অবাক কান্ড! ডাক্তারের কাছে কানে ব্যথা নিয়ে হাজির যুবক, ডাক্তার কানের ভিতর উঁকি মারতেই বেরিয়ে এলো আজব এক প্রাণী । ডাক্তাররা জানিয়েছেন, প্রাণীগুলিকে যদি বার করা না হতো, তা হলে যুবকের কানটি একেবারে অকেজো হয়ে যেত। অন্য রকমের বড়সড় শারীরিক সমস্যাও দেখা দিতে পারতো।
মানুষকে কত রকম শারীরিক বিপত্তিতেই যে পড়তে হয়! বছর দেড়েক আগে দক্ষিণ চিনের গুয়াংদং এলাকার ১৯ বছর বয়স্ক মিস্টার লি-এর শরীরে তেমনই এক বিচিত্র শারীরিক সমস্যার হদিশ পেয়েছিলেন এলাকার ডাক্তাররা।
প্রবল কানের যন্ত্রণা নিয়ে স্থানীয় চাঙ্গান জিয়াওবিয়ান হাসপাতালের ডাক্তারদের দ্বারস্থ হয়েছিলেন লি। ডাক্তাররা লি-এর কানের ভিতর উঁকি মেরে দেখতে পান ভিতরে কী যেন নড়াচড়া করছে। আরও ভাল ভাবে দেখার জন্য সূক্ষ্ণ ক্যামেরা ঢোকানো হয় লি-এর কানের ভিতরে। তাতে যে ছবি ধরা পড়ে, তা দেখে চোখ কপালে ওঠে ডাক্তারদের।
দেখা যায়, লি-এর কানের ভিতরে কিলবিল করছে অজস্র আরশোলা। আরশোলাগুলির মধ্যে একটি আকারে বড়, অন্যগুলি ছোট ছোট। ডাক্তারদের বুঝতে বাকি থাকে না যে, খুদে আরশোলাগুলি আসলে বড় আরশোলাটিরই সন্তান। সূক্ষ্ণ চিমটের সাহায্যে একটি একটি করে আরশোলাগুলিকে বার করা হয় লি-এর কানের ভিতর থেকে। মোট ২৬টি আরশোলা বেরোয়। তাদের মধ্যে একটি মা আরশোলা, আর ২৫টি তারই ছানা।
ডাক্তারদের অনুমান, লি যখন ঘুমোচ্ছিলেন তখনই মা আরশোলাটি কোনও ভাবে লি-এর কানে ঢুকে যায়। তার পর কানের ভিতরেই ডিম পাড়ে। সেই ডিম ফুটে যখন বাচ্চা বের হয়, তখনই কানে চুলকানি এবং যন্ত্রণার সমস্যায় ভুগতে থাকেন লি।
চাঙ্গান জিয়াওবিয়ান হাসপাতাল-এর ডাক্তার ইয়াং জিং জানান, একটি আরশোলার ডিম ফুটে বাচ্চা বেরোতে ২৪ থেকে ৭০ দিনের মতো সময় লাগে। এ থেকে বোঝা যায়, মা আরশোলাটি বেশ কয়েক দিন ধরেই লি-এর কানের ভিতরে বসবাস করছিল। কানের ভিতরের উষ্ণ এবং আর্দ্র পরিবেশ ডিম পাড়ার পক্ষে আদর্শ বলে মনে হয়েছিল আরশোলাটির।
কিন্তু লি কিছু টের পেলেন না কেন, সেটাই আশ্চর্যের! ডাক্তার জিং জানান, আরশোলাগুলি যদি বার করা না হতো, তা হলে লি-এর কানটি একেবারে অকেজো হয়ে যেত। অন্য রকমের বড়সড় শারীরিক সমস্যাও দেখা দিতে পারতো।
ঘটনাটি বছর দেড়েকের পুরনো। এখন লি একেবারে সুস্থই রয়েছেন। কানে আর কোনও সমস্যা নেই তাঁর। বলা বাহুল্য, এখনও ভুলতে পারেন না সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা।
তবে সম্প্রতি তাঁর সেই স্মৃতিকে আরও উস্কে দেওয়ার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় পাবলিশ হয়েছে লি-এর কান থেকে আরশোলা বার করার সেই অবিশ্বাস্য ভিডিও। পোস্ট হওয়ার পরে সেই ভিডিও ভাইরাল হতে সময় লাগেনি।