুব উপকার মিলবে। পাঁকা পেপে খেলে মুখে রুচি বাড়ে, সাথে সাথে খিদে বাড়ে তাছাড়া পাঁকা পেপে কোষ্ট পরিস্কার করে এবং বায়ু নাস করে। এ ছাড়াও পেপে অর্শ রোগের ক্ষেত্রেও বেশউপকারি।
৪। অর্শ ও কৃমিনাশক: কাঁচা পেঁপের আঠা বীজ কৃমিনাশক। কাঁচা পেঁপের আঠা চিনি বা বাতা্সোর সাথে মিশিয়ে খেলে অর্শ ও জন্ডিস সহ লিবারের নানা রোগ ভালো হয়। এ আঠা প্রতিদিন সকালে ৫- ৭ ফোটা আঠা বাতাসার সাথে মিসিয়ে খেলে অর্শের রক্ত পড়া বন্ধ হয়। ব্রন আচিল জিভের ঘায়ে এ আঠা লাগলে খুব উপকার হয়।
৫। কোলেস্টেরল কমায়: অন্যান্য ফলের মতই পেঁপেতে কোনো কোলেস্টেরল নেই। আর পেঁপেতে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার। তাই কোলেস্টেরলের সমস্যায় যারা দুশ্চিন্তায় আছেন তাঁরা প্রতিদিনের খাবার তালিকায় পেঁপে রাখুন। অন্যান্য কোলেস্টেরল যুক্ত খাবারের বদলে পেঁপে খান। তাহলে আপনার কোলেস্টেরলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
৬। ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়: পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিটা ক্যারোটিন, ফ্লেভানয়েড, লুটেইন, ক্রিপ্টোক্সান্থিন আছে। এছাড়াও আরো অনেক পুষ্টি উপাদান আছে যেগুলো শরীরের জন্য খুবই উপকারী। ক্যারোটিন ফুসফুস ও অন্যান্য ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
৭। চুলের যত্নে: চুলের যত্নে পেপে অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করে। টক দইয়ের সাথে পেপে মিশিয়ে চুলে মাখলে চুলের গোরা শক্ত হয় ও চুল ঝলমলে হয়। ১ চামচ পেপের আঠা ৭/৮ চামচ পানি দিয়ে ফেটে চুলের গোড়ায় কিছুক্ষন রেখে ধুয়ে ফেললে উকুন মরে যায়।
৯। ত্বকের যত্নে: পেঁপে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ ফল, তাই ত্বকের লাবণ্য ও উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে। প্রতিদিন পাকা পেপের সাথে মধু ও টকদই মিশিয়ে লাগালে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
১০। ব্রণের দাগ কমিয়ে উজ্জ্বলতা বাড়ায়: ব্রণের সমস্যা প্রায় সবারই থাকে। এসব ব্রণের কারণে মুখে খুব বাজে ধরনের দাগ তৈরি হয়। এই বাজে দাগগুলো নিরাময় করতে পারে সুমিষ্ট এই ফলটি। মুখের অন্যান্য যেকোনো দাগ যেমন মেছতা, ফুস্কুরির দাগও খুব সহজেই দূর করে দিতে পারে।মুখের বিভিন্ন দাগ দূর করার পাশাপাশি পেঁপে ফলটি মুখের উজ্জ্বলতাও ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে। ১০০ গ্রাম পেপেতে পাওয়া যায় ৩৯ ক্যালরি। এতে কার্বোহাইড্রেট আছে ৯.৮১ গ্রাম, ফ্যাট ০.১৪ গ্রাম, প্রোটিন ০.৬১ গ্রাম। এছাড়া পেঁপে আরো নানা গুণের অধিকারী।
পেঁপেতে আছে ভিটামিন বি-১ ও ভিটামিন বি-৬, এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে ফলেট নামের একটি জরুরী ভিটামিন আছে। তাই ভিটামিন বি এর অভাব পূরণ করার জন্য নিয়মিত পেঁপে খাওয়া উচিত।সূত্র: টপটেন হোমরিমেডিস।
পেঁপে অনেকেই পছন্দের ফলের তালিকায় রাখেন না। যদিও পাকা পেঁপে অনেকের প্রিয়, কাঁচা পেঁপে তারা অনেকটা এড়িয়েই চলেন। পাকা পেঁপে খাওয়া হয় মজার জন্য এবং তাও কালে-ভদ্রে। তরকারি হিসেবেও পেঁপে নিয়মিত খাবার তালিকায় স্থান পায় না। অথচ, এ ফলটি নানা গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদানে সমৃদ্ধ। পেঁপেতে রয়েছে ক্যারোটিন, ফ্ল্যাভনয়েড, ফোলেট, পটাসিয়াম, কপার, আঁশ ও ম্যাগনেসিয়াম। প্রকৃতিতে সবচেয়ে উপকারি ফলগুলোর একটি পেঁপে। প্রতিদিনের খাদ্য-তালিকায় ফল বা তরকারি হিসেবে পেঁপে অন্তর্ভুক্ত করুন ও সুস্থ-সবল থাকুন।
নিচে এ ফলটির নানা উপকারিতার মধ্য থেকে ৮টি প্রধান উপকারি দিক তুলে ধরা হলো:
১) পেঁপেতে যে পুষ্টি উপাদানসমূহ রয়েছে, তা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। হার্টের রোগীদের নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। ২) পেঁপেতে যে আঁশ রয়েছে, তা উচ্চ কোলেস্টেরোলের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ ও কমাতে সাহায্য করে। ৩) বিশেষ করে হজমের সমস্যায় যারা নিয়মিত ভুগে থাকেন, পেঁপে তাদের জন্য অপ্রতিস্থাপনীয় মহৌষধ। বেলও রয়েছে সে তালিকায়।
৪) কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, পেঁপেতে যে আঁশ রয়েছে, তা মলাশয়ের ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে। ৫) পেঁপেতে প্রোটিন হজমকারী দুটি অ্যানজাইম চিমোপাপাইন ও পাপাইন রয়েছে, যা প্রদাহ হ্রাস করে।
৬) রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় পেঁপে। এতে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ বিটা-ক্যারোটিন উপাদান। এ উপাদানটি থেকে ভিটামিন এ ও সি উৎপন্ন হয় এবং তা আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়ায়।
৭) নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস আপনার দৃষ্টিশক্তিকেও ভালো রাখে। কারণ, এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ রয়েছে। ৮) মেয়েলি স্বাস্থ্য সমস্যায় ব্যথা কমানোর ক্ষেত্রেও বিশেষ ভূমিকা রাখে পেঁপে। আমরা নানান সময় নানান রোগে ভুগী কিন্তু একটু সতর্ক থাকলেই আমরা বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারি। আসলে রোগ প্রতিকারের চেয়ে রোগ প্রতিরোধ করা ভালো। আর আমরা রোগ প্রতিরোধ করতে পারলে আমাদের রোগও আর হবেনা আর ডাক্টারের কাছে গিয়ে কারি কারি টাকাও আর ঢালতে হবেনা। এমনই কিছু রোগপ্রতিরোধে পেপের উপকারিতা।
রোগ ব্যধিতে পেপের উপকারিতাঃ ১. বদ হজমের রোগিদের পাকা পেঁপে খেলে খুব উপকার মিলবে। পাঁকা পেপে খেলে মুখে রুচি বাড়ে, সাথে সাথে খিদে বাড়ে তাছাড়া পাঁকা পেপে কোষ্ট পরিস্কার করে এবং বায়ু নাস করে। এ ছাড়াও পেপে অর্শ রোগের ক্ষেত্রেও বেশউপকারি।
২. কাঁচা পেঁপের আঠা বীজ কৃমনিাশকস। কাঁচা পেঁপের আঠা চিনি বা বাতা্সোর সাথে মিশিয়ে খেলে অর্শ ও জন্ডিস সহ লিবারের নানা রোগ ভালো হয়। এ আঠা প্রতিদিন সকালে ৫- ৭ ফোটা আঠা বাতাসার সাথে মিসিয়ে খেলে অর্শের রক্ত পড়া বন্ধ হয়। ব্রন, আচিল , জিভের ঘায়ে , এ আঠা লাগলে খুব উপকার হয়।
৩. পেপে গাছের শুকনো পাতা পানিতে ভিজিয়ে রেখে সেই পানি খেলে পাকস্থলির স্বভাবিক ক্রিয়া ফিরে আসে। তবে প্রতিদিন নয় পেটের অসুখ সারাতে হজম শক্তি বাড়াতে এক দিন অন্তর অন্তর এক টুকরো পেপে সিদ্ধ অথবা পেপের তরকারি খাওয়া যেতে পারে। তাই আমরা বাসায় বসে কিছু নিয়ম মেনে চললে, কিছু খাদ্য খাবার নিয়ম মাফিক খেলে আমরা পেতে পারি সুস্থ সুন্দর পরিপাটি জীবন।